বিরোধীদের দাবি, ভিভিপ্যাট বা VVPAT কাউন্টিংয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি করুক নির্বাচন কমিশন। এবিষয়ে ফারুক আবদুল্লা, চন্দ্রবাবু নাইডুরা দাবি জানিয়েছিলেন ভারতের নির্বাচন কমিশনে। আবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে তৃণমূলের তরফে একই দাবি জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সিরা। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সে দাবি মানতে চলেছে কমিশন। অন্তত বিষয়টি নিয়ে গুরুত্বের সঙ্গে ভাবনা চিন্তা চলছে বলে জানা গেছে। সূত্র জানাচ্ছে, কমিশনের তরফে বিষয়টি পাঠানো হয়েছে রিভিউ কমিটির কাছে। কমিটির রিপোর্ট এলে এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে ভরা তৃণমূলের তারকা তালিকা নির্বাচন কমিশনে
ব্রিগেডের ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার মঞ্চে কথাটা তুলেছিলেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা। প্রশ্নটা ছিল মূলত ইভিএম নিয়ে। অভিযোগ ছিল EVM কারচুপির। বিষয়টি নিয়ে কমিশনের সঙ্গে কথা বলার জন্য একটি কমিটি তৈরি করে বিরোধীরা। সেই কমিটি দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনে বেশ কিছু দাবি জানায়। পরে ধর্মতলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেভ ইন্ডিয়ার ধরনা মঞ্চে চন্দ্রবাবু নাইডু বলেন, “আমরা অন্তত ৫০ শতাংশ VVPAT গননার দাবি জানাচ্ছি। কমিশনে গিয়েও আমরা সেই দাবি পেশ করেছি”।
আরও পড়ুনঃ ভোটের গানে বিপাকে বাবুল, কমিশনের হাতে টুইট অস্ত্র
এদিকে EVM কারচুপি অসম্ভব, কথাটা বহুবার বলেছে দেশের নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, এবারের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে নতুন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের সর্বত্র পৌঁছে গেছে M3 জেনারেশনের ইভিএম মেশিন। হয়ে গেছে ফার্স্ট লেভেল চেকিং। সঙ্গে থাকছে VVPAT। যার মাধ্যমে ভোট দেবার পর সঠিক প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেন কিনা তা জানতে পারবেন ভোটাররা। বিষয়টি নিয়ে এ রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর EVM নিয়ে রাজনৈতিক দল এবং মানুষের আস্থা অর্জন করতে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বারাণসী থেকে লড়বেন মোদী, গান্ধীনগরে আডবানির পরিবর্তে অমিত শাহ
গত অগাস্টে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বদল বৈঠকে তৃণমূল, আপ, কংগ্রেস সহ বেশকিছু রাজনৈতিক দল EVM নিয়ে প্রশ্ন তোলে। দাবি জানায়, EVM নয়, ব্যালট পেপারে হোক আগামী লোকসভা ভোট। দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যখন EVM নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে, তখন নির্বাচন কমিশন চালায় তার পক্ষে প্রচার। এর জন্য বেছে নেওয়া হয় ভোট পাঠশালা। পাঠশালার প্রচার সংক্রান্ত সহায়িকাতে রীতিমতো ছাপার অক্ষরে দাবি করা হয়েছে, EVM কারচুপি অসম্ভব।
আরও পড়ুনঃ বিজেপির প্রার্থী তালিকা প্রকাশ, বাংলায় বিজেপি প্রার্থীদের নাম
মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর সূত্রে খবর, M3 EVM এর মস্তিষ্ক এবং কর্মসূচি একবার মাত্র ব্যবহারোপযোগী চিপ দিয়ে তৈরি, এটি পাঠোদ্ধার বা পরিবর্তন করা যায় না। অন্য কোনও ব্যবস্থার সঙ্গে বা ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত করা যায় না। তার মানে সংযোগ পদ্ধতি কিংবা বেতার পদ্ধতি কোন কিছুর মাধ্যমে এর উপর কারসাজি চলবে না।
সূত্র জানাচ্ছে এটি ১০০ শতাংশ নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে বিভিন্ন IIT সংস্থার বিশিষ্ট অধ্যাপকদের নিয়ে তৈরি কমিটি, এর সফটওয়্যার নকশার মূল্যায়ন করেছেন। বছরের পর বছর ধরে ৫টি পৃথক হাইকোর্টে EVM এর বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। হাইকোর্টগুলির প্রত্যেকটিই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, EVM বিশ্বাসযোগ্য, নির্ভরযোগ্য এবং এখানে কোনও কারচুপি সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ বাংলায় নির্বাচন কমিশনের কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপির
আগের M2 মেশিনের সঙ্গে M3 মিশনের পার্থক্য আছে বেশ কিছু। কমিশন সূত্রে খবর, এতে সেল্ফ ডায়াগনস্টিক ক্ষমতা, টেম্পার ডিটেকশ, অথেন্টিকেশন ফেসিলিটির মত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। যেগুলি আগের মেশিনে ছিল না। এছাড়াও আরো বেশ কিছু বিষয়ে উন্নতি ঘটানো হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ বাবুলকে হারাতে ১ কোটি টাকার কাজের টোপ, বিতর্কিত ঘোষণা মেয়রের
কমিশনের ঘোষনা ছিল, প্রতি বিধানসভা পিছু একটি করে VVPAT স্লিপ গননা করা হবে। এতে স্বচ্ছতা থাকবে। পাশাপাশি ভোট গননার সময়ও বাঁচবে। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, গণনা হোক অন্তত ৫০ শতাংশ VVPAT। বিরোধীদের দাবি গুরুত্বের সঙ্গেই ভাবছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। সূত্রের খবর, ৫০ শতাংশ VVPAT গননার দাবি সময় কারণেই মানা সম্ভব নয় কমিশনের পক্ষে। তবে বিধানসভা পিছু VVPAT গননার সংখ্যা বাড়ানো হতে পারে। এ বিষয়ে কমিশনের তরফ এ ঘোষণা হতে পারে শীঘ্রই।
আরও পড়ুনঃ নির্বাচন কমিশনের নতুন অ্যাপ সি ভিজিল, জনতার অভিযোগে ১০০ মিনিটের মধ্যে ব্যবস্থা
আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে The News বাংলা পড়তে লাইক করুন আমাদের ফেসবুক পেজ।