কোর্স করলেই চাকরি! ভুয়ো বিজ্ঞাপনের আড়ালে প্রতারনার ফাঁদ

670
Image: The News বাংলা
Image: The News বাংলা

কৃষ্ণা দাস,The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ গোটা রাজ্যের পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও ছেয়ে গেছে ভুয়ো বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রায় প্রতিদিনই গজিয়ে উঠছে শিক্ষার নামে নিত্য নতুন ইনস্টিটিউট। কোন রকমের অনুমোদন ছাড়াই রমরমিয়ে চলছে এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইনস্টিটিউট গুলি।

আরও পড়ুনঃ বডি স্পা এর আড়ালে দেহ ব্যবসা! গ্রেফতার ব্যাংক ম্যানেজার

১০০ শতাংশ প্লেস মেন্ট গ্যারান্টি, তিন মাসেই এমবিবিএস ডিগ্রি, বি এড, অনলাইনেই এমবিএ, দেশে বিদেশে ভালো চাকরির সুযোগ সহ নানা রকমের প্রলোভন দিয়ে, বিজ্ঞাপন সাটিয়ে ব্যবসার পসরা সাজিয়ে বসলেও এর যথার্থতার কোন প্রমান নেই। তবুও ছাত্র ছাত্রীরা এর ফাঁদে পরে লক্ষ লক্ষ টাকা প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ উঠলেও হুঁশ নেই জেলা কিংবা রাজ্য প্রশাসনের।

Image: The News বাংলা
Image: The News বাংলা

শিলিগুড়ি শহরের কলেজ পাড়া, হাকিম পাড়া, প্রধান নগর সহ বিভিন্ন এলাকায় কোথাও বাড়ি ভাড়া নিয়ে এমনকি আবার কোথাও গ্যারেজ ঘর ভাড়া নিয়ে অবৈধভাবেই দিনের পর দিন চলছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। বর্তমানে সহজ পন্থায় ঘরে বসে অল্প সময়ে ডিগ্রী মেলার প্রলোভন দেখিয়েই ছাত্র ছাত্রীদের ফাঁদে ফেলছে এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা।

আরও পড়ুনঃ ‘কাসভের বেটি’, জঙ্গি চিনিয়ে দেবার ‘পুরষ্কার’ পাচ্ছে দেবিকা

আর এই প্রলোভনের ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করা হচ্ছে ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে। প্রথম পর্যায়ে বুঝতে না পেরে এর ফাঁদে পড়ছে বহু ছাত্র ছাত্রী। ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে গিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন বহু মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষজন।

ছাত্র ছাত্রীরা যখন বুঝতে পারছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি আসলে ঘুঘুর ফাঁদ, ততক্ষনে কোর্স ফি বাবদ বহু টাকা দিয়ে ফেলেছেন তারা। কোর্স শেষে পাওয়া ডিগ্রী শংসাপত্র যে ভুয়ো তা বুঝতে পেরে হতাশায় ভেঙে পড়ছে ছাত্র ছাত্রীরা। এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শংসাপত্র দেখিয়ে সরকারি কিংবা বেসরকারি আবেদন জানালে মেলে না কোনো চাকরিই।

আরও পড়ুনঃ অসুস্থ শিল্পীকে ‘বঙ্গরত্ন’ দেওয়ার দাবী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ ছাত্রছাত্রীরা

উল্টে তারা জানিয়ে দিচ্ছে, সংস্থার ডিগ্রী বা শংসাপত্র অনুমোদিত নয়। শিক্ষার নামে শহরে এই কারবার চলছে পুরনিগমের চোখের সামনেই। যত্রতত্ৰ ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই গড়ে উঠছে এই অবৈধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। তবে সে বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না শিলিগুড়ি পুর নিগম, এমনই অভিযোগ।

Image: The News বাংলা
Image: The News বাংলা

পুর এলাকায় যে কোনো প্রতিষ্ঠান চালু করতে হলে সর্বপ্রথম প্রয়োজন পুরনিগম থেকে ট্রেড লাইসেন্স। প্রশ্ন এখানেই, কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই চলছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি? তাহলে কি সব জেনেও নিশ্চুপ রয়েছে পুর নিগম? অভিযোগ, চোখের সামনে দিনের পর দিন একের পর এক গজিয়ে ওঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে জেনেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না পুরনিগমের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য ও সংশ্লিষ্ট মেয়র পারিষদ কমল অগরওয়াল।

আরও পড়ুনঃ ইঁদুর বাদুরের উপদ্রবে বন্ধ হয়ে গেল হাসপাতালের একটি বিভাগ

এ বিষয়ে শিলিগুড়ি পুরনিগমের মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন,’নতুন প্রতিষ্ঠানকে কাজ শুরু করার জন্য প্রভিশনাল ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়। এক বছর সময়সীমা দেওয়া হয় ট্রেড লাইসেন্সের সমস্ত শর্তাবলী পূরণের জন্য’। এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ছাত্র ছাত্রীরা প্রতারিত হচ্ছে সে বিষয়ে মেয়রের পাল্টা অভিযোগ, ‘এটা রাজ্য জুড়েই চলছে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই বিষয়টি শিক্ষা দপ্তরের দেখা উচিত। শিক্ষা দপ্তর তা দেখছে না’। শিলিগুড়ি তৃণমূল কংগ্রেসের তরফ থেকে এই নিয়ে শিলিগুড়ি পুরসভাকেই দায়ী করেছে।

আরও পড়ুনঃ আন্দামান নর্থ সেন্টিনেলে ‘জাড়োয়া’দের তীরের মুখে ভারতীয় কমান্ড্যান্ট

এদিকে শিলিগুড়ি কলেজের আশেপাশেই রয়েছে অবৈধ ভাবে গড়ে ওঠা এমন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দূর শিক্ষার অনুমোদন বাতিল হয়েছে। তারপরও শিলিগুড়ি শহরের বহু জায়গায় সেই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির বোর্ড টাঙানো রয়েছে। খোলা রয়েছে অফিসও।

আবার কোনো বেসরকারি ইনস্টিটিউট, ছাত্র ছাত্রীদের কাছে কোর্সের নামে ফি বাবদ মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে রাতারাতি চম্পট হয়ে যাচ্ছে। ছাত্র ছাত্রীরা গিয়ে দেখছে ঝাঁপ বন্ধ প্রতিষ্ঠানের। আবার কোথাও রাতারাতি বদলে ফেলা হচ্ছে নামের বোর্ড। পুরসভা ও রাজ্য সরকারের একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর মধ্যেই অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যাচ্ছে বর্তমান প্রজন্ম।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন