কলকাতাকে ফণীর হাত থেকে বাঁচাল কলকাতা নিজেই, রহস্য গরম

1321
কলকাতাকে ফণীর হাল থেকে বাঁচাল কলকাতা নিজেই/The News বাংলা
কলকাতাকে ফণীর হাল থেকে বাঁচাল কলকাতা নিজেই/The News বাংলা

রক্ষা পেল বাংলা। রক্ষা পেল কলকাতা। বাংলায় গতিহারা ফণী। হুগলি; বর্ধমান; নদিয়া হয়ে ভোরে প্রবেশ করল বাংলাদেশে। আর ফণী ঢুকলই না কলকাতায়।

দক্ষিনবঙ্গে যতটা গতিবেগ থাকার কথা ছিল; তা না থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বয়ে গেল। তবে রাতভর চলল বৃষ্টি। দুপুর পর্যন্ত দক্ষিনবঙ্গের জেলাগুলিতে; বৃষ্টি চলবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। আর কলকাতায় ঢুকলই না ফণী। কিন্তু কেন? কেন কলকাতায় ঢুকল না?

আরও পড়ুনঃ বাংলায় গতিহারা ফণী, হুগলি, বর্ধমান নদিয়া হয়ে ভোরে প্রবেশ করল বাংলাদেশে

আবহাওয়াবিদরা বলছেন; রাতেও এতটা হিট বা গরম ছাড়ে শহর কলকাতা যে সেটা একটা ঘূর্ণিঝড়কেও তার পথ থেকে সরিয়ে দিতে পারে। আর সেটাই হয়েছে ফণীর ক্ষেত্রে। রাত ৯ টার পরেও এতটা হিট ছাড়ে শহর কলকাতা; যে সেটা ফণীর গতিপথকেই পাল্টে দেয়। কলকাতার কানের পাশ দিয়ে খড়গপুর; হুগলী; পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়া হয়ে বাংলাদেশ যায় ঘূর্ণিঝড় ফণী

রাতে বাংলায় ঢুকেই চুপসে যায়; ফণীর ফণা। আর কোন বিপদের আশঙ্কা নেই। নাক ঘেঁষে বেড়িয়ে যায় কলকাতারও। আশঙ্কা অনুসারে দক্ষিণবঙ্গে তেমন প্রভাব ফেলল না ঘূর্ণিঝড়টি। তবে রাতভর বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া চলেছে দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই। আর কলকাতার ত্রিসীমানায় ঢোকেনি ফণী

কলকাতার গরম; দূষণ যা মানুষের সুস্থভাবে বাঁচার পথে প্রধান বাধা; এযাত্রায় বাঁচিয়ে দিল ফণীর হাত থেকে। শাপে বরই হল কলকাতার এমনটাই বলছেন আবহবিদরা। রাতেও কলকাতা এতটা হিট ছাড়ে তাতেই ফণীর গতিপথ সরিয়ে দেয়। কলকাতার আয়তন ২১৬ বর্গ কিলোমিটার; কিন্তু হিট ছাড়ে ৮৩২ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের সমান। দক্ষিণবঙ্গও প্রচুর হিট ছাড়ে। ফলে ক্ষমতা কমিয়ে দেয় ঘূর্ণিঝড় ফণীর। পাল্টে দিল গতিপথ।

আরও পড়ুনঃ কলকাতায় নিউ সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিংয়ের ছাদে ফুটবলটি এখন ফণীর খবর দিচ্ছে

শুক্রবার রাত ১ টার পর; পশ্চিম মেদিনীপুর দিয়ে কলকাতাকে এড়িয়ে দক্ষিণবঙ্গে প্রবেশ করে ঘূর্ণিঝড় ফণী। তবে ততক্ষণে বেশ শক্তি হারায় ফণী। ঘূর্ণিঝড়ের সব থেকে বেশি প্রভাব পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরে। সেখান থেকে ঝড়টি হুগলি; পূর্ব বর্ধমান হয়ে নদিয়ায় প্রবেশ করে। ভোরে বাংলাদেশে ঢুকে যায় ঝড়ের কেন্দ্রটি

ফণীর জেরে সারা রাত নাগাড়ে বৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণবঙ্গ এর সব জেলা জুড়ে। বৃষ্টি হয়েছে ২ মেদিনীপুর; হাওড়া; হুগলি; কলকাতা; পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান; পুরুলিয়া; বাঁকুড়া; বীরভূম; নদিয়া ও দুই ২৪ পরগনায়।

আরও পড়ুনঃ ফনী মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের অগ্রিম বরাদ্দ ১০০০ কোটি টাকা

ফণীর প্রভাবে দিঘা; মন্দারমণি-সহ গোটা উপকূলজুড়ে প্রবল জলোচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে। ঝড়ের দাপট দেখা গিয়েছে সুন্দরবন; কাকদ্বীপ; বকখালি; হলদিয়ার মতো নদী তীরবর্তী এলাকাগুলিতে।

দুই বর্ধমানে; বিশেষ করে পূর্ব বর্ধমানে ও নদিয়ায় তুমুল ঝড় বৃষ্টি হচ্ছে। তবে যেটা ভাবা গিয়েছিল; সেই ঝড়ের গতিবেগ রয়েছে অনেক কম। বিকেলের মধ্যেই সব দুর্যোগ কেটে যাবে; জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বলা যায় এযাত্রায় রক্ষা পেল বাংলা। আর বাংলায় ঢুকেই নির্বিষ হয়ে গেল ফণী

তবে এযাত্রায় কলকাতাকে বাঁচাল শুধুমাত্র কলকাতাই। শাপে বর হল কলকাতার। কলকাতার গরম; দূষণ যা মানুষের সুস্থভাবে বাঁচার পথে প্রধান বাধা; বাঁচিয়ে দিল ফণীর হাত থেকে।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন