টানা ৩ সপ্তাহ কেটে গেছে। তবুও টনক নড়ে নি কারোর। ২১ দিন রোদে পুড়ে, জলে ভিজেও আন্দোলন থামায় নি ওরা। কিন্তু ভোটের বাজারে রাজ্য সরকারের তা দেখার সময় কোথায়? বিরোধীরাও ব্যস্ত ভোট নিয়ে। আর রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোটের বাজারে লিখতে এগিয়ে আসছে না বাংলার কোন বড় সংবাদমাধ্যমও। ভোটের আগে পাতার পর পাতা জুড়ে অনেক সরকারি বিজ্ঞাপন চলেছে যে!
কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন বুধবার পা দিল ২১ দিনে। দিন যত গড়াচ্ছে ততই জটিল আকার নিচ্ছে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের অনশন আন্দোলন। আজ একুশ দিনে পড়ল তবু অনশন জট কাটল না। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় অনশনকারীরা। কিন্তু ২১ দিনেও সাড়া মেলেনি ধর্মতলায় টানা ২৫ দিন অনশন আন্দোলন করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
আরও পড়ুনঃ বাম কংগ্রেস বিজেপির আপত্তি নেই, কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কেন মাথাব্যথা শুধু তৃণমূলের
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কলকাতার রাজপথে অনশনে বসেছেন যুবক-যুবতীরা। উল্লেখ, শুরুতে প্রায় ৩৫০ জনকে নিয়ে অনশন শুরু করেছিলেন এসএসসি-র ওই চাকরি প্রার্থীরা। অনশন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক প্রার্থী। গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হওয়ায় গর্ভপাত করতে হয়েছে একজন অনশনকারীর। দুই অন্তঃসত্ত্বাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হসপিটালে ভর্তি করতে হয়েছে ৫৮ জনকে।
অনশনরত মোট ১০০ জনকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বীরভূমের একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত, মুর্শিদাবাদ থেকে আসা একজন ভুগছে রক্ত আমাশায়। এখনও ২০০ জন প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন অবস্থানে বসে। তাঁদের বক্তব্য, “এসব সত্ত্বেও আমাদের লড়াই থামবে না”।
আরও পড়ুনঃ বিরোধী মহিলা প্রার্থীদের ‘মাল’ সম্বোধন করে কুরুচিপূর্ণ আক্রমণ ফিরহাদের
একদিকে রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনের আবহ, অন্যদিকে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে স্কুল সার্ভিস কমিশনের বিরুদ্ধে চাকরিপ্রার্থীদের অনড় অনশন আন্দোলন। ইতিমধ্যে বিভিন্ন বিরোধী রাজনৈতিক দলের কিছু নেতার সমর্থন পেলেও মেলেনি শাসক দলের নিশ্চিন্ত আশ্বাস।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে সন্তুষ্ট নন অনশনকারীরা। চাকরির বিষয়ে মন্ত্রী এখনও কোনও আশ্বাস দেন নি। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। চাকরি নিয়ে কোনও আশ্বাস না পেলে তাঁরা কোনোমতেই অনশন তুলবেন না বলে সিদ্ধান্তে অনড় অনশনকারীরা।
আরও পড়ুনঃ অনুব্রত মন্ডলের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ নির্বাচন কমিশনের
অনশনকারীদের হাতিয়ার তাদের এই অদম্য জেদ। রাতে ঝড়-বৃষ্টিতে ত্রিপল হাতে উঁচিয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় তাদের। তবুও তাদের জেদ অনড়। অনশনকারীদের সাফ কথা, “গাছ ভেঙে পড়ুক। গাড়ি চাপা দিয়ে দিক। মৃত্যুর কোনও পরোয়া নেই। অনশন তো চলবেই। হয় চাকরি, নয় মৃত্যু,”।
কিন্তু কেউ জানে না কবে হবে তাদের সমস্যার সমাধান। আর তাই ২১ দিন কলকাতার রাজপথে বসে বাংলার ভবিষ্যতের শিক্ষক শিক্ষিকারা।
আরও পড়ুনঃ বাবুলকে হারাতে ১ কোটি টাকার কাজের টোপ, বিতর্কিত ঘোষণা মেয়রের
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।