বিধানসভা উপনির্বাচনের আগেই; ভাইপোর হাত ছাড়লেন পিসি। লোকসভা ভোট মিটতে না মিটতেই; উত্তরপ্রদেশে প্রশ্নের মুখে বিরোধী মহাজোটের ভবিষ্যৎ। রাজ্যের ১১ বিধানসভা উপনির্বাচনে একাই লড়তে চলেছে; মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি)। সোমবার দলীয় বৈঠকে এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন; বিএসপি নেত্রী মায়াবতী। মহাজোটের ওপরে তাঁর আর আস্থা নেই বলেও জানিয়েছেন।
লোকসভা ভোটে অনেক আশা জাগিয়েও; উত্তরপ্রদেশে বিজেপিকে কোনও চ্যালেঞ্জই ছুঁড়তে পারেনি মায়াবতী-অখিলেশ জোট। বিজেপিকে রুখতে অজিত সিংহের রাষ্ট্রীয় লোকদলকে (আরএলডি)কে নিয়ে; ‘মহাগঠবন্ধন’ হয়েছিল বহুজন সমাজ পার্টি (বসপা) ও সমাজবাদী পার্টির (সপা)।
কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল বেরনোর পর দেখা গেল; মুখ থুবড়ে পড়েছে তিনদলের জোট। রাজ্যের ৮০টি লোকসভা আসনের ৬২টি পেয়েছে বিজেপি; ২০১৪-র প্রাপ্ত আসন থেকে মাত্র ৯টি কম। তাদের জোটসঙ্গী আপনা দল জিতেছে ২টি আসনে; মহাগঠবন্ধন পেয়েছে মাত্র ১৫টি আসন।
মহাগঠবন্ধন গঠন করে বিজেপিকে রুখতে গিয়ে; ভোটে বেশি লোকসান হয়েছে ২০১৭ অবধি; উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী থাকা অখিলেশের। তাঁর স্ত্রী ডিম্পল যাদব; দুই আত্মীয় অক্ষয় ও ধর্মেন্দ্র যাদবও নিজেদের আসন খুইয়েছেন। ২০১৪-য় শূন্য থেকে এবার ১০-এ পৌঁছেছে মায়াবতীর দল; কিন্তু সপা যে ৫-এ ছিল, সেখানেই রয়েছে এবারও।
এই প্রেক্ষাপটে এককালের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী থেকে মিত্র হয়ে ওঠা; মায়াবতী, অখিলেশের জোট কি এবার ভেঙে যেতে বসেছে? তেমনই ইঙ্গিত মিলল মায়াবতীর কথায়। লোকসভা ভোটে জোটের বিপর্যয়ের ফলে; এই জোটে আস্থা হারিয়েছেন মায়াবতী।
বৈঠকে বিএসপি নেত্রীকে বলেন; “এই জোট কোনও কাজের নয়। একটাও যাদব ভোট আমাদের দিকে আসেনি; কিন্তু আমাদের ভোট ওদের (সমাজবাদী পার্টি) পক্ষে গিয়েছে। যেখানে মুসলিমরা সপাকে দু-হাত ভরে ভোট দিয়েছে; একমাত্র সেখানেই ওরা জিতেছে। এমনকী অখিলেশ যাদবের পরিবারের সদস্যরাই; যাদব ভোট পাননি”। যে কারণে ১১ বিধানসভা আসনের উপনির্বাচনে; একাই লড়ার পথে বিএসপি।
গত জানুয়ারিতে মহাগঠবন্ধন তৈরির সময়; ২০২২-এর উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন মাথায় রেখে; জোট বহাল থাকবে বলে জানিয়েছিলেন সপা প্রধান অখিলেশ। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা ছিল, মায়াবতীর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ, পরিস্থিতি তৈরি হলে; তাঁকে সমর্থন করবেন অখিলেশ। পাল্টা বসপা নেত্রী রাজ্য বিধানসভা ভোটে ও মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ক্ষেত্রে অখিলেশের পাশে থাকবেন। যদিও সেই প্রত্যাশা বিন্দুমাত্র বাস্তবায়িত হওয়ার দিকে এগোয়নি।