The News বাংলা, Exclusive: নামেই কলকাতা ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। মমতা ব্যানার্জীর নাম প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে এই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালকেই বেছে নেওয়া হয়েছে বলেই সবার অভিযোগ। আর, সেই অভিযোগে শিলমোহর পড়ল বুধবার সন্ধ্যায়।
শর্ট ফিল্ম এর নামে মমতা ব্যানার্জীর বিজ্ঞাপন দেখানোয় তুমুল বিক্ষোভ নন্দন জুড়ে। ফিল্ম বয়কট করে বেরিয়ে গেলেন দর্শকরা। ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ দর্শক থেকে পরিচালক থেকে বাংলা ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত সবাই।
এমনিতেই কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল উপলক্ষে নন্দনের চারপাশে মমতার কাট আউট। সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন সিনেমার সঙ্গে যুক্ত মানুষরা। তারপর, বুধবার সন্ধ্যায় যা হল, তাতে মানুষের হাসির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল।
কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রতিবারই কিছু ভালো ও আলাদা রকমের শর্ট ফিল্ম দেখানো হয়। জমা পড়া অনেক শর্ট ফিল্মের মধ্যে রীতিমতো বাছাই করে নেওয়া হয় শর্ট ফিল্ম। অনেকেই সুযোগ পান না।
আরও পড়ুনঃ অনেক চমক নিয়ে ২৪ তম কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু
বুধবার সন্ধ্যায় ৫ টি শর্ট ফিল্ম দেখানোর কথা ছিল। অসাধারণ কিছু শর্ট ফিল্ম প্রতি বছরই দেখানো হয়। তাই এদিনও শর্ট ফিল্ম দেখতে নন্দন হাউস ফুল হয়ে যায়। আর তারপরেই ‘হাউস ফুল’ দর্শকদের ‘এপ্রিল ফুল’ করে দেন উদ্যোক্তারা বা বকলমে রাজ্য সরকার।
এদিন প্রথম যে ফিল্মটি দেখানো শুরু হয় তার নাম ‘মা’। পরিচালক হাওড়া পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মল্লিকা রায় চৌধুরী। আর ৫ মিনিট পরেই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শুরু হয় দর্শক বিক্ষোভ।
কারণ, আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শর্ট ফিল্মের নামে শুরু হয় মমতার প্রচার, এমনটাই অভিযোগ দর্শকদের। ‘মা’ শর্ট ফিল্মটি আর কিছুই না, মমতা ব্যানার্জী ও তৃনমুল সরকারের বিজ্ঞাপন। মমতা ব্যানার্জিকে সারদা মা, নিবেদিতা ও মাদার টেরেসার পরে বাংলার একমাত্র উদ্ধারকারী বলে ফিল্ম শুরু হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ তুমি কার ?
কন্যাশ্রী থেকে শুরু করে হাওড়ায় তাঁর ওয়ার্ডে ওই কাউন্সিলর কি কি কাজ করেছেন সেটাও দেখানো শুরু হতেই ক্ষেপে যান দর্শকরা। তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয় নন্দনে। বেশির ভাগ দর্শক ফিল্ম না দেখে হল থেকে বেরিয়ে যান।
এরপর নম নম করে শেষ হয় মমতার প্রচার করা ওই শর্ট ফিল্মের নামে বিজ্ঞাপনটি। শেষ হবার পর ক্ষুব্ধ দর্শকরা আবার হলে ফিরে যান।
অসংখ্য ভাল শর্ট ফিল্ম যেখানে সুযোগ পায় না, সেখানে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ও বিশেষ করে একজন রাজনৈতিক নেতার প্রচার কি করে আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে সুযোগ পায়? উঠেছে প্রশ্ন। এই নিয়ে উদ্যোক্তাদের কোন বক্তব্য এখনও পাওয়া যায় নি।
আরও পড়ুনঃ আমার আপনার ‘অসুখ’ নিয়ে কলকাতা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘অসুখওয়ালা’
এদিন কলকাতা ‘আন্তর্জাতিক’ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে শর্ট ফিল্ম দেখতে নন্দনে হাজির ছিলেন বিদেশি দর্শকরাও। তাদের কাছে এদিন রাজ্য ও রাজ্য সরকারের যে বিজ্ঞাপন গেল, সেটা মোটেই সম্মানজনক নয়। তোষামোদ করে যাঁরা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে বাংলার নাম ডোবালেন, তাদের কি শাস্তি হবে? প্রশ্ন কিন্তু উঠছে।