কৃষ্ণা দাস, The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও ‘শচীন’ অধরা। গত মঙ্গলবার কাকভোরে শিলিগুড়ি সাফারি পার্কের এনক্লোজার থেকে বেড়িয়ে পরেছে শচীন নামের চিতা বাঘ। ইলেকট্রিক ফেন্সিং লাগানো সত্বেও গাছ বেয়ে পগারপার চিতা বাঘ শচীন। এরপর থেকে পার্কেরই ভিতরে আনাচে কানাচে খোঁজাখুজির পর, এখনও পর্যন্ত তার দেখা মিললেও ধরা সম্ভব হয় নি চিতাটিকে। একদিকে উদ্বেগ, অন্যদিকে আতঙ্কেই দিন কাটছে পার্ক কর্তৃপক্ষ এর। অন্যদিকে অন্য একটি পুরুষ চিতা বাঘ সৌরভকেও রাখা হয়ে বিশেষ নজরদারিতে।
আরও পড়ুন: নতুন বছরের প্রথম দিনেই চিতা বাঘ দেখতে গিয়ে বড় বিপদের সামনে
গত মঙ্গলবার থেকেই দুটি কুনকি হাতি দিয়ে চিরুনি তল্লাশির পাশাপাশি ১৫টি খাঁচা পাতাও হয়েছে পার্কের তৃণভোজি প্রানীদের বনানঞ্চলে। বুধবার ভোর হতেই ফের পার্ক কতৃপক্ষ সহ স্থানীয় প্রশাসন ও বনদপ্তরের কর্মীরা নেমে পরে শচীনকে খুঁজতে। আনা হয়েছে আরও দুটি কুনকি হাতি। মোট ছটি স্কয়্যাডে ভাগ হয়ে বনকর্মীরা প্রতিটি গাছে, ঝোপেঝাড়ে তল্লাশি চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: শুধুই হ্যাপি নিউ ইয়ার নয়, ১লা জানুয়ারী ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণের কল্পতরু উৎসবও
তার দেখা মিললেও বারবারই লাফিয়ে পালিয়েছে, বলেই পার্ক সুত্রে জানা গেছে। ঠিক কোন অঞ্চলে চিতাবাঘটির অবস্থান রয়েছে তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না তারা। তবে বাছাধনকে পাকড়াও করতে সবরকম ব্যবস্থাই গ্রহন করেছে সাফারি পার্ক। পার্ক সুত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার নতুন কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে।
তার মধ্যে আরও কুনকি হাতি এনে গোটা সাফারি পার্ককে ঘিরে কম্বিং অপারেশনের ধাঁচে অভিযান কিংবা বাঘটির দেখা মিললেই তাকে প্রয়োজনে ঘুমপাড়ানি গুলি দিয়ে কাবু করা হতে পারে। আর তার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা গ্রহন করেছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই পার্কের দুটি কুনকি হাতির পাশাপাশি বুধবার বিকেলে জলদাপাড়া থেকে আরও দুটি কুনকি হাতি আনা হয়েছে। রয়েছে চিকিৎসকদের একটি দলও।
পাশাপাশি শচীনের অন্য এক সঙ্গী সৌরভের ওপরও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাকে ক্লোজ এনক্লোজারে নিয়ে আসা হয়েছে। এদিকে গত মঙ্গলবারের পর বুধবার পর্যটক ও সাধারণের প্রবেশের নিয়মে কিছুটা শিথিল করা হলেও, এদিন পার্কে সাধারণের জন্য সমস্ত রাইড বন্ধ রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ নতুন বছরে বাংলার কৃষকদের জন্য ‘কল্পতরু’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা
পাশাপাশি পায়ে হেঁটে পার্কের যত্রতত্র ঘোরাঘুরির ওপর নিষেধ গতদিনের মতই বহাল রাখছে পার্ক কর্তৃপক্ষ। শুধুমাত্র চালু থাকবে কার সাফারিই। বন্ধ থাকবে এলিফ্যান্ট সাফারিও। এদিকে বাঘটি অন্যকোন তৃণভোজি প্রানীকে ক্ষতি করতে পারে বলে যেমন ভয় রয়েছে পার্ক কর্তৃপক্ষ এর, তেমনই এই ছোটাছুটিতে চিতার নিজেরও ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে তারা। সুতরাং বৃহস্পতিবার শচীনের তল্লাশিতে আরও বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে শিলিগুড়ি সাফারি পার্ক সুত্রে খবর।
এদিকে জু এর তরফ থেকে এক আধিকারিক অসিম চাকি জানিয়েছেন, ‘বুধবার বেলা থেকে সর্বসাধারনের জন্য পার্কের কম্বো সাফারি খুলে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তল্লাশি অভিযানও চালানো হচ্ছে। শুধুমাত্র জু অংশের লেপার্ড সাফারি বন্ধ রাখা হয়েছে। বাকি হরিণ, কুমির, রয়েল বেঙ্গল, পাখিদের অংশটা খোলা রাখা হয়েছে’।
আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনাকে প্রথম অভিনন্দন জানালেন নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তিনি আরও জানান, ‘মোটা দশটা বাস চালানো হচ্ছে। কিন্তু কোন পা-এ হেঁটে নয় সাফারি নয় এখন। সবটাই বাসে করে। তবে চিতাটি এখনও পর্যন্ত পার্কেই রয়েছে। কারণ বেরোবার কোন সম্ভবনাই নেই। তিনি আরও দাবি করেন, এই পার্কে খাবারের কোন অভাব নেই। শুধুমাত্র বন্য প্রানী তার নিজস্ব স্বভাবেই পালাতে চেষ্টা করেছে’।