প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে মানহানির মামলা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর

457

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রাক্তন সাংবাদিক ও বর্তমানে বিজেপি সরকারের মন্ত্রী এম জে আকবর মানহানির মামলা করলেন। তার নামে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা সাংবাদিক প্রিয়া রামানির নামে মানহানির অভিযোগ দায়ের করলেন মি-টু (#MeToo)-তে অভিযুক্ত বিদেশ প্রতিমন্ত্রী এম জে আকবর। আদালতে লড়াই করবেন জানিয়েছেন রামানি।

আকবরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ প্রথম এনেছিলেন সাংবাদিক প্রিয়া রামানি। যদিও এক বছর আগে লেখা সেই প্রতিবেদনে তিনি আকবরের নাম করেন নি। কিন্তু সম্প্রতি এক ট্যুইটে তিনি পুরোনো ঘটনা মনে করিয়ে সরাসরি আকবরের নাম নেন।

তার পর থেকে একাধিক মহিলা সাংবাদিক আকবরকে নিয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা জানাতে থাকেন। কীভাবে হোটেলের ঘরে ইন্টারভিউর নামে মহিলা সাংবাদিকদের আকবর ডেকে পাঠাতেন, মদ খাওয়াতেন, ঘনিষ্ঠভাবে কাছে বসতে বাধ্য করতেন, অশালীন আচরণ করতেন, মহিলা সাংবাদিকেরা তার বিবরণ দিয়েছেন।

পরিচয় প্রকাশ না করা এক সাংবাদিক লিখেছেন তাঁকে হোটেলে ডাকার কাহিনি। ‘সম্পাদক মশাই’ তাঁকে জোর করে মদ খাওয়ালেন এবং জড়িয়ে ধরলেন। সেই মহিলা লিখেছেন, একটা সময় জোর করে আকবারকে ঠেলে দিয়ে, দরজা খুলে তিনি হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন।

আকবরের বিরুদ্ধে এই অভিযোগগুলো প্রধানত সেই সময়ের যখন তিনি কলকাতায় ‘সানডে’ ম্যাগাজিন ও ‘দ্য টেলিগ্রাফ’-এর সম্পাদনা করছেন। এর পর তিনি ‘এশিয়ান এজ’ ও ‘দ্য সানডে গার্ডিয়ান’ পত্রিকা সম্পাদনা করেন। সাংবাদিকতা ছেড়ে আকবর প্রথমে যোগ দেন কংগ্রেসে। সাংসদও হন। পরে বিজেপিতে যোগদান ও মন্ত্রিত্ব লাভ।

প্রিয়া রামানি নামের ওই সাংবাদিক এবং আরও কয়েকজন মহিলা অভিযোগ করেন যে এম জে আকবর পত্রিকার সম্পাদক থাকার সময় তাদের যৌন হেনস্থা করেছিলেন। যদিও আকবর, যিনি দি টেলিগ্রাফ এবং দি এশিয়ান এজ নামে দুটি পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন, বলছেন, এসব দাবি ‘মিথ্যা এবং অতিরঞ্জিত।’

এর পর প্রিয়া রামানিও একটি বিবৃতি দিয়েছেন । তাতে তিনি বলেন, এ মামলা করে মি আকবর ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানির মাধ্যমে অভিযোগকারীদের চুপ করিয়ে দিতে চাইছেন। প্রিয়া রামানি আরো বলেন, তিনি মামলা লড়ার জন্য প্রস্তুত।

প্রিয়া রামানির বিরুদ্ধে মামলা করা ছাড়াও মি আকবর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা অন্য মহিলাদের বিরুদ্ধেও মামলা করার হুমকি দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন যে তিনি পদত্যাগ করবেন না। সোমবার বিদেশ থেকে ফেরার পর মি আকবর সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে জানান, যৌন হয়রানির এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। নিউ দিল্লির পাতিয়ালা হাউস আদালতে মামলা করলেন আকবর।

মহাত্মা গান্ধির জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নাইজেরিয়া গিয়েছিলেন আকবর। আর সেই সময়ে ৪ অক্টোবর সাংবাদিক প্রিয়া রামানি টুইটারে প্রথম অভিযোগ করেন।

পরে প্রেরণা সিং বিন্দ্রা, ঘাজালা ওয়াহাব, সুতপা পাল, অঞ্জু ভারতী, সুপর্ণা শর্মা, সুষমা রাহা, মালিনী ভূপ্তা, কণিকা গহলত, কাদম্বরী এম ওয়াদেও অভিযোগ করেছেন। মহিলা সাংবাদিকদের অভিযোগ নানা ভাবে হেনস্থা করতেন দ্য টেলিগ্রাফ বা এশিয়ান এজের মতো সংবাদপত্রের মাথা হিসেবে কাজ করা আকবর।

এবার আদালতেই ফয়সালা হবে আকবরের বিরুদ্ধে ওঠা সত্য না মিথ্যা। শেষ পর্যন্ত #MeToo আন্দোলনের ফয়সালা হবে নিউ দিল্লির পাতিয়ালা হাউস আদালতেই।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন