জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ রেখেই বেপাত্তা ভারপ্রাপ্ত এজেন্সি

461
Image Source: Google

The New বাংলা, মালদাঃ কাজ অসম্পূর্ন রেখেই কার্যতঃ বেপাত্তা ভারপ্রাপ্ত এজেন্সি। মালদায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ বন্ধ। কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে টোল আদায়।

রাজ্যে সড়ক যোগাযোগের ‘লাইফলাইন’ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই রাস্তার বেহাল দশা আর যানজট নিয়ে বারবারই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়। জাতীয় সড়কে গতি বাড়াতে এর সম্প্রসারন ঘটিয়ে চার লেন করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১১ সালে। একই সঙ্গে মালদা শহরকে যানজট মুক্ত করতে এই জাতীয় সড়কে ‘মালদা বাইপাস’ তৈরীর কাজও শুরু করা হয়। কিন্তু বর্তমানে কাজ অসম্পূর্ন রেখেই কার্যতঃ বেপাত্তা ভারপ্রাপ্ত এজেন্সি।

Image Source: Google

সূত্রের খবর টাকার অভাবে চরম আর্থিক সঙ্কটে আর কাজ এগোচ্ছে না। এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে ফরাক্কা থেকে রায়গঞ্জ জাতীয় সড়ক সম্প্রসারনের কাজ। অনিশ্চিয়তা তৈরী হয়েছে বহূ প্রতিক্ষিত মালদা বাইপাসের ভবিষ্যত নিয়েও। মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা থেকে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ পর্যন্ত ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

আরও পড়ুনঃ ভারতবাসীকে নেতাজীর মৃত্যুদিন জানাল বাংলার পুরসভা

অতি গুরুত্বপূর্ন এই রাস্তাকে চার লেন করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয় ২০১১ সালে। যার বেশীর ভাগটাই মালদা জেলার অংশ। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ পিপিপি মডেলে বেসরকারী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ শুরু করে। কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় হিন্দুস্থান কনষ্ট্রাকসন কোম্পানী লিমিটেড নামে বেসরকারী সংস্থাকে। চুক্তি অনুযায়ী রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার পর টোল আদায়ের অধিকারী বেসরকারী সংস্থা।

Image Source: Google

কিন্তু তিন বছরের কাজ আট বছরেও শেষ করা যায়নি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের মতে এই প্রকল্পের প্রথমেই জটিলতা তৈরী হয় জমি অধিগ্রহন ঘিরে। প্রায় তিন বছরের চেষ্টায় সম্পূর্ন জমি অধিগ্রহন করা গেলেও রাস্তার কাজ সময় মতো এগোনো যায়নি। বরং অযথা দেরীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে প্রকল্পের খরচ। বারবার বাড়ানো হয়েছে সময়সীমা।

আরও পড়ুনঃ ‘পুলিশ হত্যা মামলা’তেও বাংলার পুলিশের মুখে চুনকালি

কিন্তু প্রকল্পের কাজ আজও শেষ হয়নি। ফরাক্কা থেকে রায়গঞ্জের মধ্যে এখনও প্রায় ১১ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারনের কাজ বাকী। যার মধ্যে রয়েছে মালদা বাইপাসের বেশ কিছু অংশ। দুটি সেতু এবং কালিয়াচকের সুজাপুর থেকে যদুপুর পর্যন্ত রাস্তা। ইতিমধ্যেই আর্থিক সঙ্কটের কথা জানিয়ে কাজ থেকে কার্যতঃ হাত গুটিয়ে নিয়েছে ভারপ্রাপ্ত এজেন্সি।

Image Source: Google

ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। বাকী কাজ শেষ না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও ভাবছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। জাতীয় সড়কের কাজ থমকে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসা,বানিজ্য এবং সড়ক পরিবহন। কারন প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই চালু করে দেওয়া হয়েছে টোল আদায়। ইতিমধ্যেই মালদহের বৈষ্ণবনগর এবং গাজোলে দুটি টোল প্লাজা চালু হয়েছে। প্রতিদিন কর দিয়ে চলছে হাজার হাজার যানবাহন।

আরও পড়ুনঃ ‘পহেলে মন্দির, ফির সরকার’ আশঙ্কায় ‘বাবরি মসজিদের’ অযোধ্যা

জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ এবং বেসরকারী সংস্থার দাবি যে পরিমান কাজ হয়েছে তাঁর ভিত্তিতে টোল আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দাবি টোল চালু হয়ে যাওয়ার পর অসম্পূর্ন কাজ শেষ করার উদ্যোগে ভাটা পড়েছে। জাতীয় সড়কের বেশ কিছু এলাকায় কাজ না হওয়ায় মালপত্র পরিবহন এবং যাত্রীবাহি যানবাহন চলাচলে প্রতিদিনই চরম অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে বলে দাবি জেলার ব্যবসায়ীদের।

Image Source: Google

বারবার জানিয়েও কাজ না হওয়ায় টোল বয়কটের হুমকি দিয়েছে মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্স। জাতীয় সড়কের মালদা বাইপাসের কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও শহরের মধ্যে দিয়েই চলছে দুরপাল্লার গাড়ি। ফলে প্রতিদিনই তৈরী হচ্ছে ব্যাপক যানজট। অসম্পূর্ন মালদা বাইপাস চলাচলের জন্য নিরাপদ নয়, বলে সর্তকীকরন বোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনঃ ‘বাঘের সঙ্গে অভিনয় করাটাই ছিল জীবনের সেরা চ্যালেঞ্জ’

তবুও যানজট এড়াতে ঝুঁকি নিয়েই এই বাইপাস ধরেই অনেকেই গাড়ি ছোটাচ্ছেন। এই অবস্থায় অবিলম্বে বাইপাস চালুর দাবি করেছে সাধারন মানুষ। জাতীয় সড়কের কাজ থমকে যাওয়ার পিছনে প্রধান কারন হিসেবে উঠে এসেছে ভারপ্রাপ্ত এজেন্সির আর্থিক সঙ্কট। জানা গিয়েছে সঙ্কটের জেরে ইতিমধ্যেই ওই সংস্থা কর্মী এবং আধিকারিকদের বেতন পর্যন্ত মেটাতে পারেনি।

আরও পড়ুনঃ মার্চে বন্ধ দেশের অর্ধেক এটিএম কি মোদীর নোটবন্দীর কুফল

শুধু তাই নয়, প্রায় ৩২ জন ঠিকাদার ওই সংস্থার অধীনে জাতীয় সড়কের কাজ করেও টাকা পাননি। ইতিমধ্যে ঠিকাদারদেরও কোটি কোটি টাকার বিল বকেয়া পড়েছে। এই অবস্থায় ঠিকাদাররাও আর প্রকল্পে কাজ করতে চাইছেন না। ফলে বিশ বাঁও জলে জাতীয় সড়কের কাজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন