The News বাংলা, কলকাতা: ‘ওস্তাদের মার শেষ রাতে’, প্রবাদটা সত্যি করলেন বিশ্বনাথন আনন্দ। ১১জন দাবাড়ুকে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে কলকাতার আইসিসিআরে শুরু হওয়া টাটা স্টিল চেজ ইন্ডিয়া ২০১৮-র ব্লিৎজ দাবায় চ্যাম্পিয়ন হলেন ভারতের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার। বিশ্বকে ফের চমকে দিয়ে কলকাতায় চ্যাম্পিয়ন হলেন বিশ্বনাথন আনন্দ।
আরও পড়ুন: ‘দরাজ নিমন্ত্রণে’ মায়ের শ্রাদ্ধে লোক খাওয়াতে ঘুম উধাও বাংলার বিধায়কের
মঙ্গলবার পর্যন্ত এগিয়ে থাকা গ্র্যান্ডমাস্টার হিকারু নাকামুরাকে প্লে-অফ ম্যাচে হারিয়ে বুধবার ব্লিৎজ দাবায় চ্যাম্পিয়ন হন আনন্দ। মঙ্গলবার আনন্দ ৪ নম্বর স্থানে ছিলেন। হিকারু নাকামুরা ছিলেন টপ পজিশনে। নাকামুরাকেই চ্যাম্পিয়ন ধরা হচ্ছিল। সেখানেই চমক ভারতের ‘ভিশি’র। বুধবার টানা ৯টা ম্যাচের মধ্যে ৬টা জয় ও ৩টে ড্র করে নাকামুরাকে পয়েন্টে ধরে ফেলেন আনন্দ।
এরপর, ব্লিৎজ দাবায় বিশ্বের তিন নম্বর দাবাড়ু নাকামুরার সঙ্গে ২ রাউন্ডের প্লে অফ হয় আনন্দের, যেটাকে ‘টাইব্রেকার’ বলাই যায়। প্লে অফে সাদা গুটি নিয়ে জিতে ও কালো গুটি নিয়ে ড্র করে খেতাব জিতে নেন ‘ভারতের দাবার মুখ’ আনন্দ।
আরও পড়ুনঃ মেয়েদের বিশ্বকাপে ম্যাচ জেতাল বিবাহিত দম্পতি!
২৬ বছর পর তিনি কলকাতায় কোনও টুর্নামেন্টে খেলতে নেমেছিলেন। ১৯৯২ সালে গুডরিক ওপেনে শেষবারের মত কলকাতায় খেলেছিলেন পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।
মোট ১১ জন দাবাড়ুকে নিয়ে গত শুক্রবার থেকে কলকাতার আইসিসিআরে শুরু হয় টাটা স্টিল চেজ ইন্ডিয়া ২০১৮। ব্লিৎজ দাবা দিয়েই শেষ হয় বুধবার ১৪ নভেম্বর।
উদ্যোক্তাদের দাবি ছিল, শুধু কলকাতায় নয়, রাপিড ও ব্লিৎজ ইভেন্টে গোটা ভারতেই এর আগে এত বড় মাপের দাবা টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয় নি। স্বাভাবিকভাবেই এই টুর্নামেন্টের মূল আকর্ষণ ছিলেন ‘ঘরের ছেলে’ বিশ্বনাথন আনন্দ। রাপিড দাবায় আনন্দ কিছু করতে না পারায় মনমরা ছিল কলকাতার দাবা প্রেমীরা। সুদে আসলে পুষিয়ে দিলেন ব্লিৎজ ইভেন্টে চমকে দিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে।
এই টুর্নামেন্টে ছিলেন, এই মুহূর্তে বিশ্ব কাঁপান একঝাঁক রাপিড ও ব্লিৎজে সাড়া জাগানো গ্র্যান্ডমাস্টার। তালিকায় কে ছিলেন না! কলকাতার সূর্যশেখর গাঙ্গুলি থেকে ফিডে বিশ্ব রাঙ্কিংয়ে বিশ্বের তিন নম্বর হিকারু নাকামুরা। আমেরিকার ওয়েসলি সো। এই মুহূর্তে যিনি ফিডে বিশ্ব রাঙ্কিংয়ে আছেন ষোলতম স্থানে। ২০১৩র বিশ্ব রাপিড চেজ চ্যাম্পিয়ন শাখরিয়ার মামেদিয়ারভও খেতাব জয়ের প্রবল দাবিদার ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতীয় ক্রিকেটারদের দাবি ‘কলা আর বউ’
২০০০ থেকে ২০০২ টানা তিন বছর ফিডে ওয়ার্ল্ড চেজ চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব ছিল তাঁর দখলে। ৪৮ বছর বয়সেও আনন্দের খেতাব জয়ের খিদে যে বিন্দুমাত্র কমেনি তা বোঝা গেল বুধবার। কলকাতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফের তিলোত্তমার ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে গেলেন ভারতের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ।