নাবালিকাকে বিয়ে করে পুলিশের ভয়ে গা ঢাকা দিলেন কাউন্সিলর। ঘটনাটি ঘটেছে কাটোয়ার দাঁইহাট পুরসভা এলাকায়। কাউন্সিলর এর মত দায়িত্বপ্রাপ্ত পদে থেকেও এই ধরনের অপরাধ কি করে করলেন ওই কাউন্সিলর, উঠেছে প্রশ্ন।
জানা গেছে, দাঁইহাট পুরসভার ৩৮ বছরের সিপিএম কাউন্সিলর কার্তিক মণ্ডল স্থানীয় ঠাকুরতলায় বিয়ে করেন এক নাবালিকাকে। নাবালিকা কণে এবছরই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। এই বিয়ের খবর পেয়ে জেলা চাইল্ড লাইনের আধিকারিক কাটোয়া ব্লক প্রশাসনের বেশ কিছু কর্তা ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কাটোয়ার বেরা গ্রামের সিদ্ধেশ্বরী তলায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেন ওই নাবালিকা কণেকে। তবে অভিযুক্ত কাউন্সিলর এই অভিযানের খবর পেয়ে গা ঢাকা দেন।
নাবালিকা কণের দাবি, কার্তিক মণ্ডলের মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাই কার্যত বাধ্য হয়েই তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলরের এই কাজে ক্ষুব্ধ স্থানিয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, কাউন্সিলর নিজেই যদি আইন ভাঙেন তা হলে তাঁর বিরুদ্ধে কেন যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। পুলিশ অভিযুক্ত কাউন্সিলরের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে।
এদিকে নাবালিকাকে বিয়ে করে পুলিশের গ্রেফতারের আশঙ্কায় বাড়ি থেকে ততক্ষণে গা ঢাকা দিয়েছেন পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর। তাঁর কাছে আগেই খবর পৌঁছে যায় যে এই বাল্যবিবাহের খবর প্রশাসনিক মহলে চাউর হয়ে গেছে। বিয়ের খবর পেয়ে জেলা চাইল্ড লাইনের আধিকারিক কাটোয়া ব্লক প্রশাসন পুলিশকে সঙ্গে করে সেদিনই সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে তল্লাশি করতে আসবেন। এবং তাঁর সদ্য বিবাহিত নাবালিকা বধূকে উদ্ধার করে নিয়ে যাবে। যদিও নাবালিকা বধূ তাঁর স্বামীর পক্ষ নিয়েই কথা বলেছেন, তাঁর দাবি শাশুড়ি মা অসুস্থ বলেই তাড়াতাড়ি বিয়ে করতে হয়েছে স্বামীকে।
সদ্য মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া ওই নাবালিকাকে মঙ্গলবার দুপুরেই স্থানীয় ঠাকুরতলায় বিয়ে করে দাঁইহাট পুরসভার ১৪ নং ওয়ার্ডের সিপিএমের কাউন্সিলর কার্তিক মণ্ডল। রাতেই গা ঢাকা দেয় ওই কাউন্সিলর। নাবালিকা যাই বলুক না কেন কাউন্সিলরের এহেন আচরণে ক্ষুব্ধ হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। সাধারন লোকজন প্রশ্ন তোলেন, কাউন্সিলর নিজেই যদি আইন ভাঙেন তাহলে সাধারন জনগন এর মনে কি প্রভাব পরবে বাল্যবিবাহ নিয়ে। কি বা শিখবে এলাকার বাসিন্দারা যদি স্বয়ং প্রশাসনের কর্তারা নাবালিকা বিয়ে রোধের প্রচার না করে নিজেই এক নাবালিকাকে বিয়ে করেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী মেয়ের বয়েস আঠারোর কম হলে তাঁর সাথে সহবাস ধর্ষণ হিসাবে গণ্য হবে। কিন্তু মজার কথা হল বিয়েটা হয়ে গেলে সেটা বৈধ থাকে। যদিও ভারতীয় আইন অনুসারে বলা আছে ১৮ বছরের নিচে বয়েস হলে তাকে শিশু বা নাবালক নাবালিকা হিসাবেই ধরা হবে। তাই তারা বিয়ে করতে পারবে না, কোন চুক্তি সই বা ভোটাধিকারও থাকে না তাদের। পূর্ব বর্ধমান জেলা চাইল্ড লাইনের আধিকারিক অরূপ সাহা জানিয়েছেন কাটোয়া থানার পুলিশ অভিযুক্ত কাউন্সিলরকে খুঁজছে।