কৃষ্ণা দাস, The News বাংলা, শিলিগুড়িঃ বর্তমানে বেশিরভাগ রাজনীতিবিদ অশিক্ষিত। বলা হয় ‘আঙ্গুঠাছাপ’। আর সেই বদনাম ঘোচাতেই এবার বুড়ো বয়সে উদ্যোগী হলেন এক কাউন্সিলার।’পাছে লোকে কিছু বলে’, ভাবনাকে সরিয়ে রেখেই মাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপ করেন ৪০ বছরের রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন: বাংলায় উদ্বাস্তুদের নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করল বামফ্রন্ট
শিক্ষার যে কোনো বয়স হয় না, তা ফের একবার প্রমান দিলেন শিলিগুড়ি পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নিখিল সাহানী। ৪০ বছর বয়েসেও তিনি মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে নজির সৃষ্টি করলেন। সেই সঙ্গে তাঁর ওয়ার্ডের যে কোনো গরীব পরিবারের কেউ অর্থের জন্য পড়াশুনা করতে না পারলে, তাদের আর্থিক সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দিলেন তিনি।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রানা বস্তির বাসিন্দা নীখিল সাহানী। ১৯৯৪ সালে শিলিগুড়ির ভারতী হিন্দি হাই স্কুলে অষ্টম শ্রেনীতে পাশ করার পর পড়াশুনা থেকে অব্যহতি নেন। সে সময় এই বিদ্যালয়টি জুনিয়র স্কুল ছিল। নবম শ্রেনীতে ভর্তি হতে গেলে নতুন স্কুলে বেশ কিছু অর্থ ব্যয় হবে।
আরও পড়ুনঃ রাহুলের হার রাফায়েলে সুপ্রিম কোর্টে জয় নরেন্দ্র মোদীর
অথচ তাঁর পরিবারের তেমন আর্থিক সংগতি ছিল না। তাই আর পড়াশুনা হয়ে ওঠে নি। বর্তমানে তিনি শিলিগুড়ি পুরনিগমের বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর। তাঁর কাছে ওয়ার্ডের বিভিন্ন লোকজনকে নানারকম কাজের জন্য আসতে হয়। এদিকে তিনি মাধ্যমিক পাশ না করায় “আঙ্গুঠা ছাপ” ও “অশিক্ষিত” সহ নানা রকম কটুক্তি শুনতে হয়।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় ২৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ, নাসিকে দাম না পেয়ে আত্মহত্যা
এরপরই তিনি মনস্থ করেন যে, তিনি তার এই “আঙ্গুঠা ছাপ” ব্যঙ্গের অবসান ঘটাবেন। চলতি বছর তিনি রবীন্দ্র মুক্ত বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন। কিন্তু সেখানে তিনি বাংলা বিষয়ে অকৃতকার্য হন। তবু তিনি থেমে থাকেন নি। শুক্রবার তিনি ফের ওই বিষয়ে পরীক্ষা দিতে যান এদিকে দুদিন ধরে তিনি জ্বরে আক্রান্ত। তা সত্বেও সব বাধা অতিক্রম করে তিনি পরীক্ষা দেন।
আরও পড়ুন: বিধায়কের গাড়িতে বোমা গুলির ‘শুট আউট’ এর তদন্তে সিআইডি
মাঝপথে যারা পড়াশুনা ছেড়ে দিয়েছে তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘পড়াশুনার কোন শেষ বা বয়েস হয় না’। একজন জন প্রতিনিধি হিসেবে তিনি যখন এই বয়েসে এসেও পড়াশুনা করে ডিগ্রি নেবার চেষ্টা করতে পারেন, তখন অন্যরা এতে উৎসাহ পাবে বলে তিনি আশা করেন।
পাশাপাশি যে সমস্ত যুবারা পড়াশুনো বিমুখ তাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, ‘সরকার কর্মসংস্থানের অনেক পথ খুলে দিয়েছে’। ডিগ্রির অভাবে অনেক যুবারা তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই স্কুলে গিয়ে নতুন করে পড়াশুনা না করতে পারলেও এরকম মুক্ত বিদ্যালয়গুলি থেকে পরীক্ষা দিয়ে ডিগ্রি অর্জন করার পরামর্শ দেন তিনি।