কৃষ্ণা দাস, শিলিগুড়িঃ বৃহস্পতিবার রাতে অসমের পাঁচ বাঙালির নৃশংস খুনের পেছনে উলফা জঙ্গিবাহীনির হাত নয়, এটা বিজেপি’র সম্প্রতিকালের এনআরসির নামে ৪০ লক্ষ নাগরিককে নাগরিকত্বহীন করার ফলো আপ ঘটনা, বলে তিব্র ভাষায় অভিযোগ তুললেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব। আর এই গনহত্যার প্রতিবাদে গোটা রাজ্যের পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও এক ধিক্কার মিছিল করলো তৃণমূল কংগ্রেস। অসম হত্যা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে ধিক্কার ও প্রতীকী অবস্থান বিক্ষোভ করলো জেলা বামফ্রন্ট।
আরও পড়ুন: ৩০০ বছরের ডাকাতে কালির হাড় হিম করা কাহিনি
অসমের ব্রক্ষপুত্র নদীর তীরে পাঁচজন বাঙালীকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় উত্তরকন্যা-তে বসেই এই ঘটনাকে ভয়ঙ্কর ঘটনা বলে টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি দলকে নির্দেশ দেন এই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্যব্যাপি প্রতিবাদ মিছিল করার। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সকাল থেকেই কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় প্রতিবাদ মিছিল করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
কলকাতায় মিছিলের নেতৃত্ব দেন অভিষেক মুখোপাধ্যায়। শিলিগুড়ির বাঘাযতীন পার্ক থেকে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব সহ জেলা তৃণমূলের নেতা কর্মীরা। সেই মিছিলের পরই পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব অভিযোগ করেন, অসমে যেভাবে বাঙালি খেদাও পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে মোদী সরকারের নেতৃত্বে অসমের বিজেপি সরকার, আর যেভাবে নৃশংসভাবে বেশ কয়েকজন বাঙালিকে খুন করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এদিনের মিছিল।
এদিকে অসমের এই ঘটনার পেছনে উলফা জঙ্গির হাত রয়েছে বলে যে অনুমান করা হয়েছে, তা নস্যাৎ করে রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রীর বক্তব্য, ‘উলফা না কে জড়িত তা এখান থেকে বলব না। তবে বৃহস্পতিবার রাতে যে পাঁচজন বাঙালিকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তার পাশাপাশি কিছুদিন আগে ৪০ লক্ষ নাগরিককে অসমে নাগরিকত্বহীন করা হয়েছে, এদিনের ঘটনা তার ফলো আপ অ্যাকশান কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে’।
আরও পড়ুন: অসমে বাঙালি হত্যা, কলকাতায় মিছিল তৃণমূল-সিপিএমের
অন্যদিকে, কেন্দ্র সরকার ও অন্যদিকে রাজ্য সরকার, উভয় সরকারের জনবিরোধী নীতি ও করের বোঝায় সাধারন মানুষের জীবনযাবন বর্তমানে ওষ্ঠাগত। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার শিলিগুড়িতে ধিক্কার ও প্রতীকী অবস্থান বিক্ষোভ করে জেলা বামফ্রন্ট। সেই সঙ্গে, অসমের পাঁচ বাঙালির নৃশংস খুনের প্রতিবাদ জানান হয় বিজেপির বিরুদ্ধে।
এদিন দার্জিলিং জেলার বাম আহ্বায়ক জীবেশ সরকার কেন্দ্র সরকারের সমালোচনা করে বলেন, পেট্রোপন্যের দাম ওঠানামা করে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম বাড়া কমার ওপর। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় যেখানে আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম কমছে তখন এই দেশে পেট্রোল ডিজেল, কেরোসিন ও রান্নার গ্যাস সহ পেট্রোপন্যের দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এসব কিছুর ভুক্তভোগী হতে হচ্ছে সাধারন মানুষকে। অন্যদিকে, রাজ্যে বিদ্যুতের মুল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদেও সরব হন তিনি।
আরও পড়ুন: অসমে উগ্রপন্থী সংগঠনের গণহত্যা
পাশাপাশি, অসমে জঙ্গি হানায় পাঁচজন বাঙালির মৃত্যুর জন্য তিনি বিজেপি সরকারকে দায়ী করে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, একদিকে মুল্যবৃদ্ধি ও অন্যদিকে মানুষ খুন করার রাজনীতি, এটা বিজেপি ও আরএসএস এর ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রমুলক ভুমিকা। এদিন বামেদের এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জীবেশ সরকার, শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা মেয়র অশোক ভট্টাচার্য সহ জেলার নেতা কর্মীরা। কলকাতার পাশাপাশি বাঙালি হত্যার প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গেও এক ইস্যুতে প্রতিবাদ তৃণমূল ও সিপিএমের।