The News বাংলা: কর্নাটকে তিন লোকসভা এবং দুই বিধানসভা নির্বাচনে ফের ল্যাজেগোবরে বিজেপি। শিভামোজ্ঞা, বাল্লারি এবং মান্ড্য লোকসভা কেন্দ্র ও ঝামখান্ডি এবং রামনগড় বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়জয়কার কংগ্রেস-জেডিএস জোটের। ৫ টির মধ্যে ৪ আসনেই হার বিজেপির। বলা যায় কর্ণাটক সেমিফাইনালে রাহুলের কাছে হার মোদীর।
কর্ণাটকে জোট সরকার চালানো কংগ্রেস এবং জেডিএস এই পাঁচটি আসনেও জোট করেই লড়েছে। অন্যদিকে লড়ছে মোদী-অমিত শাহের বিজেপি। এই উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকাও ছিল বেশ চমকপ্রদ। তিনজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নিকট স্ত্রী ও আত্মীয়রা লড়াইতে ছিলেন।
আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দেশের পাঁচটি রাজ্যে বিধানসভা ভোট হবে। তাছাড়া লোকসভা নির্বাচনও এগিয়ে আসছে। এই অবস্থায় এই পাঁচ কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল কোনদিকে যায় তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই যুদ্ধে ৪-১ জিতলেন রাহুল গান্ধী।
আরও পড়ুনঃ উপনির্বাচনে হেরে বিধানসভা ও লোকসভার আগে চিন্তায় বিজেপি
মনে করা হয়েছে, রাহুল গান্ধীর মোদীকে জড়িয়ে ধরে গান্ধীগিরি কাজ করেছে এই ফলে। রাফায়েল নিয়ে মোদীকে রাহুলের আক্রমণও ভোটারদের মনে ধরেছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাফায়েল চুক্তি ও গোপনীয়তা যে বিজেপি কে অদূর ভবিষ্যতে সব ভোটেই ভোগাবে এটা কর্ণাটকের ফলাফলে পরিষ্কার।
মে মাসেই বিভিন্ন রাজ্যের উপনির্বাচনে হেরেছে বিজেপি। দেশের ৪টি লোকসভা ও ১০টি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফলাফল বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়েছিল৷ উপনির্বাচনে যে চারটি লোকসভার আসনে নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসে তার মধ্যে তিনটি আসনই বিজেপির দখলে ছিল।
আর এই তিনটি আসনের মধ্যে মহারাষ্ট্রের পালঘর লোকসভা কেন্দ্রই শুধুমাত্র নিজেদের হাতে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি ৷ উত্তরপ্রদেশের কৈরানা ও মহারাষ্ট্রের ভান্ডারা-গোন্ডিয়া লোকসভা হাতছাড়া করে বিজেপি ৷
আরও পড়ুনঃ মোদীর ভারতে সর্দার প্যাটেলের রেকর্ড ভাঙবে ছত্রপতি শিবাজীর মূর্তি
এছাড়াও উত্তরপ্রদেশের নূরপুর বিধানসভা কেন্দ্র দখলে ছিল বিজেপির, সেখানেও জয়ী হয় সমাজবাদী পার্টি ৷ পঞ্জাবের শাহকোট বিধানসভা কেন্দ্র দখলে ছিল শিরোমনি অকালি দল-এর, উপনির্বাচনে জয়ী কংগ্রেস। কংগ্রেস নিজের আসন ধরে রাখতে পারলেও, পারে নি বিজেপি।
নিঃসন্দেহেই বলা যেতে পারে যে মের এই ফলাফলে আরও একবার একবার বিজেপি বিরোধী জোট বেশ খানিকটা অক্সিজেন পেয়েছিল। সেবারও মোদীর প্রচারে কোন কাজ হয় নি। মানুষ ভোট দিয়েছিল রাহুলের প্রচারে ভরসা রেখে, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
মঙ্গলবার কর্ণাটক উপনির্বাচনে বিজেপির দুর্গ বল্লরি লোকসভা ছিনিয়ে নেয় কংগ্রেস। বল্লারি কেন্দ্রে প্রথম থেকেই বিজেপি প্রার্থীর থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী ভিএস উগরাপ্পা। মান্ড লোকসভা আসনেও হেরেছে বিজেপি। এই আসনে জিতেছে সেই জেডিএস।
আরও পড়ুনঃ নরেন্দ্র মোদীর গুজরাটে আর পড়াবেন না ‘দেশদ্রোহী’ প্রফেসর
ঝামখান্ডি বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী কুলকার্নি শ্রীকান্ত সুবারাও কে হারিয়ে দেন কংগ্রেস প্রার্থী আনন্দ সিদ্দু ন্যামগৌড়া। রামনগর বিধানসভা আসনে জিতেছে জেডিএস। দুটি বিধানসভা আসনই ধরে রাখল কংগ্রেস ও জেডিএস।
একমাত্র, শিভামোজ্ঞা লোকসভা কেন্দ্রে মুখরক্ষা হয়েছে বিজেপির। শিভামোজ্ঞা লোকসভা কেন্দ্রে জিতেছেন বিজেপি প্রার্থী, বিএস -পুত্র রাঘবেন্দ্র। কংগ্রেস প্রার্থীকে হারান তিনি। এই আসনটি ধরে রাখতে পেরেছে বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ সাধারণ মানুষের জীবনের দাম এখন কুকুর ছাগলের চেয়েও কম
বিজেপি নিজেদের জেতা আসন হারল আর কংগ্রেস-জেডিএস জোট নিজেদের আসন ধরে রাখতে সমর্থ হল। উল্টে বিজেপির গড় বল্লরি লোকসভা ছিনিয়ে নিল কংগ্রেস। মোদীর প্রচারেও আর কোন কাজ হচ্ছে না তা বিভিন্ন উপনির্বাচনে পরিষ্কার, বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
উল্টোদিকে, সবটাই রাহুল গান্ধীর প্রচারের কৃতিত্ব বলছেন কংগ্রেস নেতারা। মে মাসের পর নভেম্বরের লড়াইয়েও জিত কংগ্রেস ও রাহুলের। কর্ণাটকের লড়াইয়ে রাহুল ৪ আর মোদী ১।
এর ফলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে হতে চলা ৫ রাজ্যে বিধানসভা ভোট ও এপ্রিল-মে তে লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি যে চরম চিন্তায় পড়ল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।