শতদ্রু কর, The News বাংলা, রাঁচি: ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন না করায় কার্যক্ষেত্র থেকে বহিষ্কার করা ও তার সঙ্গে খুনের হুমকি পেলেন এক শিক্ষিকা। অভিযোগ, তাঁর স্কুলেরই প্রিন্সিপাল সহ আরও কয়েকজন সহকর্মীর বিরুদ্ধে। জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে।
আরও পড়ুনঃ ধর্মান্তরকরণের উদ্দেশ্যে এসে আদিবাসীদের হাতে নিহত মার্কিন খ্রীষ্টান মিশনারী
নলিনী নায়েক নামে এক শিক্ষিকা ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে রাঁচীর কারমেল স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষিকা হিসেবে কাজে যোগদান করেন। খ্রীষ্টধর্মে ধর্মান্তরিত হবার শর্তে ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে ওই মিশনারী স্কুলের তরফে তাঁকে স্থায়ী পদে বহাল করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও ধর্মান্তরিত হবার শর্ত মানেন নি ওই শিক্ষিকা।
ঘটানাটি খারাপ দিকে মোড় নেয় গত ২৯শে সেপ্টেম্বর। অভিযোগ, শিক্ষিকাকে প্রিন্সিপাল সিস্টার ডেলিয়ার ঘরে ডেকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হতে থাকে এবং শিক্ষিকাকে জোরপূর্বক চার্চের কাজকর্ম করানো হয়। এরপর, ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহন না করায় তাঁকে চাকরি থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: অনুপ্রবেশকারীদের সরকারী সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে বাংলায় এনআরসি-র দাবি
শুধু তাই নয়, ধর্মান্তরিত হতে অস্বীকার করার কারণে খুনের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার ডেলিয়া সহ সিস্টার রেনিশা, সিস্টার টেরেসিতা মারি, সিস্টার মারি টেরেসা নামে আরও তিন সহকর্মীর বিরুদ্ধে। লিখিত অভিযোগ করেছেন নলিনী নায়েক নামে ওই শিক্ষিকা।
আরও পড়ুন: “নীচু জাতের মোদীর হিন্দু ধর্ম নিয়ে বলার অধিকার নেই” বিতর্কে কংগ্রেস নেতা
এরপর ১লা অক্টোবর তাঁকে লিখিত চিঠি দিয়ে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরেই, মানসিক ভাবে আক্রান্ত ওই শিক্ষিকা আদালতের দারস্থ হন। শিক্ষিকার বক্তব্যের ভিত্তিতে গত ২৬ শে নভেম্বর সোমবার বিচারবিভাগীয় মেজিস্ট্রেট কশিকা প্রসাদের এজলাসে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তাঁর অভিযোগ শোনেন বিচারবিভাগীয় মেজিস্ট্রেট।
শুনানির পর মেজিস্ট্রেট রাঁচির নামকম থানার অধীনে, জোরপূর্বক ধর্মান্তরকরণের অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টির পূর্ণ তদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআর-এর নির্দেশ দেন৷ ২৭শে নভেম্বর মঙ্গলবার রাঁচী আদালতেও একই অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং ওই তিন শিক্ষাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মায়ের পর এবার মোদীর বাবাকে নিশানা করে কুমন্তব্য কংগ্রেসের
ঘটনার পূর্নাঙ্গ তদন্ত করে রাঁচি আদালতে একটি রিপোর্ট দেবে রাঁচি পুলিশ। রাঁচীর কারমেল স্কুল কর্তৃপক্ষ এই নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয় নি। অভিযুক্ত স্কুলের প্রিন্সিপাল সিস্টার ডেলিয়া, সিস্টার রেনিশা, সিস্টার টেরেসিতা মারি, সিস্টার মারি টেরেসাও এই নিয়ে কথা বলতে চান নি।
তবে এই ঘটনায় তোলপাড় হয়েছে গোটা রাজ্য। কিছুদিন আগেই আন্দামানে সেন্টিনালিজদের ধর্মান্তরিত করার চেষ্টায় প্রাণ হারিয়েছেন এক মার্কিন। তারপর এই ঘটনা বেশ কিছু অপ্রিয় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।