ভারত-পাক যুদ্ধ চায় ভারতের ৩৬% মানুষ। জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর ভারতে চালান এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধ চায় ভারতের ৩৬ শতাংশ মানুষ। এই জঙ্গি হামলার বদলা হিসেবে ভারতের কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সেই প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধই একমাত্র সমাধানের পথ বলে রায় দিয়েছেন অনেকেই।
ইন্ডিয়া টুডে ও এক্সিক মাই ইন্ডিয়ার যৌথ সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই সমীক্ষায় দেখা যায়, ভারতের শতকরা ৩৬ শতাংশ মানুষই চাইছেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পুরোদমে যুদ্ধ করা হোক। ২৩ শতাংশ মানুষ যুদ্ধের বদলে চাইছেন সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, অর্থাৎ সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করা হোক।
সিবিআই ইডি তদন্ত থেকে বাঁচাতেই কি স্বামীকে রাজনীতিতে আনছেন প্রিয়াঙ্কা
১৮ শতাংশ মানুষ মনে করেন, ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে গোপনে অপারেশন চালিয়ে ওসামা বিন লাদেনকে যেভাবে আমেরিকা হত্যা করেছিল, ঠিক সেভাবেই জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারকেও নিকেশ করা হোক। আর ১৫ শতাংশ মানুষ বলেছেন, পাকিস্তানকে কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন করা হোক।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলায় ৪৯ জন সিআরপিএফ জওয়ানের মৃত্যুর পরই ভারতের ২৯টি রাজ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। ওই সমীক্ষায় উত্তরদাতাদের শতকরা ৪৯ শতাংশ মানুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতম ব্যক্তি হলেন নরেন্দ্র মোদী। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চেয়ে অনেকটাই পেছনে রয়েছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী।
আরও পড়ুনঃ ভারতের নদী থেকে একফোঁটাও জল দেওয়া হবে না পাকিস্তানকে
ওই সমীক্ষায় ১৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে রাহুল গান্ধীই যোগ্য নেতা। অন্যদিকে ৩ শতাংশ মানুষ ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে সন্ত্রাসবাদ দমনে যোগ্য নেতা বলেই মনে করেছেন। এ ক্ষেত্রে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, বহুজন সমাজবাদী পার্টির নেত্রী মায়াবতী ও সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব প্রত্যেকেই মাত্র এক শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ চিরশত্রুকে শিক্ষা দিতে ভারত পাক যুদ্ধ চান বাবা রামদেব
পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পরই দেশজুড়ে ওই ঘটনার বদলার দাবি উঠেছে। হামলার পরই পাকিস্তানকে কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে ভারত। এরই মধ্যে পাকিস্তানকে দেওয়া মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন) বা সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশের তকমা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত।
এরপর পাকিস্তান থেকে সমস্ত পণ্যের ওপরই আমদানি শুল্ক ২০০ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে পাকিস্তানকে নদীর জল সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্তও নিয়েছে ভারত। সমীক্ষায় আরও দেখা গেছে, শতকরা ৪৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, পাকিস্তান ও কাশ্মীর ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নীতি বিগত কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন সংযুক্ত প্রগতিশীল জোট, ইউপিএ (২২ শতাংশ) এবং অটল বিহারি বাজপেয়ি প্রশাসনের (১২ শতাংশ) চেয়ে অনেক ভালো।
আরও পড়ুনঃ বিশ্ব জুড়ে প্রভাব ফেলে শান্তি পুরস্কার পেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
পুলওয়ামা জঙ্গি হামলায় এত সংখ্যক ভারতীয় জওয়ানের প্রাণ চলে যাওয়ার পেছনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সে দেশের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকেই প্রধান দায়ী হিসেবে মনে করেন ৩০ শতাংশ মানুষ। ১৯ শতাংশ মানুষের অভিমত, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানই এর জন্য দায়ী। ১৩ শতাংশ মানুষ দায়ী করেছেন, জইশ-ই-মহম্মদকে।
এত বড় হামলা কিভাবে সংগঠিত হলো? এই প্রশ্নের উত্তরে ১৩ শতাংশ মানুষ গোয়েন্দা ব্যর্থতাকেই দায়ী করেছেন। ১৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, সন্ত্রাস দমনে কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্বল নীতিই এর জন্য দায়ী। আর ৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবের কারণে এই হামলা হয়েছে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।