প্রথমে মহার্ঘ ভাতা বা ডি এ বাড়ানো আর তারপর প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদ বাড়িয়ে চাকুরিজীবীদের মুখে হাসি ফোটালেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। লোকসভা ভোটের আগে দরাজ হাতে চাকুরিজীবীদের মন পাবার চেষ্টা মোদীর।
মহার্ঘ ভাতা বা ডি এ বাড়ানোর পর ভোটের ঠিক আগে এবার ইপিএফে বা এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে বাড়ল সুদের হার। আগে ইপিএফে ৮.৫৫ শতাংশ সুদ পাওয়া যেত। সেটা বাড়িয়ে করা হল ৮.৬৫ শতাংশ। চলতি আর্থিক বছরেই সুদের বর্ধিত হার কার্যকর করা হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৬ কোটি চাকরিজীবী উপকৃত হবেন। বৃহস্পতিবার ইপিএফও-র ট্রাস্টি বোর্ডের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। তিন বছর বাদে ফের পিএফে সুদের হার বাড়ানো হল।
এ দিন বোর্ড মিটিং শেষ হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গাঙ্গোয়ার বলেন, “প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা টাকার উপর সুদের হার বাড়িয়ে ৮.৬৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইপিএফও কর্তৃপক্ষ”। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে এমপ্লয়িজ পেনশন স্কিমের (ইপিএস) আওতায় চাকুরিজীবীদের ন্যূন্যতম পেনশন বাড়ানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এখনও পর্যন্ত সেই ব্যাপারে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বোর্ডের পরবর্তী বৈঠকে এই বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
গত মঙ্গলবারই লোকসভা ভোটের আগেই দেশ জুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের মুখে চওড়া হাসি ফুটেছিল। বেড়েছিল ডি এ। বর্তমানে ৯ শতাংশ হারে ডি এ পান কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা। তার সঙ্গে যুক্ত হতে চলেছে আর ৩ শতাংশ। ফলে তাঁদের প্রাপ্য মহার্ঘ ভাতা বেড়ে দাঁড়াল ১২ শতাংশ। এই বর্ধিত ডি এ এর সুবিধা পাবেন অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় কর্মীরাও। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই এই বর্ধিত ডি এ কার্যকর করা হবে।
ডি এ এর পর এবার বাড়ল প্রভিডেন্ট ফান্ডে সুদ। ২০১৭ সাল থেকে পিএফে সুদের হার ছিল ৮.৫৫ শতাংশ। তার আগে ২০১৬-১৭ সালের আর্থিক বছরে সুদের হার ছিল ৮.৬৫ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে তা বাড়িয়ে সুদের হার ফের সেই ৮.৬৫ শতাংশই করা হল। সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে এটা সুখবর চাকুরিজীবীদের জন্য। এই সিদ্ধান্তে প্রায় ৬ কোটি ইপিএফও গ্রাহক উপকৃত হবেন। এর আগে ২০১৬ অর্থবর্ষে শেষবার প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের হার বাড়ানো হয়েছিল।
প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদের হার নির্ধারণের দায়িত্বে রয়েছে দ্য সেন্ট্রাল বোর্ড অব ট্রাস্টিজ (সিবিটি)। সিবিটি-র নেতৃত্বে আবার রয়েছে কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রক। ইপিএফও-র হয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেয় তারাই। কোন অর্থবর্ষে প্রভিডেন্ট ফান্ডে জমা টাকার হার কত হবে, তা ঠিক করার দায়িত্বও তাদের। সিবিটির অনুমোদনের পরই বিষয়টি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকে কাছে যায়। যার পর জমা টাকার উপর নয়া সুদের হার কার্যকর হয়। সেই অনুযায়ী সরাসরি টাকা ঢুকে যায় গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে।