The News বাংলা, কলকাতাঃ নতুন জেনারেশনের আধুনিক বাঙালি ছেলে মেয়েরা ব্যস্ত হ্যাপি নিউ ইয়ার পালনে। রাতে পার্টি, সকালে পিকনিক। তারা জানেই না, নববর্ষের দিনে বাঙালির একটা নিজস্ব উৎসব সৃষ্টি করে দিয়ে গেছেন ঠাকুর শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব। সেটা কল্পতরু উৎসব তথা বাঙালির ইংরেজী নববর্ষ।
আরও পড়ুনঃ নতুন বছরে বাংলার কৃষকদের জন্য ‘কল্পতরু’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা
কল্পতরু উৎসব হল একটি হিন্দু উৎসব। রামকৃষ্ণ মঠের সন্ন্যাসীবৃন্দ ও রামকৃষ্ণ মিশনের গৃহস্থরা এই উৎসব পালন করেন। বিশ্বব্যাপী বেদান্ত সোসাইটিগুলিতেও এই উৎসব পালিত হয়। ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি এই উৎসব শুরু হয়েছিল। এই দিন ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস তাঁর অনুগামীদের কাছে নিজেকে ঈশ্বরের অবতার বলে ব্যক্ত করেছিলেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুনঃ শেখ হাসিনাকে প্রথম অভিনন্দন জানালেন নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
আরও পড়ুনঃ অবিশ্বাস্য জয়, ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসনে জিতে ফের ক্ষমতায় শেখ হাসিনা
বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হলেও কাশীপুর উদ্যানবাটীতে (বর্তমানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অন্যতম একটি শাখাকেন্দ্র) এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। এখানেই রামকৃষ্ণ পরমহংস জীবনের শেষ দিনগুলি অতিবাহিত করেছিলেন। রামকৃষ্ণ পরমহংসের অনুগামীরা এই উৎসবকে “ঠাকুরের বিশেষ উৎসব”গুলির অন্যতম উৎসব হিসেবে গণ্য করেন।
আরও পড়ুন: ১১ বছর পর দার্জিলিং কালিম্পঙে তুষারপাতে বেড়ানোর আনন্দ দ্বিগুন
দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতেও এই উৎসব মহাসমারোহে পালিত হয়। সারা দেশ থেকে রামকৃষ্ণ-অনুগামী তীর্থযাত্রীরা এই দিন দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে পূজা দিতে আসেন।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়বে সল্টলেক নিউটাউনের বাড়িঘর
১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম কল্পতরু উৎসবের দিনটি রামকৃষ্ণ পরমহংস ও তাঁর অনুগামীদের জীবনে ছিল এক ‘অভূতপূর্ব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা’। রামকৃষ্ণ পরমহংস সেই সময় দুরারোগ্য গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থারও যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। উত্তর কলকাতার কাশীপুর অঞ্চলের একটি বাগানবাড়িতে চিকিৎসার সুবিধার জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জেলেই সুমন চট্টোপাধ্যায়, সিবিআই নজরে বাংলার আরও তিন সাংবাদিক
আরও পড়ুন: হাজার হাজার রুটি নষ্ট করে কৃষক আন্দোলনে ইতিহাস বাংলার বামেদের
১ জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি বাগানে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর অনুগামী ভক্তভৈরব নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, “তোমার কি মনে হয়, আমি কে?” গিরিশচন্দ্র বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে রামকৃষ্ণ পরমহংস “মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার।”
আরও পড়ুনঃ EXCLUSIVE: ৫৫ নম্বরের পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীকে ৫৯ দিয়ে এসএসসি-র নতুন কীর্তি
প্রত্যুত্তরে শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস বলেন, “আমি আর কি বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক”। এরপর তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। রামকৃষ্ণ-অনুগামীদের মতে, তাঁর স্পর্শে সেদিন প্রত্যেকের অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ ‘বিজেপির বন্ধু অধীর চৌধুরী মুর্শিদাবাদের বর্তমান মীরজাফর’
রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতম শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, সেই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরুতে পরিণত হয়েছিলেন। তিনিই এই দিনটিকে ‘কল্পতরু দিবস’ নাম দিয়েছিলেন, যা পরে কল্পতরু উৎসব নামে পরিণত হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংসের গৃহস্থ শিষ্যরাই তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। শ্রীশ্রী ঠাকুরের সন্ন্যাসী সন্তানদের অনুপস্থিতিতে এই দিব্য অনুষ্ঠান ঘটেছিল।
আরও পড়ুনঃ প্লাস্টিক পলিপ্যাক থার্মোকল দূষণ মুক্ত করার অসাধারণ লড়াই
রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের তরফ থেকে প্রত্যেক মানুষকে “রামকৃষ্ণ শরনম,শুভ কল্পতরু উৎসবের আগাম শুভেচ্ছা” জানান হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কাশীপুর উদ্যানবাটীতে ও দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়িতে মহামহাসমারোহে পালিত হবে কল্পতরু উৎসব।