‘ভগবান’ সরাসরি টাকা নিয়ে হাজির ভক্তের সমস্যা মেটাতে

934
সিরিডি সাঁই বাবা/The News বাংলা
সিরিডি সাঁই বাবা/The News বাংলা

The News বাংলা, আহমেদনগর: ‘ভগবান’ সরাসরি টাকা নিয়ে হাজির ভক্তের কাছে। বিশ্বাস হচ্ছে না তো? ঠিক এমনটাই ঘটেছে। মহারাষ্ট্রের সিরিডি সাইবাবা মন্দির ট্রাস্টের তরফ থেকে একটি জল প্রকল্পের জন্য ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কোন সুদ আর সময় বেঁধে দেওয়া ছাড়াই। প্রথমবার, ‘ভগবান’ সরাসরি ভক্তের সমস্যা দূর করতে এগিয়ে এলেন টাকার থলি নিয়ে।

মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার সব গ্রামেই জলের সমস্যা। টাকার অভাবে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ বন্ধ ছিল নীলওয়ান্দে সেচ প্রকল্পের। ফলে জলের সমস্যা মিটছিল না গ্রামবাসীদের। জলের সমস্যা মেটাতে এবার এগিয়ে এল সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট।

২০১৮ সালের ১লা ফেব্রুয়ারিই মহারাষ্ট্র সরকারকে এই লোন দেবার সিদ্ধান্ত নেয় সিরিডি সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট। শনিবার ১ লা ডিসেম্বর দু দফায় মহারাষ্ট্র সরকারকে এই ঋণ দেওয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে সিরিডি সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট।

নীলওয়ান্দে সেচ প্রকল্পের জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের হাতে ৫০০ কোটি টাকা তুলে দিতে চলেছে ট্রাস্ট। মন্দির ট্রাস্ট এই টাকা অবশ্য ঋণ হিসাবেই দিচ্ছে। তবে ঋণ পরিশোধ করার জন্য কোনও সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। এর জন্য কোনও সুদও লাগবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে মন্দির ট্রাস্ট।

বিজেপি নেতা ও মন্দির ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সুরেশ হাওয়ারের নেতৃত্বে এই সিদ্ধান্ত নেয় সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট। ভারতে প্রথমবার এইভাবে কোন মন্দির এত বিশাল টাকার লোন দিচ্ছে কোন রাজ্য সরকারকে।

নীলওয়ান্দে জল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগর জেলার আকল, সাঙ্গামনার, রাহুরি, কোপারগাঁও এবং সিরডির মতো গ্রামগুলি জলের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। প্রকল্প সম্পূর্ণ হতে লাগবে ১২০০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এত টাকার জোগাড় না করতে পারায় এতদিন বন্ধই ছিল প্রকল্পের কাজ। ফলে গ্রামগুলো জলের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাচ্ছিল না।

মহারাষ্ট্র জল সম্পদ দফতর এর জন্য এই প্রকল্পের বাজেটে এই বছরে ৩০০ কোটি ও আগামী বছর আরও ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। কিন্তু তাতে ১২০০ কোটি টাকার জল প্রকল্প এর কাজ শুরু করা যাচ্ছিল না।

এরপরই ট্রাস্টের কাছে ঋণের জন্য আবেদন করে মহারাষ্ট্র সরকার। ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন বিজেপি নেতা সুরেশ হাওয়ারে ও তার সদস্যরা প্রাথমিকভাবে রাজিও হন।

এই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীসের উপস্থিতিতে মন্দির ট্রাস্টের সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে ঋণ দিতে সম্মত হয় মন্দির ট্রাস্ট। শনিবার সিরিডি সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট এবং গোদাবরী-মরাঠাওয়াড়া সেচ উন্নয়ণ নিগম দুই কিস্তিতে ঋণ দেবার চুক্তিতে সই করেছে।

সিরডি মন্দির ট্রাস্ট সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিদিন প্রায় ৭০ হাজার ভক্ত এই মন্দির দর্শনে আসেন। আর উৎসবের দিনে সংখ্যাটা সাড়ে তিন লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। মন্দিরের দৈনিক আয় ২ কোটি টাকা। বার্ষিক আয় ৭০০ কোটি টাকা।

তবে সরকারকে বা সরকারী প্রতিষ্ঠানকে সাহায্য করা সাইবাবা মন্দির ট্রাস্টের কাছে নতুন কিছু নয়। ২০১১ তেও মহারাষ্ট্র এয়ারপোর্ট ডেভেলপমেন্ট কোম্পানিকে ৫০ কোটি টাকা সাহায্য করেছিল এই ট্রাস্ট। এছাড়াও বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজকেও কোটি টাকার উপর আর্থিক সাহায্য করেছে সিরিডি সাইবাবা মন্দির ট্রাস্ট।

এইভাবে ভারতের সব মন্দির সাহায্যের জন্য এগিয়ে এলে দেশের অনেক সমস্যা দূর করা যাবে। বাংলায় তারাপীঠ মন্দির, কালীঘাট মন্দির, তারকেশ্বর মন্দির, দক্ষিণেশ্বর মন্দির, ইস্কন মন্দির যদি এইভাবেই এগিয়ে আসে তাহলে রাজ্য সরকারের অনেক সমস্যা দূর হতে পারে।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন