শিশুদিবসে বড়দের লজ্জা দিয়ে শিক্ষা দিল শিশুরা

601
The News বাংলা

The News বাংলা, মালদহ: কে বলে সব দাবি আদায় করা যায় না? কে বলে ইচ্ছা থাকলেও উপায় হয় না? মন থেকে কিছু করার ইচ্ছে-আগ্রহ থাকলে দেশ পরিবর্তন করা যায়। শিশুদিবসে সেটাই, বড়দের একরাশ লজ্জা দিয়ে শিখিয়ে দিল শিশুরাই। তবু কি বড়দের লজ্জা হবে? শিক্ষা হবে?

সামনে নেতৃত্বে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ঠিক পিছনের সারিতে একে একে শিক্ষামন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, পরিবেশমন্ত্রী, খাদ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রীও। ভেবে অবাক হচ্ছেন? শিশু দিবসে মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরে আচমকা হাজির ‘শিশু সংসদ’। নিজের স্কুলের বেশ কিছু অভাব অভিযোগ নিয়ে সটান দরবার জেলা প্রাথমিক সংসদের সভাপতির কাছে।

The News বাংলা

নাছোড় শিশুদের দাবি মেনে নিয়ে তাঁদের সঙ্গে নিয়েই সভাপতি ছুটলেন ইংরেজবাজারের বিডিও-র কাছে। দিনের শেষে বিডিও এবং সভাপতির কাছে নিজেদের দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরল কচিকাঁচারা। শিশু দিবসে নজীরবিহীন এই ঘটনার ছবি মালদহের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরে।

আরও পড়ুন: বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পের বেশ কিছু অজানা কাহিনী

বয়স মেরে কেটে আট থেকে দশ। প্রত্যেকেই মালদহের অমৃতির রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠের দ্বিতীয় থেকে চর্তুথ শ্রেনীর পড়ুয়া। কিন্তু পদাধিকার বলে এরাই আজ কেউ স্কুলের প্রধানমন্ত্রী, কেউ বা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, পরিবেশ বা ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রীত্বের দায়িত্বে। গত এক বছর ধরে স্কুলে শিশু সংসদ গড়ে এরা প্রত্যক্ষ করেছে দৈনন্দিন নানা অসুবিধা।

The News বাংলা

আর আজ শিশু দিবসের দিনটিকেই বেছে নিয়ে তারাই সদলবলে হাজির মালদহ জেলা শিক্ষা সংসদে। তাঁদের সঙ্গী স্থায়ী সমিতির আরও জনা তিরিশেক সদস্য। সকলকে অবাক করে সটান সভাপতির ঘরে হাজির হয়ে তাঁদের দাবি, স্কুলের সীমানা প্রাচীর, পরিশ্রুত পানীয় জল থেকে বাড়তি শ্রেনী কক্ষের সমস্যার সমাধান করতে হবে। সভাপতির হাতে এই সংক্রান্ত লিখিত একটি আবেদনপত্রও এদিন তুলে দেয় শিশু সংসদ।

আরও পড়ুন: মেয়েদের বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতাল বিবাহিত দম্পতি!

ক্ষুদেদের এমন কাণ্ডকারখানায় প্রথমে কিছুটা হতচকিত হয়ে যান মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ সভাপতি আশিষ কুণ্ডু। পরে শিশুদের এমন সাহসী পদক্ষেপে খুশী হয়েই দেরী না করে নিজের অফিস ছেড়ে শিশু সংসদকে নিয়েই ইংরেজবাজারের বিডিও-র অফিসে পৌছান সংসদ সভাপতি। তাঁর ও শিশুদের কাছে স্কুলের সমস্যা শুনে সঙ্গে সঙ্গেই সীমানা প্রাচীরের অনুমোদন দিয়ে দেন বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায়। জানান এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রকল্প তৈরীর জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের দল পাঠানো হবে ওই স্কুলে।

The News বাংলা

শুধু তাই নয় চাকরী জীবনে এমন প্রতিনিধি দলের মুখে আগে কখনও পড়েননি বলেও স্পষ্টতই জানান বিডিও। শিশু সংসদের এমন দায়িত্বশীল ভূমিকায় জেলার বাকী স্কুলগুলোও উৎসাহিত হবে বলে এদিন আশা প্রকাশ করেন মালদহের সংসদ সভাপতিও। শিশুদের নিয়ে বিডিও-র কাছে দাবি আদায় করেও খুশী পর্ষদ সভাপতি। তিনি জানান ব্লক প্রশাসন সীমানা প্রাচীরের অনুমোদন করেছে। বাকী দাবিগুলিও যথার্থ। সেগুলিরও সমাধান করবে শিক্ষা সংসদ।

আরও পড়ুন: ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কাউন্সিলরের ‘বিজ্ঞাপন’, বিক্ষোভে মুখ পুড়ল বাংলার

শুধু মৌখিক আশ্বাস বা দাবি পুরণই নয় শিশু দিবস উপলক্ষ্যে এদিন শিশুদের নিজের দপ্তরে মিষ্টি মুখের ব্যবস্থা করেন মুগ্ধ ইংরেজবাজার ব্লক বিডিও দেবর্ষি মুখোপাধ্যায় । প্রত্যেকের হাতে ফল তুলে দেন সংসদ সভাপতি আশিষ কুণ্ডু। শিশু দিবসে বড়দের শিক্ষা দিল শিশুরাই।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন