সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না মেনে রাজ্য সরকার গ্রেফতার করতে পারে বিমল গুরুং ও রোশন গিরিকে। আর সেই আশঙ্কাতেই দিল্লি বিমান বন্দর থেকে বাগডোগরা বিমান বন্দরে নেমে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে আসার পরিকল্পনা বাতিল করলেন গুরং ও গিরি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ না মেনে দুই গোর্খা নেতাকে কি গ্রেফতার করতে পারে রাজ্য? প্রশ্নে সরগরম রাজ্যের আইনজীবী মহল।
আরও পড়ুনঃ ভোটের মুখে তৃণমূল সভাপতির বাড়ি থেকে উদ্ধার অস্ত্র ও কোটি কোটি টাকা
বিমল গুরুং এবং রোশন গিরিকে বৃহস্পতিবারই দেখা যাবে দার্জিলিংয়ে। এমনটাই বিশেষ সুত্রে জানা যাচ্ছিল। ২০১৭ সালে দার্জিলিং অশান্ত হয়ে যাওয়ার পর, গুরুং এবং গিরি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। রাজ্য পুলিশের কাছে তাকে দেখলেই গ্রেফতার করার নির্দেশ ছিল এতদিন। তারই কারণে প্রকাশ্যে আসতে পারছিলেন না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার দুই নেতা। বৃহস্পতিবার তাঁরা বাগডোগরা বিমান বন্দরে নেমে জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে ভোটে পাহাড়ে থাকার আর্জি নিয়ে যাওয়ার জন্য দুটি বিমানে টিকিট কেটেছিলেন।
আরও পড়ুনঃ মমতার সঙ্গে পারবে না, রাজ্যস্তরের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে মোদীকে লড়ার চ্যালেঞ্জ
গত ফেব্রুয়ারি মাসে বিমল গুরুং, রোশন গিরিরা লোকসভায় ভোট প্রচার করতে চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই আবেদন সুপ্রিম কোর্ট ফেরত পাঠিয়ে দেয় কলকাতা হাইকোর্টের কাছে। কলকাতা হাইকোর্টের শাখা জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে। বৃহস্পতিবারই সেই মামলার প্রথম শুনানির জন্য দিল্লি থেকে জলপাইগুড়ি ফিরছেন বিমল এবং রোশন, এমনটাই জানা যাচ্ছিল। কিন্তু গ্রেফতারের ভয়ে বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে জলপাইগুড়ি আদালতে যাওয়া বাতিল করলেন দুই নেতা।
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে রাজ্যে ৩০ শতাংশেরও কম স্পর্শকাতর বুথ
ভোট প্রচার করার জন্যে তাঁদের যেন তিন সপ্তাহের নিরাপত্তা দেওয়া হয়, এমনটাই আবেদন করেছিলেন বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। সেই আবেদন ফিরিয়ে দিয়ে হাইকোর্টকে এই কেসের তদারকি করার নির্দেশ দেয় দেশের শীর্ষ আদালত। ৪ দিনের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ পেয়েছে হাইকোর্ট। মামলা চলাকালিন গুরুংদের গ্রেফতার করা যাবে না এমনটা নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আগামী ৪দিন তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ পাবার পরেই তাঁরা প্রকাশ্যে আসছেন, বলেই জানা গিয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশও থাকছে বুথে, বিরোধী শিবিরে জোর ধাক্কা
আগামী ৪দিন তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ পাবার পরেই তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ ছিল, পুরনো কোন মামলায় তাঁদের গ্রেফতার করা যাবে না। কিন্তু বিমল গুরুং ও রোশন গিরি রাজ্যে পা দিলে ফের উত্তেজনা ছড়াতে পারে এই যুক্তিতে তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলেই সিআইডি সূত্রে খবর আসে।
আরও পড়ুনঃ বিবেক দুবেকে তৃণমূলের এজেন্ট বলে কটাক্ষ মুকুল রায়ের
এই কারণে এদিন সকাল থেকে বাগডোগরা বিমানবন্দরে মোতায়েন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। পাহাড়েও সতর্ক করা হয়েছে পুলিশকে। গোটা ঘটনার দিকে নজর রেখেছে নির্বাচন কমিশনও। এছাড়াও দার্জিলিং এর বিভিন্ন এলাকা থেকে মোর্চা নেতা-কর্মীরাও বাগডোগরা বিমানবন্দরে ভিড় করেছেন। দিল্লি বিমানবন্দরেও ছিল সিআইডি। সব দেখেই গ্রেফতারের ভয়ে শেষ মুহূর্তে সব পরিকল্পনা বাতিল করেন দুই নেতা।
আরও পড়ুনঃ মমতার দাবি না মেনে জঙ্গলমহল থেকে ৩০ কোম্পানি বাহিনী তুলছে নির্বাচন কমিশন
মামলায় রায় তাঁদের পক্ষে গেলে, আসন্ন লোকসভা ভোটে পাহাড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট প্রচার করবেন তারা। সমর্থন করবেন বিজেপি প্রার্থীকে। আর এটা আটকাতেই তৎপর রাজ্য। এখন জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ কি রায় দেয় সেটাই এখন দেখার। তার উপরই নির্ভর করছে বিমল ও রোশনের পাহাড়ে ভোট প্রচারের ভবিষ্যৎ।
আরও পড়ুনঃ অ্যান্টি স্যাটেলাইট টেস্ট নিয়ে নাসার অভিযোগ উড়িয়ে দিল ভারত
তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও অন্য কারণ দেখিয়ে কি তাঁদের গ্রেফতার করা যেতে পারে কিনা, এই নিয়েই জোর চর্চা চলছে আইনজীবী মহলে। আর এই কারণেই আপাতত রাজ্যে আসা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করছেন দুই গোর্খা নেতা, এটাই জানা যাচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ এক্সপায়ারি বাবুকে চ্যালেঞ্জ স্পিডব্রেকারের, বাংলায় মোদী মমতা তরজা তুঙ্গে
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।