দলের চাপে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ ভোল বদল যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরার। মায়ের মৃত্যু নিয়ে আমার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন অনুব্রত, মঙ্গলবার বিজেপি দফতরে দাবী করলেন অনুপম। মুকুল রায়কে পাশে নিয়ে এদিন কলকাতায় সাংবাদিক করলেন অনুপম হাজরা।
সোমবার, চতুর্থ দফার ভোটের দিন আচমকা অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে সাক্ষাত করতে আসেন অনুপম হাজরা। শুধু দেখাই করা নয়, জমিয়ে মাছ-ভাতও খান যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী। ফিরে এলে সাংসদ করতেই পারি, বলেন অনুব্রত। ফলে উস্কে যায় জল্পনা। এরপরেই অনুপমকে শো কজ করে বিজেপি।
আর মঙ্গলবার সম্পূর্ণ ভোলবদল করে অনুপম হাজরা জানান, মায়ের মৃত্যু নিয়েও তাঁর সঙ্গে রাজনীতি করলেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকে বাড়িতে ডেকে, তারপর দলিয় অফিসে আসতে বলে ফাঁসিয়েছেন অনুব্রত, এমনটাই দাবি তাঁর। মুকুল রায়কে পাশে নিয়ে কৈফিয়ত অনুপমের।
আরও পড়ুনঃ ভোটের দিন স্বয়ং প্রার্থীই ঘুম থেকে উঠলেন দুপুর ১২ টায়, বাংলায় ভোট রঙ্গ
সৌজন্য না ঘরে ফেরা, ভোটের দিন অনুব্রত অনুপম সাক্ষাতে উঠে যায় প্রশ্ন। সোমবার ভোট দিয়ে ফিরে যখন তাঁর দলিয় দফতরে বসে অনুব্রত, তখনই তাঁর কাছে আসেন যাদবপুরের বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা।
শুধু ‘কেষ্ট কাকার’ কাছে আসাই নয়। অনুব্রতর বাড়িতে জমিয়ে মাছ-ভাতও খান অনুপম। লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে গেরুয়া শিবিরে যোগদান করেন অনুপম। এরপরই তাঁকে যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থী করেছে বিজেপি।
সেই যাদবপুর কেন্দ্রের প্রার্থীই সোমবার সটান চলে যান অনুব্রতর দরবারে। তাও আবার চতুর্থ দফার ভোটের দিন। অফিসে এসে অনুব্রতর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন অনুপম। জানিয়ে দেন, “কাকার কাছে এসেছি। বীরভূমে অনুব্রতই শেষ কথা”।
আরও পড়ুনঃ তৃণমূলের ৪০ জন বিধায়ক আমার সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখেন, বললেন মোদী
সোমবার স্নেহের সুরে অনুব্রত বলেন, “বোকামি করেছে। ওকেই প্রার্থী করতাম”। আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কথাও জানিয়ে দেন কেষ্টদা। সুধু তাই নয়, অনুব্রত মন্ডলও বলেন “ওকে ঠিক দলে নিয়ে নেব, সাংসদ করব, রাজ্যসভা ভোট আছে”।
বিজেপিতে যোগদান করার পরেও কেন অনুব্রতর বাড়িতে? ‘কেষ্ট কাকার’ বাড়িতে বসেই অনুপম বলেন, “কাকার কাছে এসেছি, ভুল বোঝাবুঝি ছিল মিটে গেছে”। তারপরেই তাঁকে শো কজ করে ক্ষুব্ধ বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ মোবাইলে হুমকি দিয়ে নির্বাচন কমিশনকে হাস্যকর প্রমাণ করলেন অনুব্রত মণ্ডল
মঙ্গলবার গেরুয়া শিবিরের ক্ষোভ চাপা দিতেই সব অভিযোগ চাপান সাংবাদিকদের উপর। জানিয়ে দেন, মায়ের মৃত্যু নিয়ে আমার সঙ্গে রাজনীতি করেছেন অনুব্রত। মিডিয়া ডেকে তাঁকে ফাঁসান হয়েছে বলেই জানান তিনি।
তাঁর প্রতি পদ্ম শিবিরের ক্ষোভ চাপা দিতেই ভোল বদল, মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তবে অনুপমের ভোল বদলে কেষ্ট কাকা কি প্রতিক্রিয়া দেন, সেটাই এখন দেখার। তবে মায়ের মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করবেন অনুব্রত, এটা জেলা রাজনীতিতে কেউ বিশ্বাস করেন না বলেই জানা গেছে বীরভূম জেলা সূত্রে।