কর্ণাটকে রাজনৈতিক চাপানউতোর এখন চরম সীমায়। ইতিমধ্যেই দুই নির্দল বিধায়ক কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেওয়ার পর কর্ণাটকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি বদল হতে চলেছে। সুত্র থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কংগ্রেসের ছয়জন বিধায়ককে। তাঁরা ইস্তফা দিতে পারেন বা বিজেপিতে যোগদান করতে পারেন বলে জানা যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের একটি হোটেলে তাদের মধ্যে দুজনকে দেখা গেছে বলেই খবর। বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক অপহরণের অভিযোগ করেছে কংগ্রেস।
আরও পড়ুনঃ
মন্দিরে ঢুকে বিপ্লবের শাস্তি, পিটিয়ে বৌমাকে হাসপাতালে পাঠাল শাশুড়ি
ভোটের আগে মানুষের মুখে হাসি ফোটাবে মোদী সরকারের অন্তর্বর্তী বাজেট
২২৪ সদস্যের বিধানসভায় বিজেপির ১০৪, কংগ্রেস ৭৯ আর জেডিএস ৩৭ আসনে জয়লাভ করেছে। আরেকদিকে বহুজন সমাজ পার্টি, কেপিজেপি একটি করে এবং দুজন নির্দলী বিধায়ক দুটি আসনে জয়লাভ করেছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ১১৩ বিধায়কের প্রয়োজন। ১০৪টি আসন পেয়ে এককভাবে বড় দল হলেও সরকার গড়তে পারে নি বিজেপি।
কংরেস-জেডিএস জোটে আছে ১১৬ জন বিধায়ক। গতকাল দুজন নির্দল বিধায়ক সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নিয়েছেন। আর এরপর কংগ্রেসের ছয়জন বিধায়ক ইস্তফা দিলে অঙ্কটা পুরো বদলে যাবে। সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। সেক্ষেত্রে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে বিজেপি।
আরও পড়ুনঃ
বাংলায় ক্ষোভ বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়াচ্ছে মোদী সরকার
শ্রীজাত হেনস্থা ঘটনায় বাংলার বুদ্ধিজীবিদের মুখোশ খুললেন তসলিমা
জমে গেছে গদির লড়াই। কর্ণাটকে রাজনৈতিক অবস্থা টালমাটাল। শুরু হয়ে গেছে পরস্পরের বিরুদ্ধে বিধায়ক কেনাবেচার অভিযোগ। লোকসভা ভোটের মুখে কর্ণাটকে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের সরকারের এই মুহূর্তে টালমাটাল অবস্থা। পরিস্থিতি দেখে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবেগৌড়া তো বলেই ফেলেছেন, ‘ছেলেকে একমাত্র ঈশ্বরই বাঁচাতে পারেন’। তবে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী জানিয়েছেন চিন্তার কোন কারন নেই। তাঁর সরকার মজবুত।
আরও পড়ুনঃ
নৃশংস নার্স, সেবাই যাদের ধর্ম তারাই পিটিয়ে মারল ১৬টি বাচ্চা কুকুর
বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাবান মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে এক হিন্দু নারী
ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ‘অপারেশন লোটাস’ (বিজেপির বিধায়ক ভাঙানোর সাংকেতিক নাম) চালিয়ে বিধায়ক ভাঙানোর চেষ্টা করছে প্রাক্তন বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার লোকজন। কুমারস্বামীর মন্ত্রকের তরফ থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে যে, ৬ কংগ্রেস বিধায়ক নিখোঁজ রয়েছেন। মুম্বইয়ের একটি হোটেলে তাঁদের আটকে বিজেপি কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ কুমারস্বামীর দলের। কংগ্রেসও বিধায়কদের আটকে রাখার অভিযোগ এনেছে।
পাশাপাশি আরও কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক এবং জেডিএসের কয়েকজন বিধায়কের সঙ্গে গোপনে যোগাযোগ রাখছে বিজেপি বলেই অভিযোগ কংগ্রেস-জেডিএস জোটের। পাল্টা বিজেপির তরফ থেকে ইয়েদুরাপ্পার দাবি করেছেন, তাঁদের বিধায়কদের ভাঙাতে চাইছে কংগ্রেস। এই ভয়েই বিজেপির ১০৪ জন বিধায়ককে গুরুগ্রামের একটি হোটেলের রাখা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ
ভারতের কৃষকের মেয়ে আইএমএফের প্রধান অর্থনীতিবিদ
ভারতীয় সেনাবাহিনীতে ‘ভাবনার বিপ্লব’ ভাবনা কস্তুরীর হাত ধরে
কর্নাটকে কংগ্রেসের ৭৯ বিধায়কের সমর্থনে কুমারস্বামীর জেডিএস মাত্র ৩৭টি আসন পেয়েই সরকার গড়ে কর্ণাটকে। সমর্থন করেন দুই নির্দল বিধায়ক। আর তারপরেই সরকার এর বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করে বেশ কিছু কংগ্রেস বিধায়ক। সরকারের উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নেন দুই নির্দল বিধায়ক। এদিকে মুম্বাইয়ের হোটেলে লুকিয়ে আছেন বিদ্রোহী ৬ কংগ্রেস বিধায়ক, বলে জানা গেছে। তাঁরা কি সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই এখন দেখার। এদের হাতেই কর্ণাটক এর ক্ষমতা কার হাতে যাবে সেটা নির্ভর করছে।
আরও পড়ুনঃ
মোদীর প্রকল্পে আর টাকা দেবেন না মমতা, কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্ক তলানিতে
একদিনে বহিষ্কৃত দুই তৃণমূল সাংসদ, দিদিকে ছেড়ে মোদীর দলে আর কে কে
বিজেপি গোপন হোটেলে লুকিয়ে রেখেছে তাদের বিধায়কদের। বৃহস্পতিবার কংগ্রেস তাদের বিধায়কদের হাজির থাকতে বলেছে। জানা গেছে রীতিমত গুনে দেখা হবে, কতজন এখনও কংগ্রেসে আছেন। জেডিএস এর তরফ থেকেও কড়া নজরে রাখা হয়েছে তাদের বিধায়কদের। সব মিলিয়ে কর্ণাটকে জমজমাট ‘গণতন্ত্রের গদি’ দখলের নাটক। লোকসভা ভোটের আগেই কর্ণাটকে সরকার গড়তে পরিকল্পনা করছে বিজেপি।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।