“রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছে”; ২৫শে বৈশাখ বড় ঘোষণা তৃণমূল নেতার। “বাংলার ছেলেরাই নোবেল চুরি করেছে”; পরিস্কার জানিয়ে দিলেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী। সেই সঙ্গে উনি এও জানিয়ে দেন, “রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছে”।
সোমবার সকালে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারে; তৃণমূলের ব্লক কার্যালয়ে রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। কবির ছবিতে মাল্যদান, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি; ছিল বক্তৃতা পর্ব। অনুষ্ঠানে যোগ দেন; ভাতারের বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী।
রবীন্দ্র-জয়ন্তীতে মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, তৃণমূল বিধায়ক মানগোবিন্দ অধিকারী বলেন; “রবীন্দ্রনাথকে নোবেল দিয়ে অপমান করা হয়েছিল; তাই বাংলার ছেলেরা নোবেল চুরি করেছে। আর সিবিআইও তার কিনারা করতে পারছে না”। এই নিয়ে শুরু হয় জোর বিতর্ক; বিতর্ক শুরু হতেই অবশ্য আত্মপক্ষ সমর্থনে সাফাইও দেন তিনি। তাঁর দাবি, ওই মন্তব্য নিছক মজা করেই নাকি বলেছিলেন।
২০০৪ সালের ২৫ মার্চ সকালে জানা যায়; বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের সংগ্রহশালা থেকে নোবেল পদক চুরি হয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে আরও ৫০টি মূল্যবান জিনিসও চুরি হয়; ছদিন পরেই তদন্তভার নেয় সিবিআই। প্রথম পর্যায়ের তদন্ত চলে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৭ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত। তিন বছর ধরে তদন্তের পর; আর কোনও সূত্র না মেলায় একবছর তদন্তের কোনও কাজই এগোয়নি।
ফের নতুন সূত্র পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করে; ২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালতে ফের তদন্ত শুরু করার আবেদন করে সিবিআই। কিন্তু ২০০৯ সালের আগস্টে, সিবিআই আদালতকে জানায়; তদন্ত এগোচ্ছে না। ফলে তা বন্ধ করার অনুমতি দেওয়া হোক। ২০১০-এর ৫ আগস্ট আদালত অনুমতি দেয়। তদন্ত আর এগোয়নি; উদ্ধারও হয়নি নোবেল।
সিবিআই তরফে, চুরি যাওয়া নোবেল পদক সম্পর্কে তথ্য দিতে পারলে; ১০ লক্ষ টাকার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছিল। সাহায্য চাওয়া হয়েছিল ইন্টারপোল-এর; তবে তাতেও কাজ হয়নি। উদ্ধার হয়নি রবীন্দ্রনাথের ‘চুরি’ যাওয়া নোবেল।
কবিগুরুর জন্মদিনে তাঁর নোবেল নিয়ে তৃণমূল বিধায়কের মন্তব্য; নতুন বিতর্কের জন্ম দিল। ‘বিধায়ক পরোক্ষে নোবেল চুরিকে সমর্থন জানাচ্ছেন’; অভিযোগ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। “রবি ঠাকুরের চুরি যাওয়া নোবেল সিবিআই খুঁজে বের করতে পারেনি; তবে বাংলার পুলিশ সেটা খুঁজে বের করবে”, বলেও দাবি জানিয়েছেন বিধায়ক।