বারাসাত কেন্দ্রের বিজেপি ভোট প্রার্থী নিজেই কোনদিন ভোট দেননি ভারতে

552
বারাসাত কেন্দ্রের বিজেপি ভোট প্রার্থী নিজেই কোনদিন ভোট দেননি ভারতে/The News বাংলা
বারাসাত কেন্দ্রের বিজেপি ভোট প্রার্থী নিজেই কোনদিন ভোট দেননি ভারতে/The News বাংলা

মৃণাল কান্তি দেবনাথ। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বারাসাত কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী। এতে কোনও চমক নেই। কোনও দল যাকে মনোনয়ন দেবে তিনি নির্বাচনে সেই দলের হয়ে লড়তেই পারেন।

আরও পড়ুনঃ সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে ভোট বন্ধ করে দেবার হুমকি লকেটের

কিন্তু চমক এখানে যে মৃণালবাবু ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে এবারই প্রথম ভোট দেবেন! শুনলে আশ্চর্য লাগলেও এটাই সত্যি যে একটি রাজনৈতিক দলের একজন প্রার্থী প্রথমবার প্রার্থী হয়ে তারপর তাঁর ভোটাধিকার প্রথমবার প্রয়োগ করবেন।

আরও পড়ুনঃ কংগ্রেস নির্বাচনী ইস্তাহারকে প্রো জিহাদ ও অ্যান্টি ইন্ডিয়া বলে আক্রমণ কোয়েনা মিত্রের

কেন এমন জানতে চাইলে তিনি বলেন যে আজ থেকে ৫০ বছর আগে তিনি ও তাঁর বাবা যখন বুথে গিয়ে ভোট দিতে গিয়েছিলেন তখন কিছু দুষ্কৃতি তাঁদের বুথ থেকে বল প্রয়োগ করে বার করে দিয়েছিল ভোট না দিতে দিয়েই।

আরও পড়ুনঃ ভারতীয়দের বাঁদরের সঙ্গে তুলনা করলেন রাহুলের গুরু পিত্রোদা

তখন ১৯৬৮ সাল। যুক্তফ্রন্টের আমল। তারপর থেকেই নাকি সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে আর কোনোদিন বুথমুখো হননি,কিন্তু আবার কি কারণে দেশের সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ফিরল এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সাধারন জনগনের মনে।

আরও পড়ুনঃ লাইভ ডিবেটে অসহিষ্ণুতা, সঞ্চালক ও বিজেপি নেতার দিকে গ্লাস ছূঁড়লেন কংগ্রেস নেতা

মৃণাল বাবুর কথায়, গণতন্ত্রের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে ভোটে মন না দিয়ে তিনি তাঁর পেশায় মন দেন। ১৯৭৪ সালে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পাস করার পর কয়েক বছর দেঘরিয়ায় একটি ঘর ভাড়া করে প্র‌্যাকটিস শুরু করেন তিনি। এরপর ১৯৮১ সালে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি দেন।

আরও পড়ুনঃ বিরিয়ানি নিয়ে হাতাহাতি কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে, ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

প্রথমে দক্ষিণ আমেরিকা। তারপর লন্ডন। সেখান থেকে সাইকিয়াট্রিক মেডিসিন নিয়ে পড়তে ভিয়েনা যান। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের একটি দ্বীপে সরকারের তরফে স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিচালনার দায়িত্ব পান। তবে ২৭ বছর পরে বছর দশেক আগে দেশে ফিরে আসেন তিনি। দুই সন্তান তাঁদের পরিবার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত।

আরও পড়ুনঃ হিন্দুধর্ম নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে থানায় অভিযোগ দায়ের উর্মিলার বিরুদ্ধে

বর্তমানে হাবরা ও চিনার পার্কে তাঁর দুটি বাড়ি আছে। স্ত্রীর সঙ্গে দেশে ফিরে এসেছিলেন অবসর জীবন কাটাতে। অর্থাৎ, সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি বিতৃষ্ণায় তিনি ১৯৬৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ভোট দেন নি, তারপর ২৭ বছর প্রবাসে ছিলেন, সুতরাং ভোট দেওয়ার কোনও সুযোগ ঘটে নি।

আরও পড়ুনঃ ফাঁকা জনসভার ছবি তুলতে গিয়ে কংগ্রেস সমর্থকদের হাতে প্রহৃত চিত্র সাংবাদিক

তারপর ২০০৮ সালে তো তিনি ফিরে এলেন দেশে। তাও ভোট দেননি কেন? তারও উত্তর মৃণালবাবুর তৈরি। ২০০৮-এ দেশে ফেরার পরে তিনি রাজারহাট এলাকায় ভোটার তালিকায় তাঁর নাম নথিভুক্ত করেন। কিন্তু তারপরেই তিনি তাঁর বন্ধুদের অনুরোধে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে ডাক্তারি করতে চলে যান।

আরও পড়ুনঃ একই মঞ্চে শোভন, বৈশাখী ও সব্যসাচীর উপস্থিতি ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা

পাকাপাকিভাবে পশ্চিমবঙ্গে ফেরেন ২০১৩ সালে। তাই ওই সময়ের মধ্যে তাঁর আর ভোট দেওয়া হয়নি। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভায় ভোট দিলেন না কেন? তখনও কি সেই বিতৃষ্ণা? নাকি তখন আর ভোটার তালিকায় নাম ছিল না?

আরও পড়ুনঃ ভোটের মুখে তৃণমূল সভাপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার অস্ত্র ও কোটি কোটি টাকা

বামেদের কটাক্ষ,গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না নিশ্চয়ই। তৃণমূলের কটাক্ষ, এত বছরে তিনি অনেকবার ভোট দেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু দেননি। অর্থাৎ গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অশ্রদ্ধা রয়েছে। এ ধরনের মানুষ কীভাবে ভোটে দাঁড়ান ! জনগনের প্রশ্ন, নতুন ভোটারদের সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে এবার কি প্রথমবার ভোট দেবেন, মৃণালবাবু?

আরও পড়ুনঃ তিন লাখ কোটি টাকায় বিবাহবিচ্ছেদ

আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন