তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে তৃণমূল নেতাদেরই শাস্তির দাবীতে পোস্টার

1080
The News বাংলা

দার্জিলিংঃ মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলের। তোলাবাজিকে কেন্দ্র করে ফের প্রকাশ্যে চলে এলো তৃণমূল কংগ্রেসের দার্জিলিং জেলার গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। শুধু তাই নয়, এবার তৃণমূলের জেলা কার্যালয়েই তৃণমূল নেতাদের শাস্তির দাবীতে পড়ল পোস্টার।

The News বাংলা

অভিযোগ, সম্প্রতি শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটের এক দোকানির কাছ থেকে টাকা চেয়ে হুমকি দেয় তৃণমূল ছাত্র সভাপতি নির্ণয় রায়। অন্যদিকে, নির্ণয় রায় এই অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেন যে, দলের নবাগতরাই তার বিরুদ্ধে প্ররোচনামূলক কাজ করছে। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের রাজনীতিতে কার্যত অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস।

আরো পড়ুন: মেয়াদ বৃদ্ধি রাজ্য পে কমিশনের হতাশ রাজ্য সরকারি কর্মীরা

জানা গেছে, জগন্নাথ যাদব নামে রেগুলেটেড মার্কেটের এক ব্যবসায়ি অভিযোগ করেন যে, সম্প্রতি নির্ণয় রায় সহ আরও চার যুবক তার কাছ থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা চেয়ে হুমকি দিয়েছিল। সেই হুমকির পর তিনি ভয় পেয়ে তাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল ছাত্রপরিষদের জেলা সভাপতি নির্ণয় রায়।

The News বাংলা

উলটে তাঁর বক্তব্য, এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। তাঁকে ছোটো করতেই দলের নবাগতদের প্ররোচনায় এই অভিযোগ তোলা হয়েছে। এদিকে জগন্নাথ বাবু জানিয়েছেন, শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেটে আমার নামে ১৫০ স্কয়্যার ফুটের একটি দোকানঘরে তিনি ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু, ওই দোকানঘর বাবদ নির্ধারিত অর্থ মিটিয়ে দেবার পরেও বছরের পর বছর ধরে দোকানের কোন চুক্তিপত্র তৈরি করা হয় না।

আরো পড়ুন: উত্তরবঙ্গের জনবহুল স্টেশনেও কি লুকিয়ে আছে বিপদ

গত দুমাস আগে হঠাৎই তার দোকানে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মার্কেট কমিটির কাছে তালা ঝোলানোর কারন জানতে চাইলে জগন্নাথ বাবুর অভিযোগ, সেই সময় কমিটি তাকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি সহ দু’জনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলে। সেইমত তিনি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা দোকানের তালা খুলে দিয়ে ও চুক্তি পত্র তৈরি করার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে।

The News বাংলা

বৃহস্পতিবার জগন্নাথ যাদব গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রধান নগর থানায় নির্ণয় রায়, সঞ্জয় পাল, গণেশ সিং সহ চারজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর গোটা ঘটনার বিরোধিতা করে তৃণমূলের জেলা কার্যালয়েই অপরাধিদের শাস্তির দাবীতে একটি পোস্টার সাঁটানো হয়। পোস্টারে লেখা বয়ান অনুযায়ী স্পষ্ট যে, তৃণমূল কর্মীরাই অভিযুক্ত নেতাদের শাস্তি চেয়ে লাগিয়েছে এই পোস্টার।

আরো পড়ুন: বিশ্বের সেরা একশোয় সত্যজিতের পথের পাঁচালি

তবে গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছাত্রনেতা নির্ণয় রায় এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তারা এই কাজের সাথে যুক্ত নয়। পুলিশ তদন্ত করুক। সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। এদিন তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, “যারা তৃণমূলে নবাগত তারা আমার বিরুদ্ধে এরকম করতে পারে”। তার আরও বক্তব্য, তাঁকে কালিমালিপ্ত করতেই মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। তাঁর আরও বক্তব্য, “পুলিশ চাইলে গ্রেপ্তার করুক। চাইলে তদন্ত করুক সিআইডি। আমি তোলাবাজ নই।” ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মানহানি মামলা করবেন বলেও জানান তিনি।

The News বাংলা

একদিকে নির্ণয় রায়ের নবাগত কর্মীদের বিরুদ্ধে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া, অন্যদিকে তোলাবাজির অভিযোগে তাঁর নামেই তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে পোস্টার পড়ায় কার্যত ফের প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আর মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়েই দার্জিলিং-এ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে আসায় অস্বস্তিতে পড়ল তৃণমূল, অভিমত জেলার রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন