The News বাংলা: ৭৫ বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি নরেন্দ্র মোদী সরকারের হাত ধরে। আজাদ হিন্দ বাহিনীর সেই লড়াইকে সম্মান জানিয়ে এবার নেতাজীর নামে রাখা হচ্ছে আন্দামানে দ্বীপের নাম। সৌজন্যে নরেন্দ্র মোদীর কেন্দ্র সরকার।
আরও পড়ুনঃ স্বীকৃতি না রাজনৈতিক ফায়দা, নেতাজীকে নিয়ে বিতর্কে মোদী
আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের তিনটি দ্বীপের নাম বদলে যাচ্ছে। জানা গিয়েছে রস দ্বীপ, নেলি দ্বীপ এবং হ্যাভলক দ্বীপের নাম বদলে যাচ্ছে। নতুন নাম হচ্ছে যথাক্রমে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দ্বীপ, শহিদ দ্বীপ এবং স্বরাজ দ্বীপ।
আগামী ৩০শে ডিসেম্বর রবিবার আন্দামানে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তখনই আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম ঘোষণা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে নাম বদল করতে প্রয়োজনীয় সমস্ত কাজই করা হয়ে গিয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও।
আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদীর হাতেই উদ্বোধন হচ্ছে ভারতের দীর্ঘতম দোতলা সেতু
নাম বদলের পাশাপাশি ১৫০ মিটার লম্বা একটি জাতীয় পতাকাও উড়িয়ে দেবেন মোদী ও রাজনাথ। ৭৫ বছর আগে ১৯৪৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজাদ হিন্দ সরকার তৈরি করেন নেতাজী। সেই ঘটনাটিকে স্মরণ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নিজের সরকারের প্রতিষ্ঠা করে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপ দুটির নাম স্বাধীন এবং স্বরাজ রেখেছিলেন নেতাজী। সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে।
দেশের আসল বীরদের যোগ্য সন্মান দেওয়ার ক্ষেত্রে ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার, এমনটাই দাবি বিজেপি নেতাদের। আর তারই ফলস্বরূপ এই বছর আন্দামানে আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে দিল্লীর লাল কেল্লা থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মোদী। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন নেতাজীর আজাদ হিন্দ ফৌজের হয়ে লড়াই করা স্বাধীনতা সংগ্রামীরা।
আরও পড়ুনঃ শহীদ জওয়ানকে সম্মান নয়, সেনাকে পাথর ছুঁড়ে দেশদ্রোহীরাই ভারতে ‘নায়ক’
আর এবার নেতাজীর সেই ঐতিহাসিক ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এক বড় পদক্ষেপ নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর আন্দামানে নেতাজীর আজাদ হিন্দ বাহিনীর পতাকা উত্তোলনের ৭৫ বছর পূর্ণ হচ্ছে। জানা গেছে এই দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আন্দামানের পোর্ট ব্লেয়ার যাবেন। তখনই নামকরণ ও পতাকা ওড়ানোর কাজ হবে।
নামবদল নিয়ে নতুন করে চর্চা শুরু হয় বছর দেড়েক আগে। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে রাজ্যসভার এক বিজেপি সাংসদ হ্যাভলক দ্বীপের নাম বদলের সুপারিশ করেন। হ্যাভল ছিলেন ব্রিটিশ সেনা বাহিনীর জেনারেল। তিনি ভারতীয়দের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তাই দ্বীপের নাম হ্যাভলক রাখা লজ্জাজনক বলে মনে হয়েছিল তাঁর। এরপরই শুরু হয় সরকারী প্রক্রিয়া।
গত কয়েক মাস ধরেই নামবদলের প্রবণতা বাড়তে শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তাঁর বছর দেড়েকের সময়কালের মধ্যে একাধিক নামবদল করেছেন বা বদলের সুপারিশ করেছেন। তাঁর সুপারিশে মোঘলসরাই রেল স্টেশনের নাম হয়েছে দীন দয়াল উপাধ্যায় জংশন। এছাড়া এলাহাবাদের নাম বদলে হয়েছে প্রয়াগরাজ।
আরও পড়ুনঃ ‘মুসলিম’ নাম বদলে ‘রামরাজ্য’ আনতে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ
বিজেপির এক সাংসদ আবার চান আগ্রার নাম বদলে হোক আগ্রাভান। অন্যদিকে দাদরি গণপিটুনি কান্ডে নাম জড়ানো বিজেপি বিধায়ক সাধনা সঙ্গীত সোম চান মুজফফরনগরের নাম বদলে হোক লক্ষ্মী নগর। সেটা হতেও চলেছে। শুধু নিজের রাজ্যে আটকে না থেকে যোগী তেলেঙ্গানার জেলা করিমনগরেরও নাম বদলের কথাও বলেছেন। এখানেই শেষ নয়, শোনা যাচ্ছে গুজরাটে বিজয় রুপানির সরকার আমেদাবাদের নাম বদলে কর্ণবতী রাখতে চায়।
এইসব নামবদল নিয়েই চলছে তুমুল বিতর্ক। তবে, রস দ্বীপ, নেলি দ্বীপ এবং হ্যাভলক দ্বীপের নাম বদলে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু দ্বীপ, শহিদ দ্বীপ এবং স্বরাজ দ্বীপ রাখা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তবে বিরোধীরা এই নাম পরিবর্তনকে স্বাগত জানালেও, এটাকে ভোটের আগে চমক বলে সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুনঃ লোকঠকানির লোন মাপ, রাহুলকে লজ্জায় ফেলে আত্মঘাতী কৃষক
তবে, এই নিয়ে সব সমালোচনা উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি নেতারা। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘নেতাজীকে সম্মান দেওয়া নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন তাঁরা আগে কোনদিন ভারতের এই মহান সন্তানকে শ্রদ্ধা জানান নি’। এখন নরেন্দ্র মোদী সরকার নেতাজীর সেই অবদানকে স্বীকৃতি দিচ্ছে তাই এত সমালোচনা’। লোকসভা ভোটের আগে ফের দেশ জুড়ে নেতাজী চর্চা।