আগামী শুক্রবারই বাংলায় আসছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এবার নিরাপত্তায় আর কোন ফাঁকফোঁকর রাখতে চায় না কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তাই শুক্রবারই প্রাথমিক পর্বে রাজ্যে আসছে ১০ কোম্পানি বিএসএফ বাহিনী। বাংলায় এসেই বিভিন্ন এলাকায় রুট মার্চ করবে তারা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুট মার্চের ভিডিও করবে প্রশাসন।
শুক্রবার থেকেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাতে শুরু করবে নির্বাচন কমিশন। ভোট ঘোষণার পর কেটেছে মাত্র দুদিন। তার মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত একপ্রকার রাজ্যকে চাপে রাখার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। একেই পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় ভোট করা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। তারপরে ভোটের এত আগে থেকেই বাংলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোয় তুঙ্গে উঠেছে বিতর্ক।
আরও পড়ুনঃ রায়গঞ্জে বিজেপির হয়ে কি লড়বেন দীপা দাশমুন্সি
সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন ছাড়ার সময় বলেন, বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে পশ্চিমবঙ্গে ৭ দফায় নির্বাচন ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। যদিও তিনি একথাও বলেন যে, নির্বাচন কমিশনের প্রতি তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে।
শুক্রবারই ১০ কোম্পানি বিএসএফ আসছে রাজ্যে। তারপরেই কমিশন অতি উত্তেজনাপ্রবণ বুথগুলিতে বাহিনীকে দিয়ে রুটমার্চ করাবে। মাও আক্রমণ বন্ধ হলেও রুটমার্চ চলবে জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতেও। জঙ্গলমহলের দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে রুটমার্চ করাবে কমিশন। দিল্লি সূত্রের খবর, এবার ভোটের আগেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আর থানা বা পুলিশ সুপার তদারকি করবে না।
আরও পড়ুনঃ এগিয়ে তৃণমূল, মঙ্গলবার বিকালেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী তালিকা
তার বদলে কমিশনের নিজস্ব পুলিশ পর্যবেক্ষকেরা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে কন্ট্রোল করবে। অর্থাত্ ভোটের আগেই অতি উত্তেজনাপ্রবণ বুথগুলি সহ গোটা রাজ্যই পুরোপুরি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরে চলে আসবে। আর তাদের পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন নিযুক্ত পুলিশ পর্যবেক্ষকেরা।
আরও পড়ুনঃ জঙ্গি মাসুদ আজহারকে ‘মাসুদ আজহার জী’ বলে সম্বোধন করে বিতর্কে রাহুল
শনিবার থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী গোটা রাজ্যে ভয়মুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে টহলদারি চালাবে। তবে কোন কোন এলাকায় টহলদারি চলবে, তা ঠিক করবেন জেলাশাসকরা ও পুলিশ পর্যবেক্ষকেরা। গত বিধানসভা নির্বাচনেও ভোটের দিনের আগে থেকেই রাজ্যে টহলদারির জন্য ১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে এসেছিল। এবার আরও অনেক আগে থেকেই সেই বাহিনী আসছে বলেই কমিশন সূত্রে খবর। এবার প্রতি বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্থান চিনকে ভয় দেখিয়ে বালাশোরে পিনাক রকেট ছুঁড়ল ভারত
বিজেপি সহ সব বিরোধী দলের পক্ষ থেকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়ে অভিযোগ করা হয়। পঞ্চায়েত ভোটের বিভিন্ন ঘটনার ভিডিও ক্লিপিংস জমা দেওয়া হয়। সেইসব অভিযোগের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়, ভোটের বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হতেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হবে। সেইরকম ইঙ্গিত দিল্লি থেকে কলকাতায় নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে আসে। তারপরেই শুক্রবার বাহিনী আসার খবর জানা যায়।
আরও পড়ুনঃ মমতাকে মুকুলের ভয় দেখিয়ে কি রাজ্যে মন্ত্রী হচ্ছেন অর্জুন
নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, রাজ্যে এবার ভোটগ্রহণের অনেক আগেই প্রতিটি বুথে ও এলাকার দখল নেবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। শুধু তাই নয়, নির্দিষ্ট সময়ে বাহিনী বুথে পৌঁছল কি না, তার ছবি তুলে সেক্টর অফিসকে তা পাঠাতে হবে কমিশনে। কোনও ভাবেই রাজ্য পুলিশকে বুথে ঘেঁষতে দেওয়া হবে না। খুব প্রয়োজনে লাঠিধারি রাজ্য পুলিশ বুথের বাইরে ভোটারদের লাইন দেখভালের দায়িত্বে থাকতে পারে।
আরও পড়ুনঃ রমজান মাসে নির্বাচনে কোনও সমস্যা নেই, ববিকে পাল্টা দিলেন ওয়েসি
বড়জোর কেন্দ্রীয় বাহিনীর দোভাষির কাজ করতে পারে তারা অতীতে অতি-স্পর্শকাতর বুথের দখল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিলেও এভাবে রাজ্যের প্রতিটি বুথেই এতদিন আগে থেকে বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কায়েমের নজির নেই। রাজ্য পুলিশকে এভাবে বুথ থেকে ব্রাত্য করে দেওয়াও সমান বেনজির৷ রাজনৈতিক মহলের মতে, নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত আসলে রাজ্যের পুলিশের প্রতি অনাস্থারই প্রকাশ।
আরও পড়ুনঃ সুব্রত বক্সির বদলে কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে কি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
কমিশনের এক আধিকারিকের মতে, এবারের ভোটে রাজ্য পুলিশকে যতটা সম্ভব কম ব্যবহারের কথাই ভাবা হয়েছে। তাই ভোটের জন্য তৈরি ফ্লাইং স্কোয়াড, কুইক রেসপন্স টিম ও সেক্টর মোবাইল ইউনিটেও কেন্দ্রীয় বাহিনীকেই প্রথমে দায়িত্ব দেওয়া হবে। কাজের সুবিধার জন্য জিপিএস ব্যবহার করবে ফ্লাইং স্কোয়াড৷ এলাকা সর্ম্পকে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে সাহায্য করতেই জিপিএসের মতো অত্যাধুনিক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ দিতে চায় নির্বাচন কমিশন৷
আরও পড়ুনঃ বাংলার কোন লোকসভা আসনে কবে ভোট দেখে নিন
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে পাকিস্তানে ফের একটা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হবে
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।