প্রথমে বাংলা, তারপর ইংরেজি আর শুক্রবার ইতিহাস। মাধ্যমিকে প্রশ্ন ফাঁসের হ্যাটট্রিক বাংলায়। লজ্জার অন্ধকারে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর শিক্ষা দফতর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। শত নিরাপত্তা স্বত্ত্বেও আবার ফাঁস হয়ে গেল মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্র। এবার ইতিহাসের প্রশ্ন। পরপর তিনদিন। প্রশ্ন ফাঁসের হ্যাটট্রিক করে লজ্জার রেকর্ড গড়ল পশ্চিমবঙ্গ।
আরও পড়ুনঃ পাক জঙ্গিদের খুঁজে বের করে মারতে সেনাকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিল মোদী সরকার
শুক্রবার ছিল মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা। এর আগের দুই পরীক্ষা যথাক্রমে বাংলা এবং ইংরাজিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের মত ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ ইতিহাসের প্রশ্নও ফাঁস হয়ে গেল এদিন! পরীক্ষা শুরুর পর থেকেই জেলায় জেলায় মোবাইলে মোবাইলে ঘুরছে ইতিহাসের প্রশ্নপত্র। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর আশ্বাস সত্ত্বেও আটকান গেল না প্রশ্নপত্র ফাঁসের হ্যাটট্রিক।
আগের দুটি পরীক্ষার মতই এদিনও পরীক্ষা শুরু হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ফাঁস হওয়া আসল প্রশ্নপত্রের ছবি। অন্যান্য দিনের মত শুক্রবারও নিয়ম মেনে সময় মত শুরু হয়েছিল পরীক্ষা। আজ অর্থাৎ শুক্রবার ছিল মাধ্যমিকের ইতিহাস পরীক্ষা। সেই পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই ফাঁস হয়ে যায় ইতিহাস পরীক্ষার প্রশ্ন। পরীক্ষা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই হোয়াটস অ্যাপে ফাঁস হয়ে যায় মাধ্যমিক প্ৰশ্নপত্র।
আরও পড়ুনঃ পরীক্ষা শুরুর আগেই হোয়াটস অ্যাপে ফাঁস মাধ্যমিক প্ৰশ্নপত্র
ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদও। গতবছরও স্কুলের ভিতর থেকে এই প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে চূড়ান্ত হট্টগোল হয় রাজ্যজুড়ে৷ যা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু তা স্বত্ত্বেও পরীক্ষা শুরুর পর থেকেই বারবার প্রশ্ন ফাঁসের খবর প্রকাশ্যে আসছে৷ তাও আবার পরপর তিনদিন। যা নিয়ে রীতিমত নড়েচড়ে বসেছে কর্তৃপক্ষ৷
আরও পড়ুনঃ কাশ্মীরে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় শহিদদের মধ্যে বাংলার ২জন সেনা জওয়ান
এই সরকারের আমলে বহুবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হবার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু লাগাতার তিনদিন অর্থাৎ মাধ্যমিক স্ট্যান্ডার্ডের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের হ্যাটট্রিক পশ্চিমবঙ্গ কেন ভারতের ইতিহাসেই সম্ভবত আগে কোনদিন ঘটেনি। এর আগেও শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় এই একই ভাবে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল।
আর এভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের খবরে বেশ বিরক্ত রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছ থেকে আগের দুই দিনও পুরো বিষয়টি জেনেও ছিলেন তিনি। আরও কঠোর ব্যবস্থা নিতে তিনি বলেছিলেন। তাঁর পরেও আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।
আরও পড়ুনঃ দেশ জুড়ে বদলার দাবি, কাউকে ছাড়া হবে না জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
গতবছরের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে, এবার প্রথম থেকেই পরীক্ষা শুরুর আগে বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু তাতে যে সেরকম কাজ হয়নি, পরপর তিনদিনের ঘটনার পর তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কি কি ছিল সেই নিয়ম? মোবাইল একদম নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেন্টারে।
আরও পড়ুনঃ চিতা বাঘ মেরে চামড়া পাচারের সময় গ্রেফতার পুলিশ অফিসারের ছেলে
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় নিজেও ঘোষণা করেছিলেন যে, পরীক্ষার্থীদের কেউ মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারবে না। মোবাইল নিয়ে ধরা পড়লে আর পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। শিক্ষক, অশিক্ষক কর্মচারীদের জন্যে নিয়ম ছিল, মোবাইল সুইচ অফ করে প্রধান শিক্ষকের ঘরের আলমারিতে রাখতে হবে। যার চাবি থাকবে প্রধান শিক্ষকদের কাছে। এখন মোবাইল ব্যবহার করতে পারছেন শুধুমাত্র সেন্টার সেক্রেটারি, অফিস ইনচার্জ, ভেনু ইনচার্জ, ভেনু সুপারভাইজার, ভেনু অ্যাডিশনাল সুপারভাইজার।
কিন্তু এত কিছুর পরেও ঠেকানো যাচ্ছে না প্রশ্নপত্র ফাঁস। তবে গাফিলতি কার? তাহলে কি সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভূত! তবে সে যাই হোক, মাধ্যমিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের হ্যাটট্রিক করে গোটা দেশে লজ্জার মুখে আমাদের বাংলা। তবে কি এবার যুবরাজ সিং এর মত ছয় বলে ছটা ছক্কা হবে, অর্থাৎ পশ্নপত্র ফাঁসের ডাবল হ্যাটট্রিক। প্রশ্ন কিন্তু উঠছে।
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।