সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ নিজেদের যাতায়াত এর সুবিধার জন্য নদী, গিরিখাদ, এমন কি সাগরের উপর দিয়েও সেতু নির্মাণ করেছে। আর সেই সব সেতুতে মানুষ রেখেছে উৎকর্ষতা আর সৃজনশীলতার ছোঁয়া। তার মধ্যে কিছু ব্রীজ এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যে আপনি অত্যন্ত সাহসী মানুষ না হলে তার উপর দিয়ে যেতে পারবেন না। আবার যারা এডভেঞ্চার প্রিয় বা বিপদের মুখোমুখি হবার সাহস রাখেন তাদের কাছে এই ব্রীজগুলো অনেক বেশি রোমাঞ্চকর।
তাহলে চলুন, জেনে নেওয়া যাক প্রকৃতির বুকে নির্মিত ৫টি ভয়ংকর ব্রীজ সম্পর্কে।
আরও পড়ুনঃ ফাঁসি হওয়া জঙ্গি পুত্রের ভারতের সেরা ডাক্তার হবার স্বপ্ন
Trift Suspension Bridge:-
সুইজারল্যান্ড এর গেডমেন (Gadmen) শহরের নিকট একটি পর্বতমালায় এই সেতুটি অবস্থিত, এটি পৃথিবীর অন্যতম বিপদজনক ও দীর্ঘতম পায়ে হাঁটা ঝুলন্ত সেতু। সেতুটি ৫৬০ ফুট লম্বা ও ৩৩০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। সুইজারল্যান্ডের মেজর এনার্জি কোম্পানি গুলো হিমবাহের উপর কাজ করছিল, সেখানে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ১৯০৪ সালে এটি নির্মাণ করেন। কিন্তু সেতুটি তেমন মজবুত হয়নি এবং সামান্য হওয়াতেই দোল খেতো। তাই পাঁচ বছর বাদে ব্রীজটির রি-কনস্ট্রাকশন হয়। যদিও তার পরেও হওয়াতে দোলা বন্ধ হয়ে যায়নি। যেটা এই সেটাকে আরো বিপদজনক করে তুলেছে।
আরও পড়ুনঃ মোদীর নয়া প্রকল্পে দিল্লি থেকে মুম্বাই সড়কপথে মাত্র ১২ ঘন্টায়
Glass Bridge:-
চিনের ঝিংঝিযংঝি (Zhangjajie) অঞ্চলের এই ব্রীজ পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু ও লম্বা কাঁচের ব্রীজ। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে এডভেঞ্চার প্রিয় মানুষদের জন্য চিন সরকার এটি উন্মুক্ত করে দেয়। প্রায় ১০০০ ফুট উপরে ১৪১০ ফুট লম্বা এই ব্রীজে তিন স্তর বিশিষ্ট কাঁচের ৯৯ টি প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্রীজ কতটা মজবুত তা দেখার জন্য হাতুড়ি পিটিয়ে এবং ব্রীজের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। এই ব্রীজের উপর থেকে কাঁচের মধ্যে দিয়ে নিচের গিরিখাদ পরিস্কার দেখা যায়, যা বহু মানুষের হাড়হিম করে দেয়। পর্যটকরা ভয়ে চিৎকার করে বসে, কেউ কেউ হামাগুড়ি দেয় বা শুয়ে পরে। আর যারা এডভেঞ্চার ভালোবাসে তাদের কাছে এটা অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
আরও পড়ুনঃ টিভি চ্যানেল দেখা নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছে কেবল অপারেটররা
Dragon Bridge:-
এই অপূর্ব সুন্দর ব্রীজটি ভিয়েতনাম এর দা-নাং(Da-Nang) শহরের হান(Han) নদীর উপরে অবস্থিত। এই ব্রীজের নাম ড্রাগন হবার পিছনের কারণ হলো এর উপরে একটি বিশাল ড্রাগন তৈরি করা হয়েছে।ব্রীজটি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালে, এটি শেষ হয় ২০১৩ সালে। এই ব্রীজটি লম্বায় প্রায় ২১৪৫ ফুট, চওড়াতে ১২৩ ফুট। ব্রীজটির বিশেষত্ব হলো আসল ড্রাগন এর মতোই এই ব্রীজের ড্রাগনের মুখ দিয়েও আগুন বের হয়। ভিয়েতনাম এর দেশি বিদেশি পর্যটকদের কাছে এটা অন্যতম আকর্ষণ।
আরও পড়ুনঃ মরে গিয়েও তৃণমূল বিজেপির হাত থেকে রেহাই পেলেন না বড়মা
Capilana Bridge:-
কানাডার অন্তর্গত ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ক্যাপিলানো নদীর উপরে তৈরি হয়েছে এই ‘ক্যাপিলানো সাসপেন্সসন ব্রীজ’ এটি সবুজ ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে ঝুলে আছে। ১৮৮৯ সালে জর্জ গ্র্যান্ডম্যাকে নামক এক ব্রিটিশ সিভিল ইঞ্জিনিয়ার নিজের জমি দেখভাল এর জন্য এই ব্রীজ নির্মাণ করেন। বর্তমানে এটি একটি ওয়ার্ল্ড ক্লাস ট্যুরিজম এ পরিণত হয়েছে। যেসব প্রকৃতি প্রেমী মানুষ, যারা প্রকৃতি কে একদম কাছ থেকে অনুভব করতে চান তারা এখানকার নৈঃশর্গ দেখে মুগ্ধ হন। ১৯৫৬ সালে পুনর্নির্মাণ করা এই ব্রীজটি লম্বায় ৪৬০ ফুট এবং নদীটির থেকে ২৩০ ফুট উঁচু। অফিসিয়াল রিপোর্ট অনুযায়ী বছরে আট লক্ষ মানুষ এখানে ঘুরতে আসে।
আরও পড়ুনঃ ভারতীয় ক্রিকেটারদের মাথায় ভারতীয় সেনার টুপি
Hussaini Hanging Bridge:-
হুসাইনি ব্রীজ পাকিস্তানে অবস্থিত। এটি একটি পরিত্যক্ত বহু পুরানো সেতু। কিন্তু আজও এই সেতুটি ব্যবহার করেন ওখানকার স্হানীয় মানুষজন। ৬০০ ফুট লম্বা জলের উপর দিয়ে নির্মিত এই সেতুটি দুই পাশের গ্রামকে সংযুক্ত করেছে। ব্রীজটি তৈরি হয়েছে কাঠ, দড়ি এবং তার দিয়ে। কাঠ গুলো পাতা আছে অনেকটাই দূরে দূরে। তাই এই সেতুর উপর দিয়ে চলার সময় সামান্য মনঃসংযোগ হারালেই সোজা গিয়ে পড়তে হবে লেকের জলে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।