The News বাংলা, ছত্তিশগড়: সোমবার ১২ নভেম্বর, ছত্তিশগড় বিধানসভার প্রথম দফার নির্বাচন। তার আগে শনিবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে খামতি রাখলো না কোনো পক্ষই। শনিবার ছত্তিশগড়ে জগদলপুরে নরেন্দ্র মোদীর নির্বাচনী সভা অনুষ্ঠিত হয়, তার কিছুটা দূরেই রাজনন্দগাঁওয়ে সভা সম্পন্ন হয় রাহুল গান্ধীর। নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে মোদী- রাহুল তরজা তুঙ্গে উঠল।
এদিন নরেন্দ্র মোদী, কংগ্রেসকে মাওবাদীদের সমর্থক বলে কটাক্ষ করেন। উল্লেখ্য, মোদীর নির্বাচনী প্রচারের ১ দিন আগেই ছত্তিশগড়ে দান্তেওয়াড়ায় মাও হামলায় ১ জন জওয়ান সহ ৫ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়। ১২ নভেম্বর ছত্তিশগড়ে প্রথম দফার নির্বাচন৷ যে ১৮টি কেন্দ্রে ভোট হবে তার নটিই মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় অবস্থিত।
কিছুদিন আগে এখানেই মাওবাদী হামলায় মৃত্যু হয় একজন চিত্র সাংবাদিকের। এইসব মাও হামলা নিয়ে মাওবাদীদের সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখে নিজেদের বক্তব্য জানায় কংগ্রেস। আর এটাকেই প্রধানমন্ত্রী কটাক্ষ করে বলেন, “নিজেদের সন্তানদের বিদেশে পাঠিয়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে বসে শহুরে মাওবাদীরা জনগনকে ভুল পথে চালনা করে তাদের জীবন দুর্বিসহ করে তুলেছে। আর তাদের মদত যোগাচ্ছে কংগ্রেস”।
আরও পড়ুন: মোদীর ভারতে সর্দার প্যাটেলের রেকর্ড ভাঙবে ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তি
অন্যদিকে প্রতিশ্রুতি মতো দাবী পূরণ না হওয়া নিয়ে আগাগোড়াই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তীব্র বাক্যবানে বেঁধেছেন রাহুল গান্ধী। রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার দুর্নীতি থেকে শুরু করে নোটবন্দী, জিএসটি, এই সকল ইস্যুতেই সোচ্চার হন রাহুল।
কালো টাকা উদ্ধার ও ২ কোটি কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতির বাস্তব চিত্রও তিনি তুলে ধরেন। নিজেকে দেশবাসীর ‘চৌকিদার’ হিসেবে উল্লেখ করা মোদী দুর্নীতির ইস্যুতে চুপ কেনো, তা নিয়ে প্রশ্ন করতে ছাড়েননি তিনি।
আরও পড়ুন: মোদী সরকারের কাছে মমতাকে ‘ভারতরত্ন’ দেওয়ার দাবি তুললেন ইদ্রিস
স্বাভাবিক ভঙ্গিমায় তিনি আরও একবার উল্লেখ করেন, মোদী জমানায় দেশের সাধারণ মানুষ কিছুতেই উপকৃত হয়নি, উপকৃত হয়েছে মোদীর স্যুট বুট পরা বন্ধুরা। বিজেপিকে চাঁচাছোলা আক্রমনের পাশাপাশি ক্ষমতায় এলে ১০ দিনের মধ্যেই কৃষক ঋণ মকুব করার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। রাহুলের বক্তব্য, তার দল জনগনের জন্য প্রতিশ্রুতি পালনে বদ্ধ পরিকর।
এদিকে রাহুলের বক্তব্যেকে অন্তঃসারশূন্য বলে বিজেপির তরফে পাল্টা কটাক্ষ করা হয়। নোটবন্দী নিয়ে রাহুলের সমালোচনার পাল্টা জবাবে বিজেপির তরফে বলা হয়, নোটবন্দীর ফলে আয়কর দাতার সংখ্যা এবং সরকারী কোষাগারে আয় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। কিন্তু তাতে কংগ্রেস নেতাদের থলিতে টান পড়েছে বলে তারা মিথ্যা এবং অযৌক্তিক প্ররোচনা চালাচ্ছেন।
আগামী ১২ ও ২০ নভেম্বর দু’দফায় ছত্তিশগড়ের ৯০ টি বিধানসভা আসনে নির্বাচন। রাজ্যে হিংসা এড়াতে ছত্তিশগড়ে মাও অধ্যুষিত ১৮টি আসনের জন্য একটি আলাদা দফায় নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয় ৷ আগামী ১২ নভেম্বর ওই ১৮টি আসনে নির্বাচনের দিন স্থির হয়েছে ৷ বাকি ৭২টি আসনে নির্বাচন হবে আগামী ২০ নভেম্বর।
মে এবং নভেম্বরের বিভিন্ন উপনির্বাচনে মোদীর প্রচার সত্ত্বেও হার হয়েছে বিজেপির। এখন দেখার ৯০ টি বিধানসভা আসনে ছত্তিশগড় নির্বাচনে কি ফল হয়।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী মোদীর সভার আগেই মাওবাদী হামলায় নিহত ৫
ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোট ভালো ফল করলে সেটা আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদীর বিজেপির জন্য ভালো খবর হবে না। সেটা বুঝেই রাহুলের নেতৃত্বে কোমর বেঁধে নেমেছে কংগ্রেস ও বিরোধীরা।