শেষ পর্যন্ত কি রাহুলের বদলে লোকসভা ভোটে মোদী বিরোধী মুখ প্রিয়াঙ্কাই? উঠে গেল প্রশ্ন। সোমবার যোগীর খাসতালুকে রোড শোতে যেভাবে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা নেতৃত্ব দিলেন তাতেই উঠে এসেছে এই প্রশ্ন। গোটা রোড রালিতে রাহুল ছিলেন সেই প্রিয়াঙ্কার আড়ালেই দ্বিতীয় সারিতে। সেই নাতনি প্রিয়াঙ্কাকেই এবার ‘ইন্দিরা গান্ধী’ প্রজেক্ট করল কংগ্রেস। আর ২০১৯ এর লোকসভায় শেষ ভরসা সেই প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকেই মোদী বিরোধী মুখ করল কংগ্রেস, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুনঃ লোকসভা ভোটের আগে হত্যা মামলা থেকে মুক্তি নরেন্দ্র মোদীর
কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের পদ পাবার পর তাঁর প্রথম রোড শো। যোগী আদিত্যনাথের খাসতালুকে, রাহুলকে নিয়ে প্রিয়াঙ্কার মেগা রোড শো, থিকথিকে ভিড়ে স্লোগান উঠল ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’। ৫ দিনের জন্য লখনৌ পৌঁছেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। এই রোড শো-এর মাধ্যমেই রাজনীতিতে প্রবেশের পর লোকসভা ভোটের প্রথম প্রচার শুরু করে দিলেন তিনি।
পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব কাঁধে পাওয়ার পর সোমবারই যোগীরাজ্যে তাঁর প্রথম রোড শো। বাসের ছাদে তাবড় কংগ্রেস নেতৃত্ব। সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, রাজবব্বর৷ কিন্তু মধ্যমণি একজনই। প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বঢরা। লখনৌয়ে ১২ কিলোমিটার মেগা রোড শো-য়ের মাধ্যমেই ভোট প্রচার শুরু করে দিলেন রাজীব কন্যা। হাজার হাজার মানুষ রাস্তার ধারে৷ অনেক সমর্থক নিজেদের গায়ে লিখেছেন, ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’।
আরও পড়ুনঃ রথী মহারথীদের নাম লেখা ১২ পাতার গোপন চিঠি সিবিআইকে দিলেন কুণাল ঘোষ
এর আগে লখনৌতে, পূর্ব উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা ও পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে স্বাগত জানাতে তুমুল উন্মাদনা ধরা পড়ে কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে। রোড শোয়ে যোগ দেন রাহুল গান্ধীও। এই প্রথম লখনৌতে জনসভায় একসঙ্গে দেখা গেল দুই ভাই-বোনকে। ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানেই থাকার কথা প্রিয়াঙ্কা ও জ্যোতিরাদিত্যর। রাহুল এদিনই ফিরে যাবেন দিল্লি।
রোড শো-র জন্য নির্ধারিত বাসে চড়েই তিনজনে মিলে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়তে থাকেন। এই রোড শো হল প্রায় ১২ কিলোমিটার রাস্তায়। কংগ্রেস সমর্থকদের উৎসাহ উদ্দীপনা ছিল দেখার মত। প্রিয়াঙ্কার নেতৃত্বেই যে উত্তরপ্রদেশ সহ গোটা ভারতেই লোকসভা ভোটে লড়তে চলেছে কংগ্রেস সেটা সোমবারের পর পরিষ্কার হয়ে গেল।
আরও পড়ুনঃ পাকিস্তান চিনের চিন্তা বাড়িয়ে ভারতীয় সেনার হাতে এল ভয়ঙ্কর চিনুক হেলিকপ্টার
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর বোন প্রিয়াঙ্কাকে সক্রিয় রাজনীতিতে দেখতে চাওয়ার দাবি বহুদিন ধরেই ছিল কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। লোকসভা ভোটের আগে সেই দাবি পূরণ করে মাস্টারস্ট্রোক দেয় কংগ্রেস। উত্তরপ্রদেশকে দু-ভাগে ভাগ করে তার একটা দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রিয়াঙ্কার কাঁধে। পূর্ব উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদকের পদ দেওয়া হয়েছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে। পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদকের পদের দায়িত্ব পেয়েছেন রাহুলের প্রিয় জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া।
এতদিন পর্যন্ত মা সনিয়া ও ভাই রাহুলের নির্বাচনী কেন্দ্র উত্তরপ্রদেশের অমেঠি ও রায়বরেলির মধ্যেই নিজের রাজনৈতিক ভূমিকা সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন প্রিয়াঙ্কা। তবে লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস নেতৃত্ব বুঝেছে যে, উত্তরপ্রদেশের মতো ৮০টি আসনের রাজ্যের দায়িত্ব একজনের কাঁধে দেওয়া সমীচিন হবে না। তাই প্রিয়াঙ্কাকেও নিয়ে আসা হয় সক্রিয় রাজনীতিতে।
আরও পড়ুনঃ মোদীর অরুণাচল সফর নিয়ে চিনকে উপযুক্ত জবাব দিল ভারত
প্রিয়াঙ্কাকে দিয়ে ইন্দিরা তাস খেলে কংগ্রেসের কতটা লাভ হবে তা বলবে লোকসভা ভোটের রেজাল্ট। তবে এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস শিবিরে যে অনেকটাই খুশির খবর ও কর্মী সমর্থকদের চাঙ্গা করার খবর, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে এবার মনে হচ্ছে, রাহুলকে সরিয়ে মোদী বিরোধী মুখ হিসাবে প্রিয়াঙ্কাকেই তুলে ধরছে কংগ্রেস। সোমবারের পর এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।