গণ ইস্তফা। আর তার জেরেই রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতাল ডাক্তারশুন্য। কোথায় ডাক্তার; শনিবার থেকে খোঁজা শুরু করতে হবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরকে। শয়ে শয়ে ডাক্তার পদত্যাগ করছেন; রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলো থেকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর উদ্ধত মন্তব্যের জেরেই; ডাক্তারদের এই গণ ইস্তফা বলে মনে করছে চিকিৎসক মহল।
যত সময় যাচ্ছে; তত বাড়ছে ডাক্তারদের ইস্তফার সংখ্যা। এখন পর্যন্ত কোন হাসপাতালে কতজন ডাক্তার ইস্তফা দিলেন? সংখ্যাটা রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে যে যথেষ্ট অস্বস্তিকর; সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইস্তাফা দিলেন এসএসকেএম হাসপাতালে ২০০ জন; এনআরএস হাসপাতালে ১০৭ জন; আরজিকর হাসপাতালে ১০৮ জন; উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১৯ জন; ন্যাশান্যাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩৫ জন; মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৫০ জন; মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ৩৬ জন; বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২৪ জন; কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২৮ জন, এখনও পর্যন্ত তাদের ইস্তফাপত্র রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এছাড়াও রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতাল থেকে; একের পর ডাক্তারের পদত্যাগপত্র পৌঁছে যাচ্ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় যা অবস্থা; শনিবার থেকেই বাংলার সব সরকারি হাসপাতালে তালা ঝুলবে; বলেই মনে করা হচ্ছে।
মমতার বিরোধিতা করেই, এইভাবে গণ ইস্তফা দিতে শুরু করলেন; বাংলার সব মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডাক্তাররা। গতকালই এনআরএস হাসপাতালের প্রিন্সিপাল প্রফেসর শৈবাল মুখোপাধ্যায় ও সুপার ভাইস প্রিন্সিপাল প্রফেসর সৌরভ চট্টোপাধ্যায়; নিজেদের ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের কাছে। শুক্রবার আরও ১০০ জনের বেশি ডাক্তার ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দিলেন; রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে।
শুক্রবারই জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে এবার চিকিৎসকদের গণ ইস্তফার ঘটনা শুরু হয়। নিরাপত্তার দাবিতে পদত্যাগ করেন; উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজের ১১ জন চিকিৎসক। তাঁদের অভিযোগ; কাজের পরিবেশ নেই হাসপাতালে। তাঁরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। মেডিসিন বিভাগের পর সার্জারি বিভাগের ডাক্তাররাও; গণ ইস্তফা দেন শনিবার।
সবমিলিয়ে রাজ্য জুড়ে ডাক্তারদের; ইস্তফা দেবার ধূম পরে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর হুঁশিয়ারি ও ডাক্তারদের প্রতি অসম্মানজনক মন্তব্যের পরিপেক্ষিতেই; এই সমস্ত ইস্তফা বলেই মনে করছে চিকিৎসক মহল।