The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্র। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের সমস্ত পরিকাঠামো প্রস্তুতের পরও মোদী সরকারের টালবাহানায় চালু করা যাচ্ছে না সার্কিট বেঞ্চর কাজ, বলে গুরুতর অভিযোগ তুললেন রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। আর সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে কেন্দ্রের এই ঘৃণ্য রাজনীতির বিরুদ্ধে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হচ্ছেন জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির আইন কর্মীরা।
আরও পড়ুনঃ কলকাতা হাইকোর্টে জিতে মোদীর ‘রথ যাত্রা’ আটকালেন মমতা
সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে রাজনীতি করছে কেন্দ্র সরকার। মোদী সরকার শুধুমাত্র রাজনীতি করার জন্য সার্কিট বেঞ্চের অনুমোদন আটকে রেখেছে বলে অভিযোগ মন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি হিল কার্ট রোডে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস কার্য্যালয়ে আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এক সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ করেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব।
তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে কলকাতা হাইকোর্টের শাখা হিসেবে জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ তৈরির দাবি ছিল উত্তরবঙ্গবাসীর। বিগত চল্লিশ বছর ধরে রাজনৈতিক দলগুলির দীর্ঘ টালবাহানা চলেছে। অবশেষে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর শুরুর দিন থেকেই জোড় কদমে সার্কিট বেঞ্চ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘পর্যটক প্রধানমন্ত্রী’ নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানালেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুসারে নির্দিষ্ট জমিতেই শুরু হয় সার্কিট বেঞ্চ নির্মাণ এর কাজ। এদিন মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে মিলে হাইকোর্টের নির্দেশ মতোই রেকর্ড রুম, আইনজীবীদের বসার জায়গা, কোর্টরুমগুলিকে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি সার্কিট বেঞ্চ ডিজিটাইজ হবে সে কারনে হাইকোর্টের আদলে ল্যাব তৈরি করা হয়েছে।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য্য সহ কয়েকজন বিচারপতি ও আইনমন্ত্রী এসে পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে যুদ্ধকালিন প্রস্তুতির সঙ্গে সম্পন্ন হয় সার্কিট বেঞ্চের কাজ। কয়েক দফায় হাইকোর্টের জনা কয়েক বিচারপতি জলপাইগুড়ি এসে সার্কিট বেঞ্চের সমস্ত পরিকাঠামো খতিয়ে দেখেন।
আরও পড়ুনঃ ‘জগন্নাথের রথযাত্রা নয়, বিজেপির ফূর্তি করার রথযাত্রা’ শুভেন্দু অধিকারী
এদিন মন্ত্রী বলেন, বিরোধী কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি দলগুলি কলকাতা হাইকোর্টে গিয়ে মামলা রুজু করে। উত্তরবঙ্গে সার্কিট বেঞ্চ তৈরির কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে চলতি বছরের আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ রাষ্ট্রের উপসচিব এই সার্কিট বেঞ্চের প্রক্রিয়া শুরুর কথা জানান কলকাতা হাইকোর্টকে।
কলকাতা হাইকোর্ট সেই অনুযায়ী সার্কিট বেঞ্চ চালুর বিষয় জানিয়ে দেয়। তবে এরজন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আইনি বিভাগের অনুমোদন প্রয়োজন। সেই অনুমোদন আর দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। সার্কিট বেঞ্চের পরিকাঠামো, কর্মী নিয়োগ পরীক্ষা ও নির্বাচন হয়ে যাবার পরও কেন্দ্র সার্কিট বেঞ্চের অনুমোদন আটকে রেখছে বলে জানান মন্ত্রী।
আরও পড়ুনঃ আন্দোলনের এক যুগ পূর্তিতে সিঙ্গুরে শহীদ মিনার গড়বেন মমতা
এদিন মন্ত্রী বলেন অনুমোদন দেওয়া অল্প সময়ের কাজ, একদিনেই তা করা যায়। কিন্ত দিল্লিতে কেন্দ্রীয় সরকার দিনের পর দিন তা আটকে রাখছে। অসাংবিধানিক ভাবে সার্কিট বেঞ্চের অনুমোদন আটকে রেখেছে মোদী সরকার। শুধু মাত্র রাষ্ট্রপতির অনুমোদন ও সার্কিট বেঞ্চ চালু করার জন্য একটি নির্দিষ্ট তারিখের জন্য পুরো বিষয়টা ঝুলে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে ধর্ণায় বসেছেন জলপাইগুড়ি সমস্ত আইন বিষয়ক কর্মীরা। শুক্রবার থেকে শিলিগুড়ি আদালতেও শীঘ্র সার্কিট বেঞ্চ তৈরির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ করবেন শিলিগুড়ি আইনজীবী ও আইনি কর্মীরা। তবে মন্ত্রী আশ্বাস দেন কোর্টের সমস্ত কাজ অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন শীঘ্র জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ চালু করা না হলে পরিকাঠামো বিকল হয়ে পড়বে।