মঙ্গলবারই লোকসভা ভোটের ইস্তেহার প্রকাশ করল কংগ্রেস। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইস্তেহার প্রকাশ করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী বলেন, এই ইস্তেহারে মানুষের চাহিদাকে স্থান দেওয়া হয়েছে। আর এর পরেই অরুণ জেটলি সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, কংগ্রেসের AFSPA রিভিউয়ের প্রতিশ্রুতি প্রতিশ্রুতি মাওবাদী ও জিহাদিদের সুরক্ষিত করবে। কংগ্রেসের বাকি প্রতিশ্রুতিগুলি অবাস্তব ও অসম্ভব বলেই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
আরও পড়ুনঃ ভোট প্রচারে হেলিকপ্টার পাচ্ছেন না মমতা, অভিযোগের তীর কেন্দ্রের দিকে
“কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতিগুলি মাওবাদী ও জিহাদিদের সুরক্ষিত করবে। AFSPA রিভিউয়ের প্রতিশ্রুতি তারই প্রমাণ। দেশবিরোধী কর্মকে অপরাধ হিসেবে গণ্য না-করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এমন দলের একটা ভোটও পাওয়া উচিত নয়”। এই ভাষাতেই কংগ্রেসের ইস্তেহারকে আক্রমণ করেছেন জেটলি।
আরও পড়ুনঃ ভারতীর পর এবার মমতাকে নিজের মা বললেন মিমি
কংগ্রেসের ইস্তেহার মারাত্মক। কয়েকটি প্রতিশ্রুতি কোনওদিনও বাস্তবায়িত করা যাবে না। এই ভাষাতেই কংগ্রেসের প্রকাশিত ইস্তেহারকে তুলোধোনা করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তাঁর দাবি, এই ইস্তেহার দেশকে বিভাজিত করার এজেন্ডা।
আরও পড়ুনঃ হুমকি দিয়ে ভোট চাইবার ভিডিও প্রকাশ্যে, মিমির হয়ে শাসানি পঞ্চায়েত প্রধানের
বুধবার ইস্তেহার প্রকাশের সময় রাহুলের পাশে ছিলেন দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং ইউপিএ চেয়ারপার্সন সোনিয়া গান্ধী। ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। রাহুল বলেন বছর খানেক আগে যখন আমরা ইস্তেহার তৈরির কাজ শুরু করেছিলাম তখনই আমি বলেছিলাম অসম্ভব কোনও কথা ইস্তেহারে রাখা হবে না।
আরও পড়ুনঃ ৩.৬২ কোটির কর ফাঁকি দেওয়ায় গিলানীর দিল্লির বাড়ি সিল করল আয়কর দপ্তর
রাহুল জানান তাঁদের সরকার ক্ষমতায় আসার পর কোনও কৃষক যদি ঋণ মেটাতে না পারেন তাহলে ফৌজদারি মামলা হবে না। মানে তাঁকে জেলে যেতে হবে না। এর আগেই ন্যায় প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন কংগ্রেস সভাপতি। কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এই প্রকল্প লাগু হবে। আর সে অনুযায়ী দেশের সবচেয়ে গরিব ২০ শতাংশ মানুষ বছরে ৭২ হাজার টাকা করে পাবে বলে ঘোষণা করেন রাহুল।
আরও পড়ুনঃ আদালত নাক গলাবে না, শুক্রবারেই রিলিজ হচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর বায়োপিক
একনজরে দেখে নিন কি কি রয়েছে কংগ্রেস ইস্তেহারেঃ
ন্যায় প্রকল্প:
দারিদ্র দূরীকরণে প্রধান হাতিয়ার হবে ন্যায় প্রকল্প,মত কংগ্রেসের । এই প্রকল্পের আওতায় বার্ষিক ৭২,০০০ টাকা করে পাবে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী পরিবারগুলি । এই টাকা সরাসরি পৌঁছে যাবে উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে।
কর্মসংস্থান:
২০২০ সালের মধ্যে ২২ লক্ষ সরকারি চাকরি ও গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ইস্তেহারে। এছাড়াও, MNREGA এর আওতায় ১৫০ দিনের কাজের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
কৃষি-বাজেট:
‘কিষাণ বাজেট’- কৃষিজীবিদের জন্য পৃথক বাজেট ঘোষণার আশ্বাস রাহুলের । এছাড়াও, কৃষিঋণ শোধ না হলে সেটি ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে না ।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল:
ক্ষমতায় এলে অবিলম্বে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রত্যাহার করা হবে কারণ এই বিল উত্তর-পূর্বের মানুষদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে প্রস্তাব করা হয়েছে । একই সঙ্গে নাগরিকপঞ্জি ও আফস্পা পূনর্মূল্যায়নের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ জম্মু কাশ্মীরের জন্য আলাদা প্রধানমন্ত্রী, মোদী জবাব চাইলেন রাহুল ও মমতার কাছে
শিক্ষা ও স্বাস্থ্য:
মোট জিডিপির ৬% খরচ করা হবে শিক্ষার খাতে । এছাড়াও জনস্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে অতিরিক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে ।জিএসটি ২.০ক্ষমতায় এলে জিএসটির সরলীকিকরণ করার আশ্বাস রাহুলের । পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলিকে জিএসটির লভ্যাংশ দেওয়া হবে ।
জনসংযোগ মাধ্যম:
নির্বাচনের সময় অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শনকে বাড়তি সম্প্রচার সময় দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ভোট প্রচারে হেলিকপ্টার পাচ্ছেন না মমতা, অভিযোগের তীর কেন্দ্রের দিকে
আধার:
ক্ষমতায় এলে আধার সংযুক্তিকরণ নিয়ে উৎসাহ দেওয়া হবে কিন্তু আধার সংযুক্তিকরণ না হলে কোনও পরিষেবা থেকে ব্যাহত হবেন না নাগরিকরা।
হিংসামূলক অপরাধ রুখতে ব্যবস্থা:
এনডিএ সরকারের আমলে গণপিটুনি সহ অন্যান্য হিংসামূলক অপরাধ ঘটেছে, এই ধরনের ঘটনা রুখতে সংসদে বিশেষ আইন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস।
পরিবেশ পুনরুদ্ধার:
বিশ্ব উষ্ণায়ন ও পরিবেশ বিপর্যয় রুখতে নানাবিধ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস কংগ্রেস ইস্তেহারে । বায়ুদূষণ রুখতে জাতীয় স্বচ্ছ বায়ু প্রোগ্রামকে আরও সুদৃঢ় করার আশ্বাস কংগ্রেসের।
তবে এবার মানুষের মন বুঝে সাধ্যমত প্রতিশ্রুতি দেবার চেষ্টা করেছে কংগ্রেস। এই ইস্তেহার সাধারণ মানুষকে কতটা আকর্ষণ করে সেটাই এখন দেখার। আর এটাকেই অবাস্তব ও অসম্ভব বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন অরুণ জেটলি।
আরও পড়ুনঃ মোদী স্পেশাল, ব্রিগেডে আসার জন্য চারটে আস্ত ট্রেন বুক করল বিজেপি
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।