দিল্লি কার দখলে আজও হল না ফয়সালা

485
ভারতের রাজধানী দিল্লি কার দখলে আজও হল না ফয়সালা/The News বাংলা
ভারতের রাজধানী দিল্লি কার দখলে আজও হল না ফয়সালা/The News বাংলা

ভারতের রাজধানী দিল্লি কার দখলে? দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার ও উপরাজ্যপাল মামলায়, এখনও হল না অধিকাংশ ফয়সালা। দুই বিচারপতি একমত না হওয়ায় মামলা পাঠান হয়েছে তৃতীয় বিচারপতির বেঞ্চে। তবে যে রায় দেওয়া হয়েছে, তাতে কেন্দ্রের জয় হল বলেই মনে করছে আইন মহল। রায় গণতন্ত্রের পরিপন্থী, জানিয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।

বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার ও উপরাজ্যপাল এর বিতর্ক গত দু বছর ধরেই চরমে। জুলাইয়েই দেশের শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এই নিয়ে একটি রায় দেয়। সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলেও, সেটা নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি থেকে যায় বলে দাবি করে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় দু পক্ষই।

আপের দাবি মানুষের ভোটে জিতে এলেও তাদের কাজের সুযোগ খুবই কম। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দিল্লি পরিচালনের জন্য অতিরিক্ত ক্ষমতার দাবি করে আসছে সরকার। এর আগে জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, দিল্লি অন্য রাজ্যের মতো ক্ষমতা দাবি করতে পারে না ঠিকই কিন্তু উপ-রাজ্যপাল একা প্রশাসন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও নিতে পারেন না। উপ রাজ্যপালের সঙ্গে দিল্লি সরকারের গোলমাল দেখা দেয় আধিকারিকদের বদলি করা নিয়ে।

বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ নভেম্বর মাসের ১ তারিখ এই মামলার শুনানি শেষ করেন। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে ফের রায় দিল আদালত। তবে বেশ কিছু সিদ্ধান্তে দুই বিচারপতি একমত না হওয়ায় মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয় তৃতীয় বিচারপতির বেঞ্চে। দুপক্ষের এই সংঘাত বড় আকার ধারন করেছে। রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন কেজরিওয়াল। এখন দিল্লির উপ রাজ্যপাল অনিল বৈজল। তাঁর আগে দায়িত্বে ছিলেন নাজীব জং। সেই তখন থেকে সংঘাতের শুরু।

তবে এবার উপ গভর্নরের সঙ্গে সংঘাত প্রশ্নে কিছুটা হলেও সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল আম আদমি পার্টির সরকার। আদালত জানিয়ে দিল দিল্লির দুর্নীতি দমন শাখা নিয়ন্ত্রণের অধিকার কেন্দ্রীয় সরকারের, দিল্লি সরকারের নয়। তবে দুই আমলার বদলি নিয়ে বিচারপতিদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছে। আমলাদের ট্রান্সফার করার অধিকার কার, সেই নিয়ে একমত হতে পারেন নি বিচারপতি এ কে সিক্রি এবং বিচারপতি অশোক ভূষণ।

গত বছর জুলাইয়ে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, দিল্লি শাসন করবেন এবার উপরাজ্যপালই। শীর্ষ আদালতের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চের রায় অনুসারে, দিল্লির কোনও ‘বস’ নেই। রাজধানীর প্রশাসনিক প্রধান হলেন উপরাজ্যপাল অনিল বৈজল। প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র আবার বলেন, “দিল্লির আসল ক্ষমতা জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকারের হাতেই থাকবে”। এর ফলেই রায় নিয়ে দু পক্ষের মধ্যেই বোঝার ভুল থেকে যায়। ফলে দু পক্ষই ফের আদালতের শরণাপন্ন হয়।

সংবিধান ও আইনের অধীনে হওয়া সত্ত্বেও দিল্লি সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই ভূমি সংক্রান্ত বিষয়, আমলাতন্ত্র এবং পুলিশের ওপর। অন্যদিকে আপ সরকারের দাবি, কেন্দ্র তাদের প্রশাসনিক ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করছে। গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত সরকারকে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সংবিধানের তোয়াক্কা না করে উপরাজ্যপালের ক্ষমতা বাড়িয়েছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। এই নিয়ে প্রথমে মামলা হয় দিল্লি হাইকোর্টে। সেখানে আম আদমি পার্টির দাবি খারিজ হয়ে যায়। এরপর সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন অরবিন্দরা। সেই মামলারই এখনও চলছে শীর্ষ আদালতে।

সুপ্রিম কোর্ট রায় দিলেও সেটা নিয়ে বেশ কিছু বিভ্রান্তি থেকে যায় বলে দাবি করে ফের আদালতের দ্বারস্থ হয় বিভিন্ন পক্ষ। এবারও সব বিষয়ে একমত হতে পারলেন না বিচারপতিরা। তৃতীয় বিচারপতি এই নিয়ে কি সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই দেখার।

Comments

comments

আপনাদের মতামত জানাতে কমেন্ট করুন