The News বাংলা: মঙ্গলবারই ভারতের দীর্ঘতম দোতলা ব্রিজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দীর্ঘ ২১ বছর পর মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে অসমের ডিব্রুগড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তৈরি বগিবিল সেতু। তৈরি হবে উত্তর-পূর্ব ভারতের যোগাযোগ ব্যবস্থার নতুন ইতিহাস।
আরও পড়ুনঃ লোকঠকানির লোন মাপ, রাহুলকে লজ্জায় ফেলে আত্মঘাতী কৃষক
অসমের ডিব্রুগড় জেলার সঙ্গে অরুণাচল প্রদেশের ধেমাজি জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেছে বগিবিল সেতু। হাসপাতাল, স্কুল কলেজ থেকে যাবতীয় সুযোগ সুবিধার জন্য ধেমাজি জেলার বাসিন্দাদের ছুটতে যেতে হত অসমের ডিব্রুগড়ে।
আরও পড়ুনঃ ‘কৃষি ঋণ মকুব’, মানুষ ও মিডিয়াকে চরম বোকা বানিয়ে ছলচাতুরী কংগ্রেসের
আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্টের অন্দরেই আটকে রইল বিজেপির রথ যাত্রা
কিন্তু সেই যাতায়াত ছিল দীর্ঘ সময়ের এবং দুর্বিষহ। সেতু চালু হলে সেই দূরত্ব ও ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। তার চেয়েও বেশি সুবিধা হবে রেল পথে। কারণ, ধেমাজি এবং ডিব্রুগড়ের মধ্যে রেলপথে দূরত্ব ৫০০ কিলোমিটার থেকে কমে হয়ে যাচ্ছে মাত্র ১০০ কিলোমিটার। অর্থাৎ ব্যবধান কমছে প্রায় ৪০০ কিলোমিটারের। যাত্রার সময় কমবে প্রায় দশ ঘণ্টা।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: কলকাতা থেকে পুলিশ ও ব্যবসায়ীদের টাকা যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে
১৯৯৭ সালে বগিবিল সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া। সমীক্ষা, মাপজোক, ব্রিজ তৈরি সম্ভব কিনা— সেসব খতিয়ে দেখতেই পাঁচ বছর কেটে যায়। রেল সবুজ সঙ্কেত দেওয়ার পর ২০০২ সালে নির্মাণ কাজের সূচনা করেছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী।
আরও পড়ুনঃ ২২ বছর পর ফের ভূস্বর্গে রাষ্ট্রপতি শাসন
আরও পড়ুনঃ জাত ধর্মের পর এবার হনুমানের পেশা নিয়েও চর্চা রাজনীতিতে
সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় পাঁচ কিলোমিটার (৪.৯৪ কিমি)। খরচ হয়েছে ৫৯২০ কোটি টাকা। ২১ বছর আগেকার সেই ভিত্তিপ্রস্তর থেকেই ধীরে ধীরে ব্রহ্মপুত্রের বুক চিরে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বগিবিল ব্রিজ। আর এবার সম্পূর্ণ প্রস্তুত দেশের সবচেয়ে দীর্ঘ দোতলা ব্রিজ। বাজপেয়ীর জন্মদিন ২৫ ডিসেম্বরেই এই ব্রিজে একইসঙ্গে রেল এবং সড়কপথের উদ্বোধন করবেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুনঃ আদিবাসী, দলিত না মুসলমান, বিজেপির গবেষণায় রামভক্ত হনুমানের জাত
ব্রিজটি তৈরি করেছে ভারতীয় রেল। স্থাপত্য ও নির্মাণ শিল্পের এক অনন্য নজির এই বগিবিল সেতু। শুধু যোগাযোগই নয়, উত্তর-পূর্বের সীমান্ত রক্ষার ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা নেবে এই সেতু। খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্রের বুকে যে কোনও ব্রিজ তৈরি করাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এটি অতিবর্ষণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। তার উপর আবার ভূমিকম্প প্রবণ। ফলে সব দিক দিয়েই এই ব্রিজ স্বতন্ত্র।
আরও পড়ুনঃ ৫ রাজ্যে ভোট ধাক্কায় জোট শরিকদের সব দাবি মানছে মোদীর বিজেপি
তৈরি হতে লেগেছে ২১ বছর। কিন্তু এত দিন ধরে তৈরির পর যা মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে, তা ভেঙে দিয়েছে অতীতের বহু নজির। তৈরি হয়েছে নয়া ইতিহাস। এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষায় অসমের ডিব্রুগড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর তৈরি এই বগিবিল সেতু। মঙ্গলবারই উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আরও পড়ুনঃ অযোধ্যায় রামমন্দির হয় নি, লোকসভা ভোটে মোদীর হাত ছাড়ল সেনা
নির্মাণশৈলী এবং প্রযুক্তিতেও অভিনব বগিবিল দোতলা সেতু। যার উপরের তলায় চলবে বাস, ট্রাক, লরি সহ যাবতীয় যানবাহন। অর্থাৎ সড়কপথ। তিন লেনের। আর নীচে দিয়ে চলবে ট্রেন। পাতা হয়েছে ডাবল লাইন। আবার দৈর্ঘ্যেও এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় দোতলা ব্রিজ এটি।
আরও পড়ুনঃ উগ্র হিন্দুত্ববাদী নিশানায় নাসিরউদ্দিন, নিন্দা বাংলার বুদ্ধিজীবীদের
আরও পড়ুনঃ শহীদ জওয়ানকে সম্মান নয়, সেনাকে পাথর ছুঁড়ে দেশদ্রোহীরাই ভারতে ‘নায়ক’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উত্তর-পূর্বের যোগাযোগে যেমন বিপ্লব নিয়ে আসবে, তেমনই দেশের স্থাপত্য ও নির্মাণ শিল্পেও বিপ্লব আনবে রেলের তৈরি এই সেতু। চালু হলে ডিব্রুগড়ের সঙ্গে সড়ক ও রেল যোগাযোগ আরও দ্রুত হবে। ফলে আরও গুরুত্ব বাড়বে উত্তর-পূর্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর ডিব্রুগড়ের।
আর দুই প্রধানমন্ত্রীর হাতে শুরু হওয়া বগিবিল ব্রিজ শেষ পর্যন্ত যাত্রা শুরু করবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে। দীর্ঘ ২১ বছর পর দুই রাজ্যের বাসিন্দাদের স্বপ্ন সফল হচ্ছে বড়দিনেই।