বাংলায় দেবতার তালিকায় এবার নতুন সংযোজন; টেনশন দেব। বাংলায় আবির্ভূত নতুন দেবতা; চাপমুক্তির প্রত্যাশায় হল ‘টেনশন দেব’ এর পুজো। গুটি বসন্তের হাত থেকে রক্ষা পেতে; আদিকালে শুরু হয়েছিল শীতলা পুজো। পড়াশোনার জন্য আছে সরস্বতী ঠাকুর; ধন-সম্পদ বৃদ্ধি করতে লক্ষ্মী-গণেশ; বিপন্মুক্ত হতে কালী, তারা মা বা বজরংবলি। কিন্তু টেনশন থেকে চাপ থেকে মুক্তি দেবার; কোন দেবতা ছিলেন না। এবার টেনশন থেকে মুক্তি পেতে; পুজো করা হল টেনশন দেবতার।
রীতিমতো পুরোহিত দিয়ে টেনশন দেবতার; পুজো করা হয়। এবারই প্রথম নয়, বছরের পর বছর ধরে এমনই ঘটনা ঘটছে; কোচবিহার জেলার মেখলিগঞ্জ ব্লকের নিজতরফ গ্রামে। টেনশন থেকে মুক্তি পেতেই, গ্রামের বেকার শিক্ষিত যুবকেরা রাস্তার ধারে; টেনশন দেবতার আরাধনা করে আসছেন। টেনশন দূর করার পাশাপাশি; কর্মসংস্থানেরও মানত করেন দেবতার কাছে। অবিশ্বাস্য লাগলেও; ঘটনা কিন্তু সত্যি।
শুধু যুবকেরা নয়, গ্রামের মহিলারাও ভক্তি-শ্রদ্ধা সহকারে; টেনশন দেবতার পুজো করেন। পুজোর প্রসাদের মধ্যে কলা, সন্দেশ, নারকেল ইত্যাদি সবই থাকে। উচ্চশিক্ষা লাভ করেও কপালে চাকরি জুটছে না; নেই কোনও কর্মসংস্থান। বেকারত্বের জ্বালায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন অনেকেই; সব মিলিয়ে টেনশন তাদের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির আশায়; টেনশন দেবতার পুজো করেন একদল যুবক।
আরও পড়ুনঃ ‘লজ্জায় বাংলা’, মধ্যশিক্ষায় তল্লাশি, পর্ষদ সভাপতিকে বাড়ি থেকে তুলে আনল সিবিআই
পুরোহিত ডেকে রাস্তার ধারে তারা টেনশন দেবতার আরাধনা করে; নিজেদের টেনশন দূর করে চাকরি সহ কর্মসংস্থানের মানত করলেন দেবতার কাছে। পুরোহিতও টানা মন্ত্র পড়ে গেলেন। কিন্তু দেবতার রূপ কেমন হবে? যুবকরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে; নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে একটি পাথরের উপর রং করে চোখ মুখ এঁকে সেটিকে দেবতার রূপ দিয়ে নতুন দেব সৃষ্টি করেন।
টেনশন দেবতাকে রাস্তার পাশে একটি গাছের নীচে বসিয়ে; বেদি বানিয়ে পুজো হয়। অবশ্য শুধু বেকার যুবকরাই নন, গ্রামের বড়, ছোট সকলেই; টেনশনে পড়লে এই দেবতার কাছে প্রার্থনা করে যাচ্ছেন। টেনশন দেবতার অন্যতম উদ্ভাবক অজয় কর বলেন; “টেনশন দেবতার কাছে এসে কিছু প্রার্থনা করলে ফল পাওয়া যায়; টেনশন থেকেও যেন অনেকটাই মুক্তি পাওয়া যায়”।