রেকর্ড হতে হতেও হল না। নরেন্দ্র মোদী হতেন একমাত্র ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী; যিনি ৫ বছরে একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি। কিন্তু শুক্রবার সেই রেকর্ড গড়া থেকে; নিজেকে মুক্তি দিলেন মোদী। অমিত শাহকে নিয়ে এলেন সাংবাদিক সম্মেলনে। বলা যায়, অমিত শাহই নিয়ে এলেন নরেন্দ্র মোদীকে। আর এসেই ঘোষণা করলেন; বিজেপি একাই ৩০০ আসন জিতবে।
সপ্তম দফা ভোটের আগে প্রচার শেষ হওয়ার পরে; সাংবাদিক সম্মেলন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর পাশে বসে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন; এই দীর্ঘ প্রচারপর্বে ১৪২টি জনসভায় বক্তব্য রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতার পর গণতান্ত্রিক ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী; যিনি সরকারের মেয়াদকালে একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি।
মোদীর সরকারের অবশিষ্ট মেয়াদকাল আর মাত্র কয়েকটা দিন। এর মধ্যে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে সামনে আসবেন বলে; মনে করেননি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও। তবে সেটাই হল শুক্রবার। অমিত শাহের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন মোদী। তবে প্রধানমন্ত্রী নন; যা বলার তা বললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতিই।
শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের সঙ্গে; সাংবাদিকদের সখ্যতা আছে। কিন্তু, সেসবের ধার ধারেন না মোদী। সরকারের শীর্ষে থেকে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়া; ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ধাতে ছিল না। বরং তা এড়িয়েই চলেছেন তিনি। গত ৫ বছরে একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি তিনি। তবে, মাঝেমধ্যে পছন্দের সংবাদপত্র বা টেলিভিশন চ্যানেলে; প্রশ্নের জবাব দিতে দেখা গেছে তাঁকে।
গত পাঁচ বছরে কর্মসংস্থান, কৃষক দুর্দশা, গো-রক্ষা, দলিত নিপীড়ন, গণপিটুনির মতো; বিষয়গুলিতে; মুখে কুলুপ এঁটে থেকেছেন মোদী। নোটবন্দি, পণ্য ও পরিসেবা কর, হালের সীমান্তে উত্তেজনার ইস্যুতেও; সংসাদমাধ্যমকে এড়িয়ে চলেছেন মোদী।
ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়া করে; পালিয়ে যাওয়া মেহুল চোকসি, বিজয় মালিয়া ও নীরব মোদীদের নিয়েও ‘নীরব’ থেকেছেন তিনি। এজন্য তাঁকে ‘মৌন মোদী’ আখ্যা দিয়েছে বিরোধী শিবির। অথচ, সরকারি হোক বা দলীয়; জনসভায় বরাবরই গলা চড়াতে পছন্দ করেন মোদী।
প্রবীণ সাংবাদিকদের মতে, নরেন্দ্র মোদী আসলে মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ করেছেন অত্যন্ত সুকৌশলে। জাতীয় সংবাদমাধ্যম তাঁকে সরাসরি প্রশ্ন করার সুযোগ পায়নি। তবে শুক্রবার শেষ দফার ভোটের আগে; সেই রেকর্ড ভাঙলেন মোদী। তবে এদিনও একটা প্রশ্নও নরেন্দ্র মোদীকে করার সুযোগ পাননি সাংবাদিকরা।