The News বাংলা,কলকাতাঃ ঠাকুরনগর পৌঁছেই মতুয়াদের মন জিতলেন মমতা। মতুয়া মহাসংঘের বড়মা বীনাপাণিদেবীর জন্মশতবর্ষ, আর সেই উপলক্ষ্যেই বীনাপাণিদেবীর জন্মশতবর্ষ উদযাপন কমিটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হয়ে আজ বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগর গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে একা লড়েছেন ‘দাবাং’ পুলিশ অফিসার
গত দুদিন ধরেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত এবং অসম থেকেও প্রায় ৪০ হাজারের অধিক সংখ্যায় মতুয়ারা ঠাকুরনগরে ভিড় জমিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ঠাকুরনগরে মতুয়া মেলার মাঠে মুখ্যমন্ত্রী এবং বীনাপাণিদেবীর উপস্থিতি উপলক্ষ্যে, তৃণমূলের তরফে ঠাকুরনগরে তিন লক্ষাধিক মানুষের জমায়েতের লক্ষ্য ঠিক করা হয়। আগামী বছর লোকসভা ভোটের আগেই এই জমায়েত যে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ, তা বলাই যায়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী মূল অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে মতুয়াদের ইতিহাস তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে মতুয়াদের নাগরিকত্ব ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। উল্লেখ্য, পূর্ববঙ্গ থেকে উদবাস্তু হয়ে ভারতে আসা মতুয়াদের নাগরিকত্ব প্রদান একটি দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত ইস্যু। সম্প্রতি অসমের নাগরিকপঞ্জী এনআরসি থেকেও নাম বাদ যায় কয়েক হাজার মতুয়ার।
আরও পড়ুনঃ রথযাত্রার আগেই ষাঁড়ের তাড়া খেলেন মুকুল রায়
তার পরিপ্রেক্ষিতে মতুয়া মহাসংঘের তরফে আগেই প্রতিবাদ জানানো হয়েছিলো। তৃণমূল সাংসদ মমতা বালা ঠাকুর অসমে গিয়ে এনআরসির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হলেও তাঁকে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ মতুয়াদের আশ্বাস দিয়ে জানান, মতুয়ারা নাগরিকত্বের দাবিদার। তিনি মতুয়াদের আন্দোলনকে সব সময় সমর্থন করেন। বিদেশী তকমা দিয়ে নাগরিকপঞ্জী থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ায় বিজেপির কড়া সমালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিকে বৃহস্পতিবারই ঠাকুরবাড়ির অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে বীনাপাণিদেবীকে বঙ্গবিভূষণ পুরষ্কার প্রদান করে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর সঙ্গে সঙ্গেই ঠাকুরনগরের উন্নয়নকল্পে একগুচ্ছ প্রকল্প ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুরবাড়ি উন্নয়ন বিকাশ পর্ষদ এবং মতুয়া সংঘ বিকাশ পর্ষদ গঠনের প্রতিশ্রুতি দেন। ঠাকুরনগর থেকে ৫ কিলোমিটার দুরত্বে চাঁদপাড়ায় ৮.৮ একর জমিতে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কথাও ঘোষনা করা হয়। ঠাকুরনগরকে পর্যটন মানচিত্রে জুড়ে দেওয়ার যথাসাধ্য প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ মোদী সরকারের কাছে মমতাকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার দাবি তুললেন ইদ্রিস
লোকসভা ভোটের ঠিক কয়েক মাস আগেই নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিজেপির বিরোধিতা করে মতুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দেওয়ার সাথে সাথে যে একগুচ্ছ প্রকল্পের ঘোষণা করা হোলো, তাতে মতুয়াদের মন জয়ে যে অনেকটাই এগিয়ে থাকলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তা বলাই বাহূল্য। আর অসম নাগরিকপঞ্জী এনআরসি নিয়ে এমনিতেই ক্ষুব্ধ মতুয়ারা। ফলে,ফের একবার মতুয়া ভোট যে মমতার তৃণমূলের ঝুলিতেই যাচ্ছে তা বলাই যায়।