The News বাংলা, ফৈজাবাদ: লোকসভা ভোট যতই এগিয়ে আসছে, রামমন্দির নিয়ে উত্তেজনার পারদ ততই চড়তে শুরু করেছে। প্রতিবারের মতোই, এবারের লোকসভা ভোটেও রামমন্দিরের দাবী অন্যতম বড় ইস্যু হয়ে উঠতে চলেছে উত্তরপ্রদেশের রাজনীতি ও দেশে রাজনীতিতে। আর সেই নিয়েই অযোধ্যায় শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জমায়েতে অশান্তির আশঙ্কায় শঙ্কিত প্রশাসন থেকে সংখ্যালঘুরা। ফের একবার ১৯৯২ এর স্মৃতি ফিরছে বাবরি মসজিদ এলাকায়।
রবিবার, রাম মন্দির নির্মাণের দাবিতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) ও শিবসেনার কর্মসূচিকে ঘিরে অযোধ্যায় আবার থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গেরুয়া বাহিনী এতদিন বলছিল, ‘মন্দির ওহি বনায়েঙ্গে।’ এখন স্লোগান, ‘মন্দির জলদি বনায়েঙ্গে।’ যার ফলে, অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরিতে কেন্দ্রকে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য চাপ দিতে শুরু করে দিল শিবসেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস।
আগামীকাল রবিবার, অযোধ্যায় এই তিন সংগঠনেরই রয়েছে কর্মসূচি। আর সে বিষয়কে কেন্দ্র করেই অযোধ্যায় কড়া সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এদিকে, শনিবারই অযোধ্যায় দুদিনের সফরে এসেছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। জানা গেছে, রাম মন্দিরের দাবিতে অযোধ্যায় ও রাজ্যের সব বিধানসভা এলাকায় প্রার্থনার আয়োজন করবে শিবসেনা। ইতিমধ্যেই, শনিবার সকালে অযোধ্যায় হাজির প্রায় ২৫ হাজার শিবসেনা সমর্থক।
অন্যদিকে, একইদিনে অযোধ্যায় বিক্ষোভ সমাবেশ করবে আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। অযোধ্যা পুলিশের অনুমান, রবিবার আরএসএস ও শিবসেনার অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশের এই শহরে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ অযোধ্যায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের জমায়েতে অশান্তির আশঙ্কায় সংখ্যালঘুরা
আগে থেকেই রামমন্দির বিষয়ে বিজেপির সঙ্গে শিবসেনার সম্পর্ক বেশ উত্তপ্ত। শুক্রবার শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘মাত্র ১৭ মিনিটে আমরা বারবি মসজিদ ভেঙে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছিলাম। অথচ এতবছরেও মন্দির নির্মাণের জন্য আইন পাশ করে নি বিজেপি’।
এর আগে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে বলেছিলেন, ‘অনেক হয়েছে। এবার প্রথমে মন্দির, তারপর সরকার’। এসব বিষয় বিবেচনা করে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে তির্যক মন্তব্য করে অযোধ্যায় রবিবার সেনা মোতায়নের দাবিতে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব।
আরও পড়ুন: মার্চে বন্ধ দেশের অর্ধেক এটিএম কি মোদীর নোটবন্দীর কুফল
উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তণ মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিজেপি সুপ্রিম কোর্ট কিংবা সংবিধানে বিশ্বাস করে না। ওরা যে কোনও কিছুই করতে পারে। অযোধ্যায় এখন যা পরিস্থিতি তাতে সেখানে সেনা ডাকা প্রয়োজন’।
২০১৯ এ লোকসভা ভোটের আগেই অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরিতে কেন্দ্রকে দ্রুত পদক্ষেপের জন্য চাপ দিতে শুরু করে দিল শিবসেনা, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও আরএসএস। শনিবারই ৫টি ট্রেন ভর্তি শিবসেনা ও গেরুয়া সমর্থকরা পৌঁছেছেন অযোধ্যায়৷ আরও কর্মী সমর্থক আসছেন।
আরও পড়ুন: “নীচু জাতের মোদীর হিন্দু ধর্ম নিয়ে বলার অধিকার নেই” বিতর্কে কংগ্রেস নেতা
ইতিমধ্যেই দুদিনের অযোধ্যা সফরে পৌঁছে গিয়েছেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। রবিবার শিবসেনার ‘মন্দির জনসভা’। শিবসেনার লাখখানেক সমর্থক থাকবে এই সভায়। সেটাই আবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ‘ধর্ম সভা’। সেখানে এই ধর্মীয় সংগঠনের প্রায় ১ লক্ষ কর্মী-সমর্থক জড়ো হবেন। আরএসএস-এর ১ লক্ষ সমর্থকও র্যালিতে থাকবেন বলে জানা গেছে। সঙ্গে মন্দিরের দাবিতে বহু সাধু সন্ত।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, আরএসএস ও শিবসেনার হুঙ্কার, একদম এক। ‘পহেলে মন্দির, ফির সরকার।’ ঘটনাপ্রবাহে স্পষ্ট, লোকসভার আগে হিন্দুত্ব ইস্যুতে এককাট্টা গেরুয়া দলগুলি। ভোটের ইস্যু একটাই, রাম মন্দির।
আরও পড়ুন: গরু তুমি কার ? বিজেপির ‘গোমাতা’য় হাত কংগ্রেসের
ফৈজাবাদ জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ জমি সংলগ্ন বিতর্কিত এলাকায়। স্থানীয় পুলিশ,বিএসএফ, সিআরপিএফ,আরএএফ নিয়ে প্রায় ৪০০০ নিরাপত্তা কর্মী দিয়ে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা অযোধ্যা। গেরুয়া বাহিনীর এই সব তাণ্ডব দেখে, অযোধ্যা ছেড়েছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। গোটা রাজ্যজুড়ে রবিবারের শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ধর্মসভা নিয়ে সতর্কবার্তা জারি হয়েছে।