The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ নামেই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, তবে দর্শক প্রায় হয় না বললেই চলে। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। বাংলার দর্শক শূন্য আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব হয় শিলিগুড়িতে।
শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে, কলকাতায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ধারে কাছেও দর্শক পাওয়া যায় না। আক্ষেপ আয়োজক সংস্থার। যদিও কলকাতার পর শিলিগুড়িই বাংলার একমাত্র শহর যেখানে বিভিন্ন ভাষাভাষির মানুষের বসবাস। সংস্কৃতিমনস্ক মানুষেরও অভাব নেই এই শহরে। প্রায় প্রতিটি পরিবারের কচিকাচারা ইংরেজী মাধ্যম স্কুলে পড়াশুনা করছে। শিক্ষিত মানুষেরও ঘাটতি নেই। প্রায় ৩ লক্ষ মানুষের বসবাস এ শহরে। অথচ আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শক হয় হাতে গোনা মাত্র আশি থেকে একশ জনই।
পাশাপাশি চলচ্চিত্র উৎসবে সরকারী সাহায্য সেভাবে না পেলেও, মূলত স্পনসরশিপের অভাবকেই দায়ী করেছেন তাঁরা। সেইসঙ্গে প্রচারের আলোতে না আসার জন্যই দর্শক টানতে অসুবিধে হচ্ছে বলেই মত তাঁদের। এদিকে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে টিকিটের মুল্য ২০০ টাকা হলেও শিলিগুড়িতে তা ৩০ টাকা ও ৪০ টাকাই রাখা হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ তুমি কার ?
অথচ মাল্টিপ্লেক্স সিনেমা হলগুলিতে যেমন তেমন সিনেমা এলেও ৫০০ টাকা খরচ করে হলেও সাধারন মানুষ তা দেখতে ছোটেন, অথচ হাতের সামনে সিনেমা হলে দেশ বিদেশে নামী দামী সিনেমা প্রদর্শিত হলেও দর্শক সংখ্য অতি অল্প। দুঃখ শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের।
সেই আক্ষেপকে সঙ্গ করেই শিলিগুড়ি সিনে সোসাইটি বিগত ১৯ বছর ধরে শিলিগুড়িতে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে আসছে। আর্থিক প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও তাঁরা শিলিগুড়িবাসীদের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব থেকে বঞ্চিত রাখতে পারেন নি। মুষ্টিমেয় সদস্য সংখ্যা নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও এ ধরনের চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করে চলেছেন তাঁরা।
তবে আর্থিক প্রতিকূলতাকে কোনো প্রতিবন্ধকতা বলে তাদের মনেই হত না যদি দর্শকদের সাড়া পাওয়া যেত। শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চের রামকিঙ্কর হলে প্রায় ৭০০টি আসন রয়েছে। তা পুরোপুরি ভর্তি হওয়া তো অনেক দূরের কথা, অর্ধেক সংখ্যক দর্শকেরও দেখা পাওয়া যায় না। যার অন্যতম কারন হিসেবে উন্নত সাউন্ড সিস্টেমের অভাবকেই দায়ী করছেন উদ্যোক্তারা।
তবে এত কিছুর মধ্যেও উনিশতম শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রায় কানায় কানায় ভর্তি হবে দর্শকাসন, বলে আশাবাদী উদ্যোক্তারা। সিনে সোসাইটির সভাপতি সঞ্জীবন দত্ত রায় আক্ষেপ করে বলেন, শিলিগুড়িতে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে দর্শকদের সাড়া অত্যন্ত হতাশাব্যাঞ্জক যা শিলিগুড়ির মত সংস্কৃতি মনস্ক শহরের সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের মাপকাঠিতেও বেশ হতাশজনক।
আরও পড়ুনঃ ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে কাউন্সিলরের ‘বিজ্ঞাপন’, বিক্ষোভে মুখ পুড়ল বাংলার
কলকাতার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পরেই শুরু হচ্ছে শিলিগুড়ি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। সোমবার সন্ধ্যায় অরিন্দম শীলের পরিচালনায় ‘আসছে আবার শবর’ নামে বাংলা ছবি দিয়ে শুরু হচ্ছে এই উৎসব। মুখ্য অতিথি হিসেবে থাকবেন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। উৎসবের উদ্বোধন করবেন ‘আসছে আবার শবর’ ছায়াছবির পরিচালক অরিন্দম শীল। ১০টি দেশের ১৭টি সিনেমা নির্বাচিত হয়েছে এই উৎসবে। ১৯ তারিখ থেকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত শিলিগুড়ির দীনবন্ধু মঞ্চের রামকিঙ্কর হলে সিনেমাগুলি দেখানো হবে।