The News বাংলা, জলপাইগুড়িঃ কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমির ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন অতুল রায়। সরকারী পদে ইস্তফা দিয়েই বিজেপির ‘গনতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’য় যাবার ঘোষণা করলেন কেপিপি সভাপতি।
বিজেপির জনসভায় উপস্থিত থাকলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভর্ৎসনার ভয়ে আগেভাগেই কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমির সহ সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন অতুল রায়। তবে, এখনও পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের স্কুলগুলিতে চালু করা হয়নি কামতাপুরি ভাষায় পঠন-পাঠন, এই অভিযোগ তুলেই তাঁর এই পদত্যাগ বলে জানালেন তিনি।
অতুল রায় এর বক্তব্য, এই পদ থেকে নীতিগত ভাবেই ইস্তাফার সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। কিন্তু সেইসঙ্গে বিজেপির ‘গনতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র সূচনায় আগামী শুক্রবার কোচবিহারে অমিত শাহর সভায় থাকার কথাও ঘোষণা করলেন কামতাপুরি প্রোগ্রেসিভ পার্টি বা কেপিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি অতুল রায়।
আরও পড়ুনঃ ‘বেআইনি মদের টাকা যায় মমতার ভাইপো অভিষেকের বাড়িতে’ কৈলাশ বিজয়বর্গীয়
বুধবার জলপাইগুড়ি প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে তিনি আরও বলেন, তিনি কারোর বিরাগভাজন হতে চান না। কারোর ভালো নজরেও পড়তে চাই না। নীতিগতভাবে এই পদ থেকে তিনি পদত্যাগ করাটাই তাঁর কাছে শ্রেয় বলে মনে হয়েছে। ইতিমধ্যেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর এই ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুনঃ মমতার নির্দেশকে বুড়ো আঙুল, সিন্ডিকেট জুলুমে রাজ্য ছাড়ছেন শিল্পপতি
তাঁর আরও বক্তব্য, গত ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে নীতিগতভাবে ও শর্তসাপেক্ষে কেপিপি বিজেপিকে সমর্থন করেছিল। গত শনিবার তাঁর নেতৃত্বে কেপিপির এক প্রতিনিধিদল দিল্লিতে গিয়েছিল। সেখানে বিজেপির প্রথম সারির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক হয় তাঁদের। সেই বৈঠকে বিজেপি নেতৃত্ব তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, নীতিগতভাবে ২০১৪ সালে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি, তা পূরণ করার জন্যই আগামী শুক্রবার কোচবিহারে অমিত শাহ আসছেন।
অতুল বাবুকে সামনে রেখেই তাঁরা আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনে কামতাপুরি ভাষাকে অষ্টম তপশিলির অন্তর্ভুক্ত করার কথাও ঘোষণা করবেন তিনি। এদিনের এই সাংবাদিক বৈঠকে কেপিপির বিজেপিকে সমর্থনের প্রসঙ্গে অতুল বাবু বলেন,’এই মুহূর্তে আমি এই বিষয়ে কিছু বলব না। বিষয়টি এখনও আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে তোলা হয় নি। যে বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসে নি সেটা নিয়ে আমি নিয়ে কিছু মন্তব্য কবর না। আমরা শীতকালীন অধিবেশনে বিজেপির সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে রয়েছি। তারা প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে কি না জেনে-বুঝে তারপর ভাবব’।
আরও পড়ুনঃ অনুপ্রবেশকারীদের সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে বাংলায় এনআরসি-র দাবি
যেহেতু অতুল রায়কে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় কামতাপুরি ভাষা অ্যাকাডেমির সহ সভাপতি হিসেবে নির্বাচন করেছেন, তাই স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির সভামঞ্চে উপস্থিত থাকলে মুখ্যমন্ত্রী ওই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দিতে পারেন। সেই আশঙ্কাতে নিজে থেকেই তিনি তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। অতুল রায়ের এই ঘোষণার পর এটা স্বাভাবিক ভাবেই স্পষ্ট যে, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের বিজেপির দিকে ঝোঁকার একপ্রকার ইঙ্গিত দিলেন অতুল রায়।