‘ভয়ঙ্কর কাণ্ড’ শিক্ষক নিয়োগে, টাকা নিয়ে বাংলাদেশিদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এবার শিক্ষক নিয়োগ-দুর্নীতি কাণ্ডে, বিস্ফোরক দাবি করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। টাকা নিয়ে বাংলাদেশিদের চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে! চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআই-য়ের। পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ প্রসন্ন রায়কে জেরা করে, এক রহস্যময় বাংলাদেশি ‘মিডলম্যান’-এর কথা জানতে পেরেছে সিবিআই। সেখান থেকেই মিলেছে, এই চমকপ্রদ তথ্য।
সিবিআই-য়ের দাবি, প্রসন্নর ‘হাতযশে’ অবৈধভাবে সীমান্ত পেরনো অনেক বাংলাদেশি যুবক-যুবতী, ভারতীয় সেজে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকের ও গ্রুপ ডি চাকরি করছে। চাকরির পরীক্ষার ধারে-কাছে না গিয়েই, এই ‘কৃতিত্ব’ অর্জন করেছে তারা। এর জন্য ওই অনুপ্রবেশকারীদের কাছ থেকে, ২০-২৫ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। এভাবে যারা চাকরি পেয়েছে, তাদের নামের তালিকা তৈরি করছেন তদন্তকারীরা। সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হবে বলে, সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন; মমতার ‘উপকারি’ কেষ্টর পরিবার ও ঘনিষ্ঠদের ১৬১টি সম্পত্তি, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে
সিবিআইয়ের দাবি, বহু বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীকে, অবৈধভাবে রাজ্যের স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়েছে শুধুই টাকার বিনিময়ে। বাংলাদেশি-দের এপারে এনে, চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল ‘বিশ্বাস’ নামে বাংলাদেশি মিডলম্যানের, যে প্রসন্নর অন্যতম সহযোগী। বাংলাদেশ ও ভারত, দু’দেশেরই পাসপোর্ট আছে তার। প্রসন্ন এবং বিশ্বাস রাজারহাট-নিউটাউন এলাকায়, একই আবাসনে থাকত।
প্রসন্নর হোয়াটসঅ্যাপ-চ্যাট ও সোশ্যাল-মিডিয়া ট্র্যাক করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, এই ‘বিশ্বাস’ বাংলাদেশি-দের নির্বাচিত করে, অনুপ্রবেশ করানোর দায়িত্বে ছিল। বাংলাদেশে যারা অর্থের বিনিময়ে ভারতের স্কুলে চাকরিতে আগ্রহ দেখাত, দালালের মাধ্যমে তাদের সীমান্ত-পার করিয়ে নিয়ে আসা হত। তাদের এনে তোলা হত, রাজারহাট-নিউটাউনের একটি ফ্ল্যাটে। সব ব্যবস্থা করে দিত প্রসন্ন।
অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশিদের ‘ভারতীয়’ সাজাতে, যাবতীয় শংসাপত্র ও আধার-ভোটার কার্ড তৈরি করে দেওয়া হত। এরপর তাদের গ্রুপ-ডি, প্রাইমারি-টেট পরীক্ষার ফর্ম পূরণ করান হত। প্রসন্নর সল্টলেকের অফিসে গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে, তাদের নামের তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হত ‘যথাস্থানে’। প্রসন্ন এভাবে যতজনের জন্য সুপারিশ করেছিলেন, তারা সকলেই চাকরি পেয়েছে বলে সিবিআই জানতে পেরেছে।
দেশ ও পরিচয় পাল্টে এভাবে সরকারি চাকরি পাওয়ার ঘটনায়, তদন্তকারীরাও রীতিমতো বিস্মিত। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবীদের বক্তব্য, ‘তাঁদের মক্কেলকে জোর করে এই সব বলিয়ে নেওয়া হচ্ছে’।