The News বাংলা, কলকাতা: বড়সড় ধাক্কার মধ্যে পড়তে চলেছে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। প্রযোজক-পরিচালকরা টাকা আটকে রাখার জন্য বন্ধ হতে চলেছে ৯০ বছরের পুরনো ‘নিউ কর্নওয়ালিস এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানি।
টালিগঞ্জের এই কোম্পানির বর্তমান মালিকরা প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই কোম্পানি বন্ধ করে দেবার। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর অনুযায়ী, বিভিন্ন প্রযোজক এর কাছে প্রচুর পরিমানে অনাদায়ী টাকা পরে আছে এই কোম্পানিটির। এর ফলে কর্মীদের মাইনে দিতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। এমনকি এই প্রথমবার, পুজোর বোনাস পান নি কর্মীরা।
৯০ বছরের পুরনো কলকাতার টলিউড ইন্ডাস্ট্রি। আর সেই একই সাথে যাত্রা শুরু করেছিল ‘নিউ কর্নওয়ালিস এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানি। সিনেমা ও সিরিয়াল শুটিংয়ের যাবতীয় আসবাবপত্র থেকে শুরু করে, ড্রেস, পেন্টিং ভাড়া পাবার একমাত্র জায়গা ছিল এই কোম্পানি।
আরও পড়ুনঃ বয়সে এক যুগের ফারাকে বিয়ের পিঁড়িতে মালাইকা অর্জুন
কালের সাথে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অনেক পরিবর্তন হলেও একই ভাবে মনোপলি ব্যবসা করে চলছিল এই কোম্পানি। বাংলা চলচ্চিত্র সাদা কালো থেকে রঙীন ছবি তে চলে এলেও ‘নিউ কর্নওয়ালিস এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানি একই ভাবে একচ্ছত্র আধিপত্য সৃষ্টি করে রেখেছিল গোটা টলিউডে।
গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে এই একটি মাত্র কোম্পানিই এত বছর ধরে সিনেমা ও সিরিয়াল-এর সমস্ত আসবাবপত্র সরবরাহ করে চলছিলো। শুধু চলচ্চিত্র বা ধারাবাহিকই নয়, বাংলা নাট্য জগতে ব্যবহৃত সমস্ত পপ্সও যেত এই কোম্পানি থেকে।
‘সন্ন্যাসী রাজার’ বিখ্যাত চেয়ার থেকে শুরু করে, দাদার কীর্তির পিয়ানো, ‘সতরঞ্জ কে খিলারী’ সিনেমায় ব্যবহৃত বিখ্যাত গোল পাথরের টেবিলটি আজ সংরক্ষিত আছে কোম্পানি অফিসে। ৯০ বছরের বাংলা সিনেমার অনেক ইতিহাস লুকিয়ে আছে ‘নিউ কর্নওয়ালিস এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানির টালিগঞ্জের গোডাউনে।
আরও পড়ুন: বলিউডের যে নায়িকাদের জীবনসঙ্গী ডিভোর্সি পুরুষ
সমস্যার শুরু নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দীর সময় থেকেই। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, টলিউডের বেশ কিছু পরিচালক ও প্রযোজক এই কোম্পানির কয়েক লক্ষ টাকা আটকে রেখেছেন। বারবার বলেও কোন কাজ হচ্ছে না।
এদিকে প্রযোজকদের বক্তব্য ‘নোটবন্দি’ র পর থেকেই বাংলা চলচ্চিত্র জগত ভুগছে চরম আর্থিক সংকটে, তাই তাঁরা ঠিকমতো টাকার যোগান দিতে পারছেন না। নোটবন্দীর পর এত খারাপ অবস্থা হবে তা তাঁরা কল্পনাও করতে পারেন নি।
এই চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দাঁড়িয়ে ৯০ বছরের পুরোনো ‘নিউ কর্নওয়ালিস এক্সচেঞ্জ’ কোম্পানি বন্ধ করে দেবার প্রাথমিক পর্যায়ে ভাবনা চিন্তা শুরু করেছে মালিকরা। ফলে চরম অসুবিধার মধ্যে পড়ে যাবেন সব সিনেমা ও সিরিয়ালের পরিচালক ও প্রযোজকরা।