অসমের এনআরসি’র পর উদ্বাস্তু হবার আশঙ্কায় বাংলার উদ্বাস্তু বাস্তুহারারা

480
The News বাংলা

শিলিগুড়ি, ১৪নভেম্বরঃ অসমে এনআরসি অর্ডিন্যান্স জারি হবার পরই পশ্চিমবঙ্গে এই ধরনের অর্ডিন্যান্স জারি হবার আশঙ্কায় ভুগছে সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ। বাংলার তথা দার্জিলিং জেলার উদ্বাস্তুরা যাতে ফের বাস্তুহারা না হন, সে কারনে সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজতে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে ইউনাইটেড সেন্ট্রাল রিফুজি কাউন্সিল অর্থাৎ ইউসিআরসি। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনে রাজ্য ও জেলা নেতৃত্বদের উপস্থিতিতে এই আলোচনা সভা হবে বলে জানা গেছে। এই আলোচনা সভায় সংগঠনের দাবী আদায়ের জন্য আন্দোলনের রূপরেখা তৈরী করা হবে বলেও খবর।

আরও পড়ুনঃ শিশুদিবসে বড়দের লজ্জা দিয়ে শিক্ষা দিল শিশুরা

দেশ ভাগের সময় তৎকালীন কেন্দ্র সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যদি পুর্ববঙ্গ থেকে কোনও তৎকালিন ভারতীয় হিন্দু ভারতবর্ষে আসে তাহলে তাদের সমস্ত দায়ভার কেন্দ্র বহন করবে। কিন্তু অভিযোগ, স্বাধীনতার ৭১ বছর পার হয়ে যাবার পরও উদ্বাস্তুরা প্রতিশ্রুতি মত ফল না পাওয়ায় আজও আন্দোলন করে চলেছে। বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলন করে ইউসিআরসির জেলা নেতৃত্ব।

The News বাংলা

ছিলেন সংগঠনের দার্জিলিং জেলার সম্পাদক পরেশ সরকার, সহ সম্পাদক নারায়ন গোস্বামী, কার্যকারী সভাপতি অনিল দাস ও জেলা সংগঠনের সদস্যা চন্দনা সাহা। সংগঠনের পক্ষে সম্পাদক পরেশ সরকার অভিযোগ করে বলেন, বর্তামানে কেন্দ্র সরকার এনআরসির নামে যা করছে তাতে রাজ্য সরকার সায় দিচ্ছে। কেননা বর্তমান রাজ্য সরকার উদ্বাস্তুদের দপ্তরটা তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। সে কারনে দপ্তরটাকে বিএলআরও-র সঙ্গে মার্জ করে দিয়েছে।

আরও পড়ুনঃ ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কাউন্সিলরের ‘বিজ্ঞাপন’, বিক্ষোভে মুখ পুড়ল বাংলার

কাজেই যে সমস্ত উদ্বাস্তুরা নদীনালা, জঙ্গল ও অনুর্বর জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে তাদের জমির মালিকানা, বাসস্থান থেকে তারা আজও বঞ্চিত। তাদের জমির মালিকানার পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারের হাউসিং ফল অল ২০২২ স্কিমের আওতায় অন্তর্ভুক্তির দাবী জানান তারা। পরেশবাবু বলেন, “আমরা অপমানিত, আমরা নির্যাতিত, অসমের ঘটনার পর আমরা ফের উদ্বাস্তু হবার আশঙ্কায় ভুগছি। তাই আমরা ন্যায়ের দরজায় দাড়িয়ে ন্যায় চাইছি।”

The News বাংলা

তার আরও বক্তব্য, “আমাদের বাধ্যতামুলকভাবে উদ্বাস্তু করা হয়েছে। সে কারনে আমাদের সমস্ত দায়ভার সরকারকে নিতেই হবে। না হলে আগামীদিনে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।” সংগঠনের কার্যকারী সভাপতি অনিল দাস বলেন, ‘আমাদের জমির মালিকানা স্বত্বের দাবীর পাশাপাশি মুল দাবী হল পুনর্বাসনের জন্য আমাদের ৫ হাজার ১০ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা দিতে হবে। তিনি জানান, তৎকালিন কেন্দ্র সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পুর্ব পাকিস্থান থেকে যে সমস্ত হিন্দুরা পশ্চিমবঙ্গে আসবে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

আরও পড়ুনঃ ‘দরাজ নিমন্ত্রণে’ মায়ের শ্রাদ্ধে লোক খাওয়াতে ঘুম উধাও বাংলার বিধায়কের

তিনি অভিযোগ করে বলেন, আজ পর্যন্ত পুনর্বাসনের জন্য এক টাকাও সরকার দেয় নি। দেশভাগের পর তাদের সর্বপ্রথম পুনর্বাসনের জন্য ৫০০ কোটি টাকার দাবী ছিল। কিন্তু জিনিসের মুল্য বৃদ্ধির অনুপাতে পুনর্বাসনের জন্য অর্থের দাবীও বৃদ্ধি পেয়েছে পর্যায়ক্রমে। বর্তমানে তা ৫ হাজার ১০ কোটি ৬০ লক্ষ টাকায় এসে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটের সময় বামেদের দার্জিলিং জেলা কার্যালয়ে সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মধু দত্ত, রাজ্য কার্যকারী সভাপতি নিরঞ্জন মজুমদার ও জেলা বাম আহ্বায়ক জীবেশ সরকারের উপস্থিতিতে এক আলোচনা সভার মাধ্যমে আগামী আন্দোলনের রূপরেখা সুনির্দিষ্ট হবে।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন