ট্যাংরার ট্রাক ভর্তি লোকের আজও শাস্তি হয়নি, অন্যদিকে অল্পের জন্য বেঁচে ফিরে; প্রতিদিন নতুন নতুন নবজাতকের জন্ম দিচ্ছেন ডাক্তার পরিবহ মুখোপাধ্যায়। ২০১৯ সালের জুন মাসে, এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে; র’ণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলকাতার এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। ট্যাংরার বাসিন্দা বছর পঁচাত্তরের মহম্মদ শহিদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায়; তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একদিন পরেই ওই রোগীর মৃত্যু হয়। অভিযোগ, এরপরই চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে; ডাক্তারদের উপর চড়াও হন ৫০-৬০ জনের একটি দল। ট্যাংরা থেকে ২টো ট্রাক ভর্তি লোক এসে; ক্ষমতা দেখায় বিশেষ একটি ধর্মের দুষ্কৃতীরা।
হেলমেটে মুখ ঢেকে, হাতে লাঠিসোটা নিয়ে; এনআরএস হাসপাতালে ঢুকে আ’ক্রমণ করে ওই দু’ষ্কৃতী দল। সেইসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন; ডাক্তার পরিবহ। তাঁর মাথা লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে দুষ্কৃতীরা; সেই আঘাতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পরেন পরিবহ। এনআরএস-এই প্রাথমিক চিকিৎসা হয়; কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করলে; রাতেই মল্লিকবাজারের ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস-এ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে”। মাথায় এমন ভাবে চোট পান যে; করোটি ভেঙে ব্রেনের দিকে ঢুকে যায়।
আরও পড়ুনঃ ঘটা করে শিল্প সম্মেলনই সার, শিল্পে দেশের মধ্যে ‘পিছিয়ে বাংলা’
ডাক্তারদের মারধরের ঘটনায় আহত দুই জুনিয়র ডাক্তারকে; গুরুতর আহত অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করতে হয়। অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন; পরিবহ মুখোপাধ্যায় ও যশ টেকওয়ানি। জুনিয়র চিকিৎসকদের নিগ্রহের প্রতিবাদে; ১২ ঘণ্টা আউটডোর পরিষেবা বন্ধ রাখে রাজ্যের ডক্টর্স ফোরাম।
দুই ট্রাক ভর্তি লোকের, এনআরএস হাসপাতালে ঢুকে ডাক্তার পেটানোর ঘটনায়; প্রবল চাপের মুখে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু আজও এতজন অভিযুক্তদের কোন শাস্তি হয়নি। এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু যারা এই ঘটনা ঘটাচ্ছে; তাদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়য় না। এনআরএস থেকে আন্দোলনের ঢেউ আছড়ে পড়ে; কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, আরজিকর, এসএসকেএম হাসপাতালেও। সব হাসপাতালগুলিতে; একদিন আউটডোর পরিষেবা বন্ধ ছিল।
ইনি সেই ডাঃ পরিবহ মুখোপাধ্যায়; যাঁকে ট্যাংরার গুন্ডারা মেরে মাথার খুলি ফুটো করে দিয়েছিল। ডাক্তাররা অসাধ্যসাধন করে ওঁকে বাঁচিয়েছিলেন। এখন তিনি প্রতিদিন নতুন নতুন নবজাতককে; পৃথিবীতে আনছেন, পৃথিবীর আলো দেখাচ্ছেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, সেই জানোয়ার-গুলোর কোন সাজা হয়েছে কি?