The News বাংলা, কলকাতাঃ পাকিস্তান থেকে টাকা আসছে বাংলায়। রাজ্যের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পরছে কোটি কোটি টাকা। হঠাৎ করে বাংলায় কেন পাকিস্তান থেকে টাকা আসছে? এই প্রশ্ন নিয়েই এখন ব্যস্ত প্রশাসন। কোন জঙ্গি কার্যকলাপ ঘটাবার জন্যই কি কোটি কোটি টাকা পাঠান হচ্ছে?
পাকিস্তান থেকে রাজ্যের ৪৫টির বেশি অ্যাকাউন্টে জঙ্গিদের সাহায্যে ৫৪ কোটি টাকারও বেশি জমা হয়েছে বলেই জানা গেছে। বিভিন্ন লোকের নামে অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে ওই টাকা জমা করা হয়েছে। এই চক্রের সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানার পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ দেশের সব গোয়েন্দাদের টপকে সেরা লালবাজারের অফিসার
ধৃতদের সকলেরই বাড়ি বিহারের সিওয়ান জেলায়। তারা কলকাতা সংলগ্ন জেলা, হাওড়া স্টেশন, কলকাতা শহরতলি, দমদম ও মধ্য কলকাতার রাজাবাজার এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকত। বিভিন্ন লোকজনকে কমিশনের মাধ্যমে তারা ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খোলাত।
তারপর তাদের এটিএম কার্ড ও পিন নম্বর তারাই নিয়ে নিত। এরপর ওই অ্যাকাউন্ট গুলিতে প্রতিবারই ৫০ হাজার টাকার নীচে জমা পড়ত। সেই টাকা একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে তুলে দেওয়া হত।
আরও পড়ুনঃ হাওড়া থেকে উদ্ধার বিলুপ্ত প্রজাতির প্যাঙ্গলিন
কার হাতে টাকা দেওয়া হবে, তা পাকিস্তান থেকে ওই এজেন্টদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে নির্দিষ্ট কোড দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হত। ওই কোড মিলিয়েই এজেন্টরা টাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তির হাতে তুলে দিত। এভাবেই গত কয়েক মাস ধরে সক্রিয় ছিল ওই চক্র। এমনটাই পুলিশ সুত্রে খবর।
কিছুদিন আগে হাওড়ার গোলাবাড়ি থানা এলাকায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ৬ লক্ষ ৩০ হাজার টাকার চেক জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে গোলাবাড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তারপর এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ এই আন্তজার্তিক চক্রের হদিশ পায়। ঘটনার প্রাথমিক দিকে বেশ অবাকই হয় পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ মেঝেতে খেলছে ভাইবোন, মাথার উপর ঝুলছে বাবা মা
ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ৩০টি এটিএম কার্ড-সহ প্রায় সাত লক্ষ টাকা। কিন্তু ওই টাকা কারা পাঠাত, এর পিছনে কোনও হাওলা-চক্র আছে কি না বা ওই টাকা ঘুরপথে জঙ্গিদের কাছে যেত কি না, তা এখনও জানা যায়নি।
তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, এই চক্রের শিকড় রয়েছে অনেক গভীরে। কাদের, কোথাকার অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা পাঠানো হত, তা জানতে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
আরও পড়ুনঃ কোচবিহারে ঢোকার আগেই নাইন এমএম পিস্তল সহ গ্রেফতার ছয়
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার তন্ময় রায়চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমের কাছে জানিয়েছেন, এই চক্রের শেকড় অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি জানান, গোলাবাড়ি থানা ও হাওড়া সিটি পুলিসের গোয়েন্দা বিভাগ যৌথভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও তিনি জানান।
ঘটনার দিকে নজর রেখেছে সিআইডি ও। কেন পাকিস্তান থেকে এ রাজ্যে টাকা পাঠান হচ্ছে সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ধৃতদের প্রাথমিক জেরা করে সন্তুষ্ট নয় গোয়েন্দারা। তবে, ধৃতরাও পুরো ঘটনা বা টাকা পাঠানর কারণ কতটা জানেন, সেটা নিয়েই সন্দিহান তারা। তদন্ত চলছে। দেখা হচ্ছে কেন পাকিস্তান থেকে টাকা আসছে বাংলায়।