রাতারাতি লাইমলাইটে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। প্রশংসায় মুখর অধিকাংশ রাজ্যবাসি। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারের বিপুলভাবে জয়লাভের পর; বিরোধী পক্ষ নিয়ে সংশয় ছিল। বাংলার মহুয়া মৈত্রের উপস্থিতি সরকারের অস্বস্তি বাড়াতে পারে বলে; প্রথম ভাষণের পরেই মনে করছেন দিল্লির রাজনৈতিক মহল।
সাংসদ হিসাবে মহুয়া মৈত্র লোকসভার প্রথম ভাষণে দাবি করেন; ভারতে ফ্যাসিবাদের প্রতিটি চিহ্ন স্পষ্ট। মহুয়ার ভাষণে যথেষ্ট অপ্রস্তুতে পরেন; বিজেপি তথা মোদী সরকার। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে ভারতের সংবিধানের আদর্শের কথা; ও বিজেপি সরকারের তা অমান্য করার কথা। মোদী সরকারকে ফ্যাসিবাদের সরকার; বলে ইঙ্গিত দিয়ে বিতর্ক উসকে দেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ মুসলিম স্কুলে খাবার ঘর, বিতর্কের জেরে সার্কুলার প্রত্যাহার করে নিলেন মমতা
কৃষ্ণনগরের সাংসদের বক্তৃতা টুইটার সহ; গোটা সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোড়ন ফেলেছে ইতিমধ্যেই। ইহুদি গণহত্যার একটি পোস্টার দেখিয়ে তিনি বলেন; “আমাদের ঠিক করতে হবে; আমরা ইতিহাসের কোন অংশ হতে চাই। যে পক্ষ সংবিধানের সমর্থক নাকি; যে পক্ষ হয়েছে সংবিধানের শববাহক”।
মৌলানা আবুল কালাম আজাদকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন; “দেশের সংবিধান আক্রান্ত। মানুষের স্বাধীনতা আক্রান্ত”। দেশ যে ভাঙতে চলেছে; তার সাতটি প্রমাণের বিশদ ব্যাখ্যা দেন সাংসদ মহুয়া। বক্তৃতা শেষ করেন উর্দু কবি রাহাত ইন্দোরির একটি কবিতা দিয়ে। যার শেষ লাইন;‘কিসিকা বাপ কা হিন্দুস্তান থোড়ি হ্যায়’।
মহুয়া বলেন; “আপনারা বলতেই পারেন ‘আচ্ছে দিন’ এসে গিয়েছে; এবং ভারতীয় সাম্রাজ্যের সূর্য যাতে কখনও অস্ত না যায় সরকার সেটাই চাইছে। কিন্তু তাহলে আপনারা বিপদ সঙ্কেতটা ধরতে পারছেন না। যদি আপনি চোখ খোলেন; দেখবেন দেশের সর্বত্র প্রমাণ ছড়িয়ে রয়েছে; যা থেকে বোঝা যাচ্ছে দেশটা ভাগ হতে চলেছে”।
এনআরসি নিয়ে তিনি বলেন; যে দেশের নেতারা নিজেদের শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রমাণের জন্য সার্টিফিকেট দেখাতে পারেন না; সেই দেশে ৫০ বছর ধরে থাকা মানুষদের নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য হেনস্থা করা হচ্ছে গরিবদের।
দেশজুড়ে চলতে থাকা হিংসার কথাও তিনি বলেন। ঝাড়খণ্ডের গণপিটুনির প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। মহুয়া বলেন; “২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সময়কালে বেড়েছে হিংসাজনিত অপরাধ”। মহুয়া প্রথম ভাষণেই বুঝিয়ে দিয়েছেন; আগামী ৫ বছর তিনিও বিজেপি বিরোধী মুখ হিসাবে উঠে আসতে চলেছেন।