সময় দুপুর ১টা। ১১টা থেকেই ছাত্র ছাত্রীদের বসিয়ে রাখা কাঠফাটা রোদে। বিষয় বসে আঁকো প্রতিযোগিতা। আর মন্ত্রীর ইচ্ছে গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম তোলা। ব্যাস, আর কি! দুপুরের রোদে, গরমে পড়ুয়াদের খোলা আকাশের নিচে বসিয়ে চলল রেকর্ড গড়ার খেলা। আর মন্ত্রী নিজের সঙ্গী সাথীদের নিয়ে দেখলেন রেকর্ড গড়ার সেই খেলা। অবশ্যই তাঁদের জন্য ছিল ছাউনি, রোদ থেকে বাঁচার জন্য।
আরও পড়ুনঃ Exclusive কংগ্রেস ছেড়ে মমতার হাত ধরলেন মৌসম বেনজির নূর
একসাথে এক মঞ্চে বসে অঙ্কন প্রতিযোগিতা। এত বড় মঞ্চ বিশ্বের আর কোথাও নাকি নেই, বলে দাবী করে এই প্রতিযোগিতাটিকে গিনেস বুকে নাম তোলার জন্য ব্যাকুল উত্তরবঙ্গ উৎসব কমিটি। মন্ত্রী গৌতম দেব জানান, গিনেস বুকে নাম তোলার জন্য ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে ছবি তুলে রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ জওহরলাল নেহেরুর গলায় মালা দিয়ে ৬০ বছর পরেও একঘরে ‘নেহেরুর বউ’
পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানটির একটি ডকুমেন্টেশানও করা হবে বলে জানান তিনি। উত্তরবঙ্গ উৎসবের বসে আঁকো প্রতিযোগিতা পৃথিবীর মধ্যে সর্ববৃহৎ, দাবী মন্ত্রী গৌতম দেবের।
আরও পড়ুনঃ আম দরবারে প্রকাশ্যে মহিলার ওড়না ধরে টান কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রীর
সোমবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে উত্তরবঙ্গ উৎসবের অঙ্গ হিসেবে বসে আঁকো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। শিলিগুড়ি সহ পার্শবর্তী বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক স্কুলের প্রায় ১৫ হাজার পড়ুয়াদের নিয়ে চারটি গ্রুপে ভাগ করে আয়োজিত হয় বসে আঁকো প্রতিযোগিতা।
আরও পড়ুনঃ ২৪ ঘন্টায় এসএসসির রেজাল্ট প্রকাশ না হলে সচিবকে জেলে ভরার হুঁশিয়ারি বিচারপতির
বেলা ১টা থেকে প্রতিযোগিতা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনেক স্কুলের পড়ুয়াদের দু ঘন্টা আগেই নিয়ে আসা হয়। অনেক স্কুলের পড়ুয়ারা আবার ১টার সময় এসে পৌঁছাতে পারে নি। সরকারী ও বেসরকারী বাসের পাশাপাশি স্কুল বাসগুলো ভর্তি করে শহরের বুকে নিয়ে আসা ও যাওয়ার সময় শিলিগুড়ি শহর এক প্রকার অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুনঃ মাঠ দিল না রাজ্য, মোদীর সভা ও হেলিকপ্টারের জন্য ফসল ত্যাগ শিক্ষকের
এদিকে কাঠফাটা রোদে কচি কচি ছেলে মেয়েদের মুখ প্রায় ঝলসে যাওয়ার উপক্রম। অবশ্য মন্ত্রীর মতে, এর ফলে বাচ্চাদের শরীরে ভিটামিন ডি তৈরী হয়। তবে প্রতি বছরই রোদের তাপে, গরমে, ভিড়ে ও চাপাচাপিতে পড়ুয়াদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। সোমবারও গরমের তাপে বেশ কয়েকজন শিশু অসুস্থ হয়ে পরল। শুধু শিশুরা নয়, অনেক অভিভাবকও অসুস্থ হয়ে পরে রোদে গরমে।
সে ব্যাপারে কোন হেলদোল না রেখেই মন্ত্রীর স্পষ্ট বক্তব্য, কেউ অসুস্থ হলে তার জন্য মেডিকেল টিম রয়েছে। বিভিন্ন হাসপাতাল ও নার্সিং হোমগুলিতে বলা আছে। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপধ্যায়ের চিন্তাভাবনার ফসল উত্তরবঙ্গ উৎসবের এই বসে আঁকো প্রতিযোগিতাটিকে গিনেস বুকে আনতেই হবে।
আরও পড়ুনঃ ভারতের এক ভুলে যাওয়া শহিদ সৈনিকের আজ জন্মদিন
তার জন্য প্রতিবছরই ২০ হাজার প্রতিযোগি নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়। স্কুল পড়ুয়াদের এই প্রতিযোগিতায় আসার জন্য উৎসাহিত করতে তাদের প্রত্যেককে একটি করে সার্টিফিকেট ও মেডেল দেওয়া হয়। এই প্রতিযোগিায় অংশগ্রহনকারীদের চারটে গ্রুপের প্রতি বিভাগের প্রতিযোগিদের মধ্য থেকে ৫০ জন করে মোট ২০০ জন বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে আগামি ১ ফেব্রুয়ারী।
আরও পড়ুনঃ সীমান্তের কাঁটাতার অগ্রাহ্য করে একদিনের জন্য এক হল ভারত বাংলাদেশ
কিন্তু প্রতিযোগিতা নিয়ে প্রশাসনের প্রশংসা করলেও, রোদের মধ্যে বাচ্চাদের বসিয়ে রাখার তীব্র সমালোচনা করেছেন অভিভাবকরা। অভিযোগ, রোদের তাপ থেকে বাঁচতে মন্ত্রীকে নিয়ে উদ্যোক্তারা বসে থাকেন ছাউনির তলায়। আর ছাত্র ছাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয় রোদে।
পরেরবার মন্ত্রীকে নিয়ে উদ্যোক্তারাও ছায়ায় বসে না থেকে, রোদে-গরমে বাচ্চাদের সঙ্গে বসে রেকর্ডের চেষ্টা করুন। এমনটাই চাইছেন অভিভাবকরা। তখনও রেকর্ড গড়ার এই পাগলামি থাকে কিনা সেটাই দেখতে চান তাঁরা।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।